চট্টগ্রামে গাইনি চিকিৎসায় আস্থার নাম শাহানারা, জানালেন ৩৮ বছরের গল্প

চট্টগ্রাম নগরীর চন্দনপুরার বাসিন্দা বন কর্মকর্তা এমএ চৌধুরী ও দেলোয়ারা বেগমের কোলজুড়ে এলো কন্যাসন্তান। ১৯৬২ সালের ১ জানুয়ারিতে জন্ম নেওয়া সেই কন্যার নাম রাখা হল— শাহানারা। যার অর্থ ‘রাজার মতো’ অর্থাৎ ’রাজকীয়’। ৪ ভাই এবং ৭ বোনের মধ্যে মেধাবী ছিলেন শাহানারা। শিক্ষাজীবনের সবক্ষেত্রেই মেধার স্বাক্ষর রেখে চলা এ মেয়ের ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবেন। কিন্তু বাবা-মা চাইতেন মেয়ে হোক ডাক্তার।

বাবা-মায়ের ইচ্ছেতেই শেষ পর্যন্ত ডাক্তার হয়ে ওঠেন শাহানারা চৌধুরী। এরপর ৩৮ বছর সেবা দিয়ে গেছেন দেশের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগে আক্রান্ত রোগীদের। ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। চট্টগ্রাম মেডিকেলের গাইনি বিভাগের দায়িত্বে থাকাকালীন সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। চট্টগ্রামের গাইনি বিশেষজ্ঞদের তালিকার শীর্ষে থাকা এ ডাক্তার রোগীদের আস্থার আরেক নাম।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশেষজ্ঞ এ ডাক্তার কথার ঝাঁপি খুলে বসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সঙ্গে। দীর্ঘ আলাপচারিতায় জানিয়েছেন কর্মজীবন, প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার কথা।

ডা. শাহানারা শিক্ষাজীবন শুরু হয় চন্দনপুরা মডেল কিন্ডারগার্টেনে। শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন সেখানে। এরপর সুযোগ পান ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে। এখান থেকে করেন এসএসসি পাস। এইচএসসি পাস করেন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে। কুমিল্লা বোর্ডে সেবার তিনি মেয়েদের মধ্যে মেধা তালিকায় প্রথম আর ছেলে-মেয়ের হিসেবে যুগ্মভাবে ১৬তম হন।

গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের ওপর আগ্রহ বেশি ছিল জানিয়ে ডা. শাহানারা চৌধুরী বলেন, ‘আমার বরাবরই এ দুই বিষয়ের ওপর ঝোঁক ছিল। ইলাবোরেট পড়াশোনা আমার বেশি পছন্দের ছিল না। মেডিকেলে পরীক্ষা দিতে গেলে বায়োলোজি পড়তে হবে, তাই পরীক্ষা দিতে চাইতাম না। কিন্তু বড় বোন মেডিকেলে সুযোগ না পাওয়ায় মা-বাবা চাইলেন আমাকে ডাক্তারি পড়াতে।’

গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে ভালো হওয়ায় বাংলাদেশ প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে টিকে যান ডা. শাহানারা। বুয়েটে পরীক্ষা দেওয়ার স্মৃতি মনে করে তিনি বলেন, ‘সময়টা ১৯৭৮ সালের শেষের দিকে। বুয়েটে চান্স পাওয়া ও পরীক্ষা দিতে পারাটা আমার জীবনের বড় একটা অধ্যায় ছিল। বুয়েটে পরীক্ষা দিতেই তার প্রথম ঢাকা যাওয়া। বড় বোনের ছেলে বুয়েটে পড়ছে তখন। মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনের ছেলেসহ ঢাকায় যাই। বুয়েটে সুযোগ পাওয়ার পর বাবা-মা বাধ সাধেন। ঢাকায় কোনো আত্মীয় না থাকায় তারা আমাকে চট্টগ্রামে চলে আসতে বলেন।’

তিনি বলেন, ‘বুয়েটে আমার সময় ৫০০ জন মেয়ে পরীক্ষা দিলেও মাত্র ১০ জন সুযোগ পায়। এর মধ্যে আমিও ছিলাম। কিন্তু এদিকে মেডিকেলে সে বছর পরীক্ষার নম্বর সিলেকশনে ভর্তির সুযোগ মেলে। এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নির্বাচিত হই আমি।’

ডা. শাহানারা আরও বলেন, ‘এরপর বুয়েটের ভর্তি বাতিল করে ভর্তি হলাম চট্টগ্রাম মেডিকেলে। তখন বাড়িতে সবসময় মেহমান থাকতো। আর ভাইবোনও ছিলাম বেশি। তাই বাড়ি ছেড়ে হোস্টেলে চলে আসি। তখন সকাল ৭টায় লেকচার ক্লাস ছিল। সে ক্লাসে উপস্থিত থাকতেই হোস্টেল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম। আবার মাঝে মাঝে বাসায় গিয়েও থাকতাম। মেডিকেলের সব বর্ষের পরীক্ষায় সবসময় দ্বিতীয় হতাম। তবে একবার প্রথমও হয়েছিলাম।’

