চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে গেছে ৪০০ পোশাক কারখানা, করোনাকালেই ৩০টি

সহজ ব্যবসা চান পোশাকখাতের মালিকরা

চট্টগ্রামে ৪০০টিসহ সারা দেশে সাড়ে ২৭০০ পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে পোশাকশিল্পকে এগিয়ে নিতে ‘ইজি অব ডুয়িং বিজনেস’ চান পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। ব্যবসাকে আরও সহজ করতে একগুচ্ছ প্রস্তাবনাও তুলে ধরেছেন তারা।

বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও প্রথম সহসভাপতি ছৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে ৬৭৯টি পোশাক কারখানা মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ৪০০টি। আমদানি-রপ্তানি কাজে নিয়োজিত আছে ১৯০টি। করোনা পরিস্থিতিতে গত মার্চ থেকে আগস্টের মধ্যে ঢাকায় ২৮১টি ও চট্টগ্রামে ৩০টি পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।

বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ৪ হাজার ৭০০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২ হাজার ৭৩৪টি বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি ১ হাজার ৯৬৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১ হাজার ৬০০টি আমদানি-রপ্তানি কাজে নিয়োজিত আছে।

তিনি বলেন, কাস্টম বন্ড কার্যক্রম সহজীকরণ ও চট্টগ্রামস্থ পােশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের বার্ষিক অডিট , কারখানা স্থানান্তর সম্প্রসারণ, এইচ এস কোর্ড সংযােজন, মালিকানা পরিবর্তন সহজ করতে হবে।

বিশেষত পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালে নির্মাণকাজ দ্রুত সমাপ্ত করা এবং বে-টার্মিনালে প্রাথমিক পর্যায়ে ইয়ার্ড নির্মাণ পূর্বক কন্টেইনার হ্যান্ডলিংসহ ডেলিভারি কার্যক্রম স্থানান্তর করা প্রয়ােজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে এলসিএল পণ্য সংরক্ষণের জন্য ৯টি শেড রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এলসিএলবাহী পণ্য চালানের কন্টেইনারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ওই শেডগুলোতে পণ্য সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আনস্টাফিং কার্যক্রমে বিলম্ব হয়ে যথাসময়ে ডেলিভারি নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। সবমিলিয়ে এলসিএল পণ্যের জট সৃষ্টি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দ্রুত এলসিএল পণ্য সংরক্ষণের জন্য শেড বৃদ্ধি করে ২-৩ দিনের মধ্যে আনস্টাফিং করে ডেলিভারি দেওয়া জরুরি বলে জানান পোশাকখাত সংশ্লিষ্টরা।

বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর ও আনোয়ারা ইকোনমিক জোনে পোশাক শিল্পের কারখানা স্থাপনে স্বল্পমূল্যে ভূমি বরাদ্দ, সহজ ও স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ দেওয়া, চট্টগ্রামে কিছু ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় স্থাপন, চট্টগ্রামস্থ আমদানি রফতানি নিয়ন্ত্রকের দফতর, বস্ত্র অধিদফতর, ইপিবি, বিনিয়োগ বোর্ড, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিকে সমস্যা সমাধানে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতায়ন, শাহ আমানত বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক কানেকটিভিটি বৃদ্ধি করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।

তিনি জানান, এক দশক আগেও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে চট্টগ্রামের ৪৯ শতাংশ অংশগ্রহণ থাকলেও গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটসহ অবকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে সেটা ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে।

বিজিএমইএ নেতা এমএ সালাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রণোদনা দেওয়ায় আমরা করোনাকালে শ্রমিকদের বেতন দিতে পেরেছি। ভিয়েতনাম ও ভারতের চেয়ে আমাদের সরকার পোশাকশিল্প নিয়ে অনেক দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে।

এসএম আবু তৈয়ব বলেন, আমরা দুর্নীতি করতে চাই না। দুর্নীতির শিকারও হতে চাই না। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে অটোমেশন চাই।

বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে নতুন কারখানা স্থাপনসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নতুন বিনিয়োগে সহজ ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানে ব্যাংক গুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে স্থাপনসহ ঋণ প্রদান ও বিনিয়োগ ইত্যাদির বিষয়ে চট্টগ্রামে ব্যাংকের কার্যালয়গুলোকে ক্ষমতায়ন করা প্রয়োজন মর্মে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!