চট্টগ্রামে ফের হাজার শনাক্তের দিনে ১৭ জনের মৃত্যু করোনায়

চট্টগ্রামে অষ্টমবারের মতো করোনা শনাক্ত হলো হাজারের ওপর। এর মধ্যে চলতি আগস্ট মাসেই চারবার! বাকি চারবার গত জুলাই মাসে। এদিন নতুনভাবে শনাক্ত হলেন ১ হাজার ১১৪ জন। এর মধ্যে নগরে ৭১২ এবং উপজেলা পর্যায়ে ৪০২ জন। তবে এসব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা। পর পর দুদিন করোনায় মৃত্যু দশের ঘরের আশে-পাশে থাকলেও এদিন সেটি ছাড়িয়ে গেল বিশের ঘরের দিকে। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা। যাদের মধ্যে ৯ জনই উপজেলার, ৮ জন নগরের।

এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত বেড়ে ৮৮ হাজার ৬৬০ জন। এর মধ্যে নগরে ৬৫ হাজার ৮১২ জন এবং উপজেলা পর্যায়ে ২২ হাজার ৮৪৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩৬ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে নগরের ৬০৮ এবং উপজেলার বাসিন্দা ৪২৮ জন।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম জেলার করোনা সম্পর্কিত এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের এগারো ল্যাব এবং কক্সবাজারে ৩ হাজার ৭৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। উক্ত পরীক্ষায় চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১১১৪ জনের।

ল্যাবভিত্তিক ফলাফলে জানা যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে (বিআইটিআইডি) ৪৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২১৯ জনকে করোনার জীবাণুবাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৫৯ জন নগরের এবং ১৬০ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে (বিআইটিআইডি) ৭৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ২৮০ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ আসে। তাদের মধ্যে ২১৮ জন নগরের বাসিন্দা এবং ৬২ জন বিভিন্ন উপজেলার। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৫৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরের ১০৬ জন ও উপজেলার ৪২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়। এছাড়া, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরের ১ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়। অন্যদিকে, এদিন চট্টগ্রামের বিভিন্ন ল্যাবে ৭৩৯ জনের এন্টিজেন টেস্ট করানো হয়। এর মধ্যে ১৯৫ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৯৭ জন নগরের এবং ৯৮ জন চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার।

এদিকে, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে নগরীর ৮ জন ও উপজেলার ২ জন।

এছাড়া, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে উপজেলার ২২ জনের নমুনায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

নগরীর বেসরকারি ল্যাবগুলোর মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ১৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ৫০ জনকে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে ৪৭ জন নগরের এবং ৩৪ জন উপজেলার বাসিন্দা। শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ২৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬৭ জনের দেহে করোনার বিষ পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে ৬৩ জনই নগরের, বাকি ৪ জন উপজেলার। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ২৮ জনের ও উপজেলার ১ জনের শরীরে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ৬১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নগরের ৩২ জন ও উপজেলার ২ জনকে করোনার জীবাণুবাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ১১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯ জনের দেহে করোনার বিষ পাওয়া গেছে। যাদের ৫৩ জন নগরের, বাকি ৬ জন উপজেলার।

সিভিল সার্জন আরও জানান উপজেলা পর্যায়ে শনাক্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগীর খোঁজ মিলে হাটহাজারীতে। সেখানে করোনা শনাক্ত হয় ৮৯ জন। এছাড়া, রাউজান ৫৩ জন, ফটিকছড়িতে ৪১ জন, আনোয়ারায় ৩৮ জন, বাঁশখালীতে ৩৩ জন, লোহাগাড়ায় ২৬ জন, চন্দনাইশে ২৪ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ২২ জন, সীতাকুণ্ডে ১৯ জন, বোয়ালখালীতে ১৮ জন, সন্দ্বীপে ১৫ জন, সাতকানিয়ায় ১১ জন, মিরসরাইয়ে ১০ জন এবং পটিয়ায় ৩ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!