চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর পর মামলা দায়ের হতেই দেশ ছেড়ে পালালেন তার দেবর।
গত ৮ এপ্রিল বেলা তিনটার দিকে হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বংশাল গ্রামের শ্বশুরবাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের মেঝেতে পড়া থাকা অবস্থায় গৃহবধূ আয়েশার লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন নিহত গৃহবধূর স্বামী মাহফুজুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, গৃহবধূ আয়েশা আত্মহত্যা করেছেন।
তবে আয়েশার পরিবার দাবি করেছে, আয়েশা আত্মহত্যা করেননি। তার বড় ভাইয়ের দাবি, আয়েশাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করেছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
আয়েশা আকতার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের নুর আলী মিয়ার হাট এলাকার ডেকোরেশন ব্যবসায়ী মাহফুজুল আলমের স্ত্রী এবং উপজেলার গুমানমর্দন ইউনিয়নের আলিমুদ্দিন হাজির বাড়ির মৃত শাহ আলমের কন্যা। তার ১০ মাস বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
এ ঘটনায় গত ১১ এপ্রিল আবুল ফয়েজ বাদী হয়ে চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪ জনকে আসামি করে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা করেন আয়েশার বড় ভাই আবুল ফয়েজ।
এদিকে এই মামলা দায়েরের খবর পেয়েই দেশ ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যে পালিয়েছেন আয়েশার দেবর আসামি মামুনুল ইসলাম। তিনি মামলার দুই নম্বর আসামি।
মামুনুল ছাড়া মামলায় বাকি ৩ আসামি হলেন নিহত আয়েশার স্বামী মাহফুজুল ইসলাম (২৮), বড় বোন রুমা আক্তার (৩২) ও শাশুড়ি ছেনোয়ারা বেগম (৪৭)।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে নিহত গৃহবধূর পরিবার ও এলাকাবাসী এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে গৃহবধূ আয়েশার মা ফরিদা বেগম বলেন, দেড় বছর আগে সামাজিকভাবে আমার মেয়ে আয়েশার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবন শুরু করার সাথে সাথে অভিযুক্ত আসামিরা প্রতিনিয়ত আমার মেয়ে আয়শাকে যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল। এর মধ্যে গত ৮ এপ্রিল ইফতার সামগ্রী ও ঈদ উপলক্ষে পাঠানো উপহার সামগ্রী নিয়ে অভিযুক্তদের সাথে পছন্দ না হওয়ায় আয়শার ঝগড়া হয়।
নিহত গৃহবধূর পরিবার অভিযোগে জানায়, ঝগড়ার এক পর্যায়ে আয়শাকে আসামিরা তার কক্ষে নিয়ে গলা ও নাকে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তার গলায় হাতে চেপে ধরার দাগ রয়েছে। লাশ পড়েছিল কক্ষের মেঝেতে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
এদিকে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য হাটহাজারী মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।