চট্টগ্রামে জ্বর-সর্দির হানা ক্রমেই বাড়ছে, সতর্ক থাকতে বলছেন ডাক্তাররা

চট্টগ্রামে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে জ্বর ও সর্দির প্রকোপ। সাম্প্রতিক সময়ে করোনার সংক্রমণের হার কমলেও হঠাৎ করে ঘরে ঘরে জ্বর ও সর্দির প্রকোপ বাড়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে জনমনে।

তবে মৌসুম পরিবর্তনের ফলে এমনটা হচ্ছে জানিয়ে জ্বরে আক্রান্ত হলেই উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তারা এও বলছেন, যেহেতু বর্তমানে একই সাথে করোনা এবং ডেঙ্গুতে বিভিন্ন জায়গায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন, সেহেতু রোগীদের সতর্ক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ৩ দিনের মধ্যে জ্বর না সারলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে বলছেন তারা।

নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে নিজে জ্বরে ভুগলাম। এরপর একে একে দুই ছেলেসহ পরিবারের আরও ৩ জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। আত্মীয়স্বজনদের মধ্যেও প্রায় পরিবারেই কেউ না কেউ জ্বরে ভুগছে। একজন সুস্থ হলে পরিবারের আরেক সদস্য আক্রান্ত হচ্ছে।’

শুধু সাইফুল ইসলাম নন, এমন চিত্র এখন শহরের প্রায় প্রতিটি এলাকারই। নগরের বাইরের চিত্রও প্রায় এক।

মিরসরাই উপজেলার ব্যাংক কর্মকর্তা ইশতিয়াক মাহমুদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘জ্বর থেকে কখন সুস্থ হই নিজেই বুঝি না। কারণ কদিন বাদে বাদেই জ্বর হচ্ছে, আবার ভালও হয়ে যাচ্ছে।’

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. অলক নন্দী চটগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘জ্বরে আক্রান্ত অনেক রোগী পাওয়া যাচ্ছে যাদের আরটি-পিসিআর নেগেটিভ আসছে। সিটি স্ক্যান করেও লাংস ইনভলবমেন্ট পাচ্ছি না। এগুলো আসলে সিজনাল ফ্লু।’

জ্বরের এমন প্রকোপের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ জয় চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটার মূল কারণ মৌসুম পরিবর্তন। আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়ে প্রতি বছরই এমনটা হয়। সেভাবে মানুষ খেয়াল করে না। এবার যেহেতু একই সাথে করোনা ও ডেঙ্গুর ভয়ও আছে ফলে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেশি দেখা যাচ্ছে। কোভিড কিছুটা কমের দিকে এখন, ডেঙ্গুর ব্যাপারে একটু কেয়ারফুল হতে হবে। এক্ষেত্রে রোগীদের খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ দেখি না। তবে সতর্ক থাকতে হবে।’

এক্ষেত্রে রোগীদের করণীয় কী— এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, ‘সিজনাল ফ্লু দুই-তিনদিনের বেশি থাকে না। তাই জ্বর হওয়ার পর দুই-তিন দিন অপেক্ষা করা যেতে পারে। এর মধ্যে সেরে গেলে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু না সারলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শমত চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে দুটো টেস্টই করাতে হবে— কোভিড ও ডেঙ্গী।’

তবে অপেক্ষা করার এই দুই-তিন দিন সময়ে জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরিবারের অন্য সদস্যদের সংষ্পর্শে না আসার পরামর্শ দেন তিনি।

ডা. অলক নন্দী বলেন, ‘আমরা বেশিরভাগ রোগীকে দুটো টেস্টই করাচ্ছি। করোনা এমনিতেই কমের দিকে, ডেঙ্গুও এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। তবে দুই তিন দিনের মধ্যে জ্বর না সারলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং দুটো টেস্টই করানো উচিত।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!