চট্টগ্রামে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে গরিবের কষ্ট, থাকবে দুই দিন

ঘড়ির কাঁটা যেন উল্টোদিক ঘুরছে। সকাল গড়িয়ে দুপুর পেরিয়ে গেলেও বাইরের পরিবেশ দেখে বর্ষা ভেবে ভুল করতে পারে যে কেউ। মেঘাচ্ছন্ন আকাশে থেমে থেমে হচ্ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।

শীতের আকাশে বৃষ্টির ঘনঘটায় চালচুলোহীন অসহায় মানুষেরা পড়েছে বিপাকে। একে তো শীত তার উপর বৃষ্টির। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ছুটির দিনে শীত আর বৃষ্টির মিলনে কেউ কেউ লেপ মুড়ি দিয়ে আরাম করলেও ফুটপাতের এককোনায় গুটি-সুটি মেরে বেছে নিয়েছে ছিন্নমূল মানুষেরা মাথা গুজার ঠাঁই।

নগরীতে শীতের তীব্রতা গত কয়েকদিনের তুলনায় কিছুটা কমলেও কুয়াশার আড়ালে সূর্যকে ঢেকে বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত থেকেই শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। চট্টগ্রামের আকাশে মেঘের বসবাস আপাতত কয়েকদিন স্থায়ী হলেও বৃষ্টি থাকবে দুইদিন। আর তাতেই দুর্ভোগ পোহাতে হবে ফুটপাতে আশ্রয় নেয়া অসহায় মানুষদের।

চট্টগ্রামে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে গরিবের কষ্ট, থাকবে দুই দিন 1

আবহাওয়া অফিস বলছে, শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) আকাশে মেঘের ছড়াছড়ির সাথে হালকা থেকে মাঝারি আকারের বৃষ্টি ছিল। মেঘলা আকাশের সাথে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত থাকবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। তারপরদিন থেকে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থাকলেও বৃষ্টি সম্ভাবনা নেই। গত রাতে তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে দুপুরে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। বিকেলের দিকে তা কিছুটা কমে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এসে দাঁড়িয়েছে। দিনের তাপমাত্রায় খুব একটা প্রভাব না পড়লেও কমবে রাতের তাপমাত্রা।

আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গতরাত থেকে মোটামুটি ভালোই বৃষ্টি হচ্ছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি সকালে কম থাকলেও দুপুরে একটু বেড়েছে। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ সহ বৃষ্টি আগামীকাল পর্যন্ত থাকলে পরবর্তীতে কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তাপমাত্রা তেমন একটা কমেনি। এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতরাতে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও এখন ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বিকেলে কিছুটা কমে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার।

চট্টগ্রামে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে গরিবের কষ্ট, থাকবে দুই দিন 2

তিনি আরও বলেন, মেঘ আর কুয়াশার কারণে তাপমাত্রা কমেনি। তবে বাতাস কিছুটা থাকায় শীত আগের মতো অনুভূত হচ্ছে। মেঘ কেটে গেলে তাপমাত্রা আরও নেমে যাবে। তবে চট্টগ্রামের আবহাওয়া এখনও শৈত্যপ্রবাহের আওতায় আসেনি।

এদিকে, শীতের তীব্রতা কমতে না কমতেই ফুঁসে ওঠে ছন্নছাড়া বৃষ্টি। তাতে কুয়াশা কাটতে শুরু করলেও কাটছে না মেঘের ঘনঘটা। মেঘের সাথে সন্ধি করে বৃষ্টিও তামাশা শুরু করেছে নীড়ছাড়া মানুষের মাথা গুজার ঠাঁই নিয়ে। ফুটপাতে আশ্রয় নেয়া অসহায় মানুষেরা কোনোভাবে শীতের রাত কাটালেও বৃষ্টিতে সেই জো নেই। গরম বিছানার জায়গায় ফুটপাত থাকলেও তাও দখল করে দ্বিধাহীনভাবে ভিজিয়ে দিয়েছে বৃষ্টি।

চট্টগ্রামে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে গরিবের কষ্ট, থাকবে দুই দিন 3

নকিব নামের এক পথশিশু চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, রাস্তায় কোনোরকমে রাত্রে একজায়গায় পড়ে থাইকলে কি হইবো। বৃষ্টি পড়লে তো আর ঘুমান যায় না। যা গায়ে থাকে তাও ভিজা যায়। তখন ঠান্ডা অনেক বেশি লাগে। কি আর করা। আমগোরে কেউ কিছু দেয় না। এমনেই থাকন লাগে। আমার মতো বহুত আছে এমনে পড়ি থাকে রাস্তাঘাটে।

এসআর/এসএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!