চট্টগ্রামে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা-ভাংচুর, ৩ পুলিশ আহত, গুলিতে মাদক কারবারি নিহত

কালুরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ভাংচুর করে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নাজমা আক্তার (৩০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কালুরঘাট ফাঁড়ির পুলিশ ৫ হাজার ইয়াবাসহ হানিফ ও দেলোয়ার নামে দুই জনকে আটক করে। দুই মাদক কারবারিকে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় হানিফের ভাই হিজড়া ছদ্মবেশী ইয়াসিন আরাফাতসহ তার সহযোগীরা পুলিশের পথ আটকে দেয়। এসময় মাদক কারবারির সরদার হানিফকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায় তারা। পরে পরিস্থিতি সংঘর্ষে রুপ নেয়।

জিকু ও জনির নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জন হিজড়াসহ পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ সময় ইমরানের সহযোগী হিসেবে কালুরঘাট এলাকার মাদক কারবারিরা হামলায় অংশ নেয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে। পুলিশের গুলিতে হানিফের বোন নাজমা আক্তার গুলিবিদ্ধ হয়। নিহত নাজমাও মাদক কারবারি বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে পুলিশের কাছ থেকে হানিফ ও দেলোয়ারকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তারা পুলিশ ফাঁড়িতেও ভাংচুর করে।

এ ঘটনায় কালুরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির আইসি শরীফ রোকনুজ্জামান, কনস্টেবল আনিসুল ও রিয়াদুল আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন চান্দগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুর রহমান।

মনিবুর রহমান জানান, আহত পুলিশ সদস্যরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।

এদিকে গুলিবিদ্ধ নাজমা আক্তারকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাকে ২৪ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান।

হানিফের বাড়ি পটুয়াখালীর মীর্জাগঞ্জ হলেও তার নেতৃত্বে মোহরার রেললাইন কেন্দ্রিক মাদক, জুয়াসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরে চলছে। হানিফের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও পুলিশের একাধিক অভিযানে সে ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবরে মৌলভী বাজার ৯ নম্বর পোল এলাকায় র‍্যাবের অভিযানে মাদক কারবারির অভিযোগে হানিফ আটক হয়। খবর পেয়ে হিজড়ার একটি দল তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

জানা গেছে, হানিফের বাবা লোকমান, ভাই ইয়াছিন ও বোন নিহত নাজমা আক্তারও মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। এসব নিয়ন্ত্রণে ভাই ইয়াছিন আরাফাতকে হিজড়া সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

আরএস/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!