চট্টগ্রামে প্রিপেইড মিটারে বিনামূল্যের ব্যাটারি লাগানোর বাণিজ্যে ২০ কোটি টাকার ধান্ধা

চীনা কোম্পানির স্বেচ্ছাচারে ১০ বছরের ওয়ারেন্টি ৩ বছরেই শেষ

বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটারের নষ্ট ব্যাটারি নতুন করে লাগাতে একটাকার খরচও নেই। গ্রাহক পিডিবির কাছ থেকে এই ব্যাটারি পাবেন বিনামূল্যেই। এমনকি ব্যাটারি লাগাতেও কোনো টেকনিশিয়ান নিতে পারবেন না এক টাকাও। অথচ বাস্তবে চট্টগ্রামে পিডিবির টেকনিশিয়ানদের কাছে এটাই এখন বড় বাণিজ্য। শুধু বিনামূল্যের এই ব্যাটারি লাগানোর বাণিজ্যেই গত ৪ বছরে চট্টগ্রাম নগরীর প্রিপেইড গ্রাহকদের কাছ থেকে অন্তত ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর এই বাণিজ্যের মূল পুঁজি হচ্ছে ঘরে হঠাৎ বিদ্যুৎ হারিয়ে বসা গ্রাহকের কিছু সময়ের অসহায়ত্ব।

দুবাইপ্রবাসী মনসুর রহমানের বাড়ি আছে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদের হাজিপাড়ায়। শুরু থেকেই তিনি বিদ্যুতের প্রিপ্রেইড মিটার ব্যবহার করে আসছেন। গত ডিসেম্বরে হঠাৎ রাতে তার বাড়ির মিটার বন্ধ হয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। পরে পিডিবির আগ্রাবাদ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের অভিযোগ সেন্টারে ফোন দিয়ে তার সমস্যাটি জানান। সেখান থেকে একজন টেকনিশিয়ান তার মোবাইল নম্বর চেয়ে নেন। মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ওই রাতেই তিন টেকনিশিয়ান তার বাসায় আসেন মিটার দেখতে। মিটার পরীক্ষা করে তারা জানান, ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যাটারি বদলাতে হবে। কিন্তু এখন ব্যাটারির মজুদ নেই। ঢাকায় চাহিদা দিতে হবে। আসতে ২ থেকে ৩ দিন লাগবে। তবে তাদের হাজারদুয়েক টাকা দিলে তারা চেষ্টা করে দেখতে পারেন। মনসুর রহমান ২ হাজার টাকা দিতে রাজি হলে সেই রাতেই তাকে মিটারের নতুন ব্যাটারি লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সচল হয় বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগও।

অথচ বিদ্যুতের মিটারের এই ব্যাটারি বিনামূল্যে ১০ বছর ওয়ারেন্টির মেয়াদে নতুন করে লাগিয়ে দেওয়ার কথা পিডিবির পক্ষ থেকে। সেখানে বিনামূল্যের সেই ব্যাটারি লাগানোর ফাঁদ পেতে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ‘বাণিজ্য’ চলছে গ্রাহকের অসহায়ত্বের সুযোগে। চট্টগ্রাম নগরীতে মনসুর রহমানের মত এরকম অসংখ্য গ্রাহককে টাকা গুণতে হচ্ছে। সেই টাকার পরিমাণ লোকভেদে এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্তও হয়। অনেকক্ষেত্রে আরও বেশি টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হয়।

আর এভাবে বিদ্যুতের প্রিপ্রেইড মিটারের ব্যাটারি বিড়ম্বনার সুযোগ নিয়ে গ্রাহকের পকেট কাটা ছাড়াও ডিজিটালাইজেশনের পথে কাঁটা বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে— হতাশার সুরে এমন কথা স্বীকার করেছেন পিডিবির কোনো কোনো কর্মকর্তাও।

৩ বছরে ৯৩ হাজার নষ্ট ব্যাটারি বদল

গত ডিসেম্বরে চট্টগ্রামে প্রি-পেইড মিটারিং প্রকল্পের সর্বশেষ বোর্ডসভায় উপস্থাপন করা তথ্যে দেখা গেছে, প্রথম পর্যায়ের তিন বছরে চট্টগ্রামে লাগানো ১ লাখ ৩৯ হাজার প্রি প্রেইড মিটারের মধ্যে ৯২ হাজার ৯৮৭ জন গ্রাহকের মিটারের নষ্ট ব্যাটারি বদল করে দিয়েছে হেক্সিং।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনের হিসাব অনুযায়ী, নষ্ট ব্যাটারি ঠিক করার বিনিময়ে গড়ে সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা করে ‘উৎকোচ’ হিসেবে ধরলেও প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত ৯৩ হাজার গ্রাহকের পকেট থেকে। হেক্সিং বিদায় নেওয়ার পর এখন নষ্ট ব্যাটারি বদলানোর ‘রাজ্যে’ চলছে পিডিবির টেকনিশিয়ানদের একচ্ছত্র আধিপত্য। হেক্সিং চলে যাওয়ার পর গত প্রায় দেড় বছরে নতুন করে প্রিপেইড মিটার যেমন গ্রাহকের ঘরে লেগেছে, তেমনি ফুলেফেঁপে উঠেছে নষ্ট ব্যাটারি লাগানোর বাণিজ্যও। এই সূত্রে গত প্রায় দেড় বছরে আরও অন্তত ১০ কোটি টাকা ঢুকেছে এসব টেকনিশিয়ান ও মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের পকেটে। অথচ নিয়ম অনুসারে ব্যাটারি লাগাতে একটাকার খরচও নেই। গ্রাহক পিডিবির কাছ থেকে এই ব্যাটারি পাবেন বিনামূল্যেই।

হেক্সিং কিংবা পিডিবির কোনো টেকনিশিয়ান বিনামূল্যের ব্যাটারি টাকার বিনিময়ে লাগিয়ে দিয়ে আসতে পারবে না— এমন কথা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন আগ্রাবাদ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন ইমাম। তিনি বলেন, ‘গ্রাহকরা সরাসরি এসে অভিযোগ করতে চান না। যার ফলে টেকনিশিয়ানরা সুযোগ পায়। আর কেউ টাকা চাইলে সেটি অভিযোগ আকারে আমাদের জানাতে পারে। আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

তবে পিডিবির এই নির্বাহী প্রকৌশলী এও বলেন, ‘প্রতিদিন আগ্রাবাদ ডিভিশনেই ৬০ থেকে ৭০টি অভিযোগ আসে ব্যাটারি নষ্ট হওয়ার। এরকম চলতে থাকলে প্রি-প্রেইড মিটারের সুফল ইন-ফিউচার ভেস্তে যাবে।’

ওয়ারেন্টি নিয়ে চীনা কোম্পানির স্বেচ্ছাচারিতা

পিডিবির চট্টগ্রাম জোন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রি-প্রেইড মিটারিং পাইলট প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম জোনে এখন পর্যন্ত বিদ্যুতের প্রিপ্রেইড মিটার লাগানো হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ২৮৫টি।

জানা গেছে, প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় ফেজ বা পর্যায়ে লাগানো প্রি প্রেইড মিটারগুলো চীনের হেক্সিং কোম্পানির তৈরি। পিডিবির সাথে চুক্তিনামায় এসব মিটারের ওয়ারেন্টির মেয়াদ ছিল ১০ বছর। কিন্তু তিন বছর পরই হেক্সিং কোম্পানি ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ করেছে।

এদিকে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের প্রথম ফেজে ২০১৬ সালে ১০ মার্চ চীনা কোম্পানি হেক্সিংয়ের সঙ্গে চুক্তি হয় চট্টগ্রাম পিডিবির। এর এক বছর পর ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর ১ লাখ ৩৯ হাজার প্রি প্রেইড মিটার লাগিয়ে পিডিবির সঙ্গে চুক্তি শেষ করে হেক্সিং। এরপর তিন বছর ওয়ারেন্টির মেয়াদ দেয় চীনা প্রতিষ্ঠানটি। এই তিন বছর ওয়ারেন্টির মধ্যে মিটারের কোনো ক্ষতি হলে তা হেক্সিং কোম্পানি নিজ দায়িত্বে ঠিক করে দেবে বলেও জানানো হয়। কিন্তু কোম্পানির চুক্তি নীতিমালায় ওয়ারেন্টির মেয়াদ রয়েছে ১০ বছর। কিন্তু সেই নীতিমালা না মেনে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর ওয়ারেন্টির মেয়াদ নামিয়ে আনে মাত্র তিন বছরে।

প্রকল্পের প্রথম ফেজে গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ৩৯ হাজার মিটারের নষ্ট ব্যাটারি বদল করে নতুন ব্যাটারি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৬ হাজার লাগানোর প্রক্রিয়ায় ছিল। এসব প্রি-প্রেইড মিটারের ব্যাটারি বিড়ম্বনার মধ্যে রয়েছে— মিটারের ব্যাটারির এলইডি ডিসপ্লে সাদা হয়ে যাওয়া, নষ্ট হয়ে যাওয়া, রিল নষ্ট, কী প্যাড নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

টাকা ছাড়লেই ব্যাটারি হাজির

জানা গেছে, এই ৩ বছর হেক্সিং থেকে ২ থেকে ৩ জন টেকনিশিয়ান পিডিবির ডিভিশনাল অফিসে অবস্থান করতে। গ্রাহকদের কাছ থেকে মিটারে কোনো সমস্যার অভিযোগ পেলে হেক্সিং কোম্পানির টেকনিশিয়ানরা গিয়ে ঠিক করে দিয়ে আসতেন। সাথে যেতেন পিডিবির টেকনিশিয়ানও।

কিন্তু এ ক্ষেত্রেও শুরু থেকেই মিটারে ব্যাটারি সংক্রান্ত কোনো সমস্যায় হেক্সিংয়ের টেকনিশিয়ানদের বিনামূল্যে ব্যাটারি মেরামত কিংবা নতুন ব্যাটারি লাগিয়ে দেওয়ার চুক্তি থাকলেও কখনোই তারা সেটা করেনি। ব্যাটারি বিড়ম্বনায় যখনই গ্রাহক পিডিবিতে অভিযোগ করেছেন, ব্যাটারি লাগাতে গিয়ে ওই টেকনিশিয়ানরা নিয়েছেন ১ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ। অনেক সময় সেই অংক ছাড়িয়ে গেছে তিন হাজারও।

চীনা কোম্পানি তাদের নিজেদের নির্ধারিত ‘ওয়ারেন্টি’র মেয়াদ শেষ করে নিজেরা দায়মুক্তি নিলেও পিডিবির নিজস্ব টেকনিশিয়ানরাও বিনামূল্যের ব্যাটারি লাগাতে গিয়ে অনুসরণ করে আসছেন চীনা টেকনিশিয়ানদের। গ্রাহকের অভিযোগের ২ থেকে ৩ ঘন্টার মধ্যে নতুন ব্যাটারি মিটারে লাগিয়ে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও পিডিবির টেকিনিশিয়ানরা উৎকোচের ‘ডিমান্ড’ বাড়াতে দেরি করার কৌশল নেন প্রতিটি অভিযোগের ক্ষেত্রেই। গ্রাহককে তারা শুরুতেই জানিয়ে দেন, ব্যাটারি মজুদ নেই। ব্যাটারি চাহিদা ঢাকায় দেওয়া আছে। সেখান থেকে আসলেই লাগিয়ে দেওয়া হবে। তবে তাদেরকে খুশি করলে তারা চেষ্টা করে দেখবে ব্যাটারি ম্যানেজ করা যায় কিনা। পুরো বাড়ি বিদ্যুৎহীন থাকায় প্রায় সব গ্রাহকই টেকনিশিয়ানদের এই টোপে পা দিয়ে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকাও দিতে রাজি হয়ে যান বাধ্য হয়ে। আর তখনই টেকনিশিয়ানরা এসে ব্যাটারি লাগিয়ে দিয়ে যান মিটারে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ লাইনও সচল হয়।

চীনা কোম্পানি ৫৮ হাজার ব্যাটারি পাঠাল জানুয়ারিতে

প্রিপেইড মিটারের ব্যাটারি মজুদ নেই, আনতে হবে ঢাকা থেকে— চট্টগ্রামে পিডিবির টেকনিশিয়ানদের মুখে এই অজুহাত লেগে থাকলেও ডিভিশনে পর্যাপ্ত ব্যাটারির মজুদ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পিডিবি চট্টগ্রাম জোনের তত্ত্বাবধায়ক চট্টমেট্রো (পশ্চিম) শহিদুল ইসলাম মৃধা। তিনি বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম জোনে প্রথম ফেজের গ্রাহকদের জন্য এই জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আরও ৫৮ হাজার ব্যাটারি পেয়েছি হেক্সিং থেকে। কিন্তু হেক্সিং চুক্তি শেষ হওয়ায় ব্যাটারি দিতে গড়িমসি করেছে। আমরা প্রতিটি বোর্ড মিটিংয়ে হেক্সিংকে রিমাইন্ডার দেই।’

২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এক বোর্ডসভার তথ্যে দেখা যায়, প্রকল্পের প্রথম ফেজে চীনা কোম্পানি হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে প্রি-প্রেইড মিটার লাগিয়েছে ৪১ হাজার ৮৫০টি। ওই এলাকায় হেক্সিং কোম্পানি গ্রাহকের নষ্ট ব্যাটারি ঠিক করে দিয়েছে ২১ হাজার ৭৫৪টি। ব্যাটারিসহ পুরো মিটারই পরিবর্তনযোগ্য— এমন সংখ্যা ২০ হাজার ৯৬টি।

