চট্টগ্রামে চিকিৎসকদের একঘণ্টার কর্মবিরতিতে সাড়া নেই

ভুল চিকিৎসার দায়ে চিকিৎসক কারাগারে

আদালত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও এক ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করেছে চিকিৎসকরা। বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের ডাকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী তারা জরুরি সেবা, আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ ও প্রসুতি সেবা চালু রাখে।

চিকিৎসকদের একটা অংশ এ কর্মবিরতির বাহিরে থাকা এবং অপর একটা অংশ সাড়া না দেওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি ছাড়াই শেষ হলো এ কর্মসূচি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ সাহা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, অনেকটা নিরবেই এ কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। কেউ টেরই পায়নি যে চিকিৎসকরা কাজে বিরত। এছাড়া রোগীদের কেউ কোন অভিযোগও করেনি।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. নুরুল হক বলেন, যেহেতু বিএমএ ঘোষিত কর্মসূচি তাতে আমাদের অংশগ্রহণ ছিল। তবে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হয়নি। জরুরি বিভাগসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলো এ কর্মসূচির বাহিরে রাখা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসকদের দায়ী করে আদালতে মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় তিন চিকিৎসক উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। জামিন শেষে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তারা আদালতে আত্মসমর্পন করেন। আদালত শুনানির দিন ধার্য করেন ১ জানুয়ারি। ধার্য দিনে চিকিৎসকরা আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর প্রতিবাদে চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বিএমএ সারা দেশে এক ঘন্টার কর্মবিরতির ডাক দেয়।

বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, কেন্দ্রীয় বিএমএ ঘোষিত কর্মসূচি চট্টগ্রামেও পালিত হয়েছে। তবে রোগীদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখেই জরুরি বিভাগসহ গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো এ কর্মসূচির বাহিরের রাখা হয়েছিল।

চিকিৎসকদের কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত, আপনাদের কর্মসূচি আদালতের বিরুদ্ধে কিনা জানতে চাইলে ডা. মুজিবুল হক বলেন, আমাদের কর্মসূচি মূলত একটি বার্তা। আমরাও চাই কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। কিন্তু কারাগারে প্রেরণ করা চিকিৎসকরা দোষী সাব্যস্ত হননি। দোষ প্রমাণ হওয়ার আগে কেন চিকিৎসকরা কারাভোগ করবেন?

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সিনিয়র কনসালটেন্ট বলেন, সাংবাদিক কন্যা রাইফা খানের মৃত্যুর পর বিএমএ নেতৃবৃন্দের বাড়াবাড়িমূলক কর্মসূচিতে যে অচল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল তা থেকে তাদের সরে আসাটা ছিল অপমানজনক। হুট করে সব ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়ে খোদ চিকিৎসকদের রোষানলে পড়েছিলেন বিএমএ নেতৃবৃন্দ। তাই এবার অনেকটা ঢিলেঢালা কর্মসূচিতেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তবে চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোন তদন্তের প্যানেলে বিএমডিসির বিশেষজ্ঞ রাখার ব্যাপারে সকল চিকিৎসক একমত।

এফএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!