চট্টগ্রামে নারী কাউন্সিলরের অডিও ভাইরাল, রুমকী বলছেন ‘এলাকার মানুষের জন্য চেয়েছেন’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নারী কাউন্সিলর রুমকী সেন গুপ্তের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর সেটা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলেছে। তবে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন’ দাবি করে কাউন্সিলর রুমকী বলছেন, এলাকার মানুষের জন্য কিছু চাওয়া হলে সেটা কিভাবে চাঁদাবাজি হয়?

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত-৭ (ওয়ার্ড ১৬, ২০ ও ৩২) এর নারী কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত। তিনি নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত তপতী সেনগুপ্তর পুত্রবধূ।

জানা গেছে, কয়েকদিন আগে নগরীর চকবাজার এলাকার সাফ আমিন শপিং মলের ম্যানেজারকে ফোন করেন কাউন্সিলর রুমকী। পরে সেই কলরেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাফ আমিন শপিং মলের ম্যানেজার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাকে সরাসরি কাউন্সিলর ফোন করেছেন। কলেজের ছাত্র ও এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে বলছেন। সেটা আমি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানিয়েছি।’

কী আছে সেই অডিওতে?

রুমকী সেনগুপ্ত : দিদি তো আপনাদেরকে কোনদিন ফোনও দিই নাই। আপনারা আপনাদের মতো আছেন, মার্কেট করেছেন। এগুলো আমরা কোন কিছুর ইয়েও করি না। আপনাদের সেবা করতেও আমরা আছি।
ম্যানেজার: ঠিক আছে।
রুমকী সেনগুপ্ত : আপনি কোথায়, অফিসে আছেন?
ম্যানেজার: আমি অফিসে আছি। একটু ব্যস্ত আছি। বুঝতেছেন না মার্কেটে এখন।
রুমকী সেনগুপ্ত : এখন আমার ছোট ভাইদেরকে পাঠাচ্ছি। ওরা কলেজের। ওদেরকে কিছু একটা ব্যবস্থা করতে হবে। আর আমার এলাকার মানুষকেও কিছু ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
ম্যানেজার: এলাকার মানুষকে ব্যবস্থা করে দিতে হবে, ঠিক আছে। ওটা আমি ওদের (মার্কেট পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) সাথে কথা বলবো।
রুমকী সেনগুপ্ত : এলাকার মানুষকে তো সহযোগিতা করতে হবে ভাইয়া। বুঝেন তো।
ম্যানেজার: বুঝতেছি তো।
রুমকী সেনগুপ্ত : সামনে ঈদ। আমি তো শুরুতেই ফোন করি নাই। সামনে এলাকায় কাপড় দেওয়া। আপনাদের সামনে চট্টগ্রাম কলেজ, বুঝতে পারতেছেন না? কিছু সহযোগিতা তো করতে হবে ভাই।
ম্যানেজার: আচ্ছা ঠিক আছে। আমি ওনাদের সাথে কথা বলতেছি। তারপর দেখতেছি।
রুমকী সেনগুপ্ত : এখন তাহলে কি আমি ওকে পাঠাবো?
ম্যানেজার: এখন পাঠাইয়েন না। কথা বলা ছাড়া তো আমি কিছু করতে পারতেছি না। সভাপতি-সেক্রেটারি আছেন, ওনাদের সাথে কথা বললে ভালো হবে। নাম্বার দিবো?
রুমকী সেনগুপ্ত : না আমি বলবো না। আমার বলার কোন অবকাশ নাই। আপনাকে বললাম, আপনি বলে দিয়েন।
ম্যানেজার: আমি তো বলে দিবো। বাকিটা ওরা যেটা রেসপন্স করে, তা আপনাকে জানিয়ে দেবো।
রুমকী সেনগুপ্ত : আপনি কথা বলেন, কথা বলে আমাকে জানাবেন। আর এলাকার কিছু সহযোগিতা করতে… ঠিক আছে? আপনারা এতো বড় প্রতিষ্ঠান আছেন, আমরা তো আপনাদেরকে কখনও ফোনও করি না। ওনাদের সাথে কথা বলে আমাকে জানান, ঠিক আছে?
ম্যানেজার: আচ্ছা, ঠিক আছে তাহলে।

যা বললেন কাউন্সিলর রুমকী

যদিও কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত সেটিকে চাঁদাবাজি হিসেবে দেখছে না। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘আমি আমার জন্য তো কিছু চাইনি। এলাকার মানুষের জন্য চেয়েছি। সিটি কর্পোরেশন থেকেও এক টাকা বরাদ্দ পাই না। তিনটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে এলাকার মানুষের জন্য কোথা থেকে খরচ করবো?’

পুরো ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ হিসেবে উল্লেখ করে রুমকী বলেন, ‘এটা কিভাবে চাঁদাবাজি হয় বলেন? এসবের মাধ্যমে আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছি।’

আরএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!