চট্টগ্রামের খুলশী এলাকায় স্থাপিত ৩৩ হাজার ৬০০টি প্রি-প্রেইড মিটারের মধ্যে নষ্ট ব্যাটারি বদলানো হয়েছে ২১ হাজার ৩৮৫টি।

চট্টগ্রাম পিডিবির স্টেডিয়াম ডিভিশনে হেক্সিং কর্তৃক স্থাপিত প্রি প্রেইড মিটারের সংখ্যা ২০ হাজার ৯৫০টি। এর মধ্যে হেক্সিং কর্তৃক গ্রাহকের নষ্ট ব্যাটারি বদলানো হয়েছে ১৩ হাজার ৫১২টি।

চট্টগ্রামের খুলশী এলাকায় স্থাপিত ৩৩ হাজার ৬০০টি প্রি-প্রেইড মিটারের মধ্যে নষ্ট ব্যাটারি বদলানো হয়েছে ২১ হাজার ৩৮৫টি।

চট্টগ্রাম পিডিবির পাহাড়তলী ডিভিশনে প্রিপ্রেইড মিটারের মোট সংখ্যা ৪২ হাজার ৬০০টি। এর মধ্যে হেক্সিং কর্তৃক গ্রাহকের নষ্ট ব্যাটারি বদলানো হয়েছে ৩৬ হাজার ৩৩৬টি।

ওপরের হিসাবটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চট্টগ্রাম পিডিবির অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম মৃধা বলেন, ‘আমরা প্রকল্পের প্রথম ফেজে ১ লাখ ৩৯ হাজার প্রি প্রেইড মিটারের মধ্যে ৯২ হাজার ৯৮৭ জন গ্রাহকের নষ্ট মিটারের ব্যাটারি বদল করে দিয়েছে হেক্সিং। আর নতুন ব্যাটারি অবশিষ্ট ছিল ৪৬ হাজার। এটি দুই মাস আগের হিসাব হওয়ায় বর্তমানে এ সংখ্যাটা আরও কমবে।’

হেক্সিংয়ের দায়িত্বহীনতায় ব্যাটারি নিয়ে আশঙ্কা

তবে ভবিষ্যতে বিদ্যুতের মিটারের ব্যাটারি নিয়ে আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন শহিদুল ইসলাম মৃধা। তিনি বলেন, ‘প্রকল্প শেষ হওয়ার আগে পিএসি বা প্রি অ্যাকসেপটেন্স সার্টিফিকেট ও এফএসি বা ফাইনাল অ্যাকসেপটেন্স সার্টিফিকেট নিতে হয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থেকে। এর মধ্যে প্রি অ্যাকসেপটেন্স সার্টিফিকেটটা পেয়ে গেছে হেক্সিং। এরপর তারা প্রথম ফেজের মিটারের কোনো দায়দায়িত্ব নিতে আর রাজি নয়। তারপরও বোর্ড মিটিংয়ে বাকবিতণ্ডা করে নতুন ৫৮ হাজার ব্যাটারি পাওয়া গেছে হেক্সিংয়ের কাছ থেকে।

শহিদুল ইসলাম মৃধা আরও বলেন, ‘হেক্সিংয়ের নীতিমালাতে ১০ বছর ওয়ারেন্টি দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। অথচ তারা তিন বছর পরেই তারা তাদের ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ করে দিয়েছে। এখন পিডিবির নিজস্ব টেকনিশিয়ানদের দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। এতে গ্রাহকরা বাড়তি বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।’

‘চুক্তির সব কি আর পুরোপুরি মানা যায়?’

বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে চীনা কোম্পানি হেক্সিংয়ের বাংলাদেশ অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) বিশ্বজিৎ মন্ডলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘চুক্তিতে অনেক কিছুই লেখা থাকে। সেটা কি আর পুরোপুরি মানা যায়? আমরা আমাদের চুক্তি অনুযায়ী মিটার লাগিয়েছি। ওয়ারেন্টির মেয়াদ পার করেছি। ১০ বছর বললেই তো আর ১০ বছর মেয়াদ হতে পারে না। আমরা তিন বছরেই ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ করেছি।’

বিশ্বজিৎ মন্ডল বলেন, ‘হেক্সিংয়ের কোনো টেকনিশিয়ান বিনামূল্যের ব্যাটারি টাকার বিনিময়ে লাগিয়েছে— এরকম অভিযোগ আমরা পাইনি। জানতে পারলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!