১৯৮৪ সালের সেপ্টেম্বরে এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্নশিপ শুরু করেন ডা. শাহানারা চৌধুরী। ১৯৮৫ সালের নভেম্বরে ইন্টার্নশিপ শেষ করে ডাক্তার হয়ে বের হন।

ডাক্তারি পাস করার পর ‘নতুন জীবন’ নিয়ে ডা. শাহানারা বলেন, ‘বছরখানেক চট্টগ্রাম মেডিকেলের গাইনি ওয়ার্ডে এসে ঘোরাঘুরি করতাম। কর্তব্যরত ডাক্তারদের সঙ্গে থাকতাম। তাদের চিকিৎসা পদ্ধতি দেখে শেখার চেষ্টা করতাম। এর মধ্যে হলি হেলথ ক্লিনিকে কিছুদিন চাকরিও করি। চাকরি করা অবস্থায় এক বছরের সিনিয়র এক ডাক্তারের সঙ্গে পরিবার থেকে বিয়ে ঠিক হয়। ১৯৮৬ সালে আমার বিয়ে হয়। তখন আমার স্বামী কাজ করতেন একটা ক্লিনিকে।’

সংসার জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আনমনা হয়ে যাচ্ছিলেন ডা. শাহানারা। তিনি বলেন, ‘৫০০ টাকা দিয়ে পাঁচলাইশ থানার পাশে তৃতীয় তলার ছাদের চিলেকোঠার একটা বাসা ভাড়া নিই। দুজনেরই আয় সীমিত। ডাক্তারি জীবনের টানাপোড়েন কাউকে বলতে পারতাম না। অফিস থেকে ফিরে দুজন মিলে রান্না করতাম। মাসের ২০ তারিখ না আসতেই আমাদের সব টাকা শেষ হয়ে যেত। একবার মাসের ২৩ তারিখে দেখি, আমাদের দুজনের কাছে মাত্র ২১ টাকা আছে। দুদিন পর শেষ হয়ে যায় সে টাকা। এরপর চোখে অন্ধকার দেখি, কিভাবে চলবো বাকি দিনগুলো?’

তিনি বলেন, ‘এখনও মনে আছে, এক সন্ধ্যায় আমরা দু’জনই চিলেকোঠার বাইরে মন খারাপ করে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি। নিজেদের অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের কথা তো বাবা-মা-আত্মীয়স্বজনকে বলা যায় না। সবাই জানে আমরা ডাক্তার। শেষে আমার স্বামী এক ডাক্তারের বাবার চিকিৎসাসামগ্রী বাসায় পৌঁছে দিয়ে ৫০০ টাকা পান। আমরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। সে টাকায় আমাদের মাসের বাকি দিন চলে যায়।’

প্রথম সন্তানকে বাঁচাতে না পারার আক্ষেপ এখনও তাড়িয়ে বেড়ায় ডা. শাহানারাকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে স্বামীর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পোস্টিং হয় আমার। তখন আমি কনসিভ করি। চাকরিতে যেদিন জয়েন করতে যাই, সেদিন আমরা ঝড়ের কবলে পড়ি। তুফান চারদিকে, আমি লক্ষ্মীপুর পৌঁছার পরপরই আমার ব্লিডিং শুরু হয়। তারপর চট্টগ্রামে ফিরে ক্লিনিকে ভর্তি হয়েও আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারিনি। গর্ভপাত হয় আমার।’

এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এ গাইনি ডাক্তার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে বদলি নিয়ে নেন তিনি। তার নতুন পোস্টিং হয় বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে ছিলেন দু বছর। তারপর এফসিপিএস প্রথম পর্ব পাস করেন। সে সময় এফসিপিএসে ভর্তি পরীক্ষায় টিকে কোর্স করার সুযোগ মিলতো।

এফসিপিএস পাস করার পর তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেলের গাইনি বিভাগে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৮ সালের জানুয়ারিতে প্রথম সন্তানের জন্ম দেন তিনি। এরপর আবার এফসিপিএস দ্বিতীয় পর্বে ভর্তি হন।

এফসিপিএস দ্বিতীয় পর্বে পড়ার সময় ঢাকায় থাকতেন ডা. শাহানারা। সেসব দিনগুলোর কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘ঢাকার চানখারপুলে একটা বাসা ভাড়া নিই। আমার স্বামীও তখন একটা কোর্সে ঢাকায় থাকত। সকালবেলা ছেলেকে দেখাশোনা করতো আমার স্বামী। ছোট একটা ছেলেকে ঠিক করেছিলাম, বাবুকে কোলে নেওয়ার জন্য। তারপর আমি ক্লাস থেকে ফিরলে বাবুকে আমার কাছে রেখে আমার স্বামী ক্লাসে যেত। সময়টা ছিল ১৯৯১ সালের জানুয়ারি।’

তিনি বলেন, ‘১৯৯২ সালে জানুয়ারিতে আমি এফসিপিএস দ্বিতীয় পর্ব শেষ করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে যোগ দিই মেডিকেল অফিসার হিসেবে। তখন সেখানে ২০ বেডের গাইনি ওয়ার্ড ছিল। সেখানকার দায়িত্বে ছিলেন গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. পারভীন ফাতেমা। আমি তার কাছ থেকে মূলত কাজ শিখেছি। এর বছরখানেক পর চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেজিস্ট্রার হয়ে আবার ফিরে আসি। ১৯৯৩ সালের শেষে আবাসিক সার্জন (আরএস) হয়ে যোগ দিই।’

দেশের বাইরে প্রশিক্ষণের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে ডা. শাহানারা বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেলে আবাসিক সার্জন থাকাকালীন আমার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। প্রথম সন্তানকে মায়ের কাছে রেখে দ্বিতীয় সন্তানকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে মেডিকেলে এডুকেশন প্রশিক্ষণে যাই। ফিরে আসি এক বছর পর। বড় ছেলেটা তখন আমাকে ভুলতে বসেছিল। আমি ফিরে আসার পর আমাকে দেখে উঁকি দিয়ে চলে যেত, কাছে আসত না। মা হিসেবে এ দূরত্ব কত যন্ত্রণার— তা বোঝাতে পারব না। বিদেশে থাকতে ছেলের মুখের একটু শব্দ শোনার জন্য কোনোদিন ১০০ পাউন্ডের কয়েনও খরচ করেছি। তখন কয়েন দিয়ে ল্যান্ডফোনে কথা বলতে হতো।’

বিদেশ থেকে ফিরে ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেলে জুনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ পান ডা. শাহানারা চৌধুরী। ১৯৯৮ সালে সিনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে বদলি করা হয় তাকে। ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেলের মডেল ক্লিনিকে যোগ দেন। এরপর ২০০১ সালে চলতি দায়িত্বে সহযোগী অধ্যাপকে পদোন্নতি লাভ করেন। ডা. রোকেয়ার সঙ্গে গাইনি ওয়ার্ডের একটা ইউনিট ভাগ করে দায়িত্ব পালন করতেন তিনি।

এরপর ২০১২ সালে দায়িত্ব পান বিভাগীয় প্রধানের। প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তারপর চলে যান অবসরে। শেষ করেন ৩৮ বছরের কর্মজীবন।

ডা. শাহানারা বলেন, ‘আমি চাইলে বিদেশের গ্রিনকার্ডধারী হতে পারতাম। কিন্তু আমি সাদা চামড়ার মানুষদের ডাক্তারি করতে চাইনি। আমার দেশের গরিব-অসহায়দের সেবা করতে চেয়েছি।’

এদেশের গাইনি রোগীদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে ডা. শাহানারা বলেন, ‘গাইনি রোগীরা নানা অপচিকিৎসার শিকার হন। তারা ভাবেন, রোগ মানেই অপারেশনজনিত জটিলতা। সঠিক নির্দেশনা পান না তারা। কিন্তু আমার কাছে রোগী এলে আমি প্রথমে তার মনের ভয় দূর করার চেষ্টা করি। হয়তো কোনো রোগীর জরায়ুতে সিস্ট হয়েছে, আমি তাকে বোঝাই, এটি ভয়ের বিষয় না। চিকিৎসায় ভালো হবে, অপারেশন লাগবে না। আমি রোগীকে বোঝাই, রোগ হলেই সার্জারি না। আমার ওপর আস্থা থেকেই বৃহত্তর চট্টগ্রামের সব জায়গা থেকে রোগী আসেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একজন নারীর যখন গাইনোলোজিক্যাল সমস্যা ধরা পড়ে, তখন তিনি নানাভাবে অপচিকিৎসার শিকার হন। এছাড়া রোগী নিজেই গুগল দেখে ডাক্তার হয়ে যান। এ বিষয়টি খুব বাজে একটা সিচুয়েশন তৈরি করে।’

দক্ষতা বাড়াতে ল্যাপারোস্কপিক সার্জারিতে প্রশিক্ষণ নেন ডা. শাহানারা। এখন সেটি নিয়েই কাজ করছেন।

অবসরে যাওয়ার পর ডা. শাহানারা চৌধুরীর সময় কাটে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখে। এছাড়া অনকলেও রোগী দেখেন তিনি। সকালে অপারেশনের কাজগুলো শেষ করেন। বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নগরীর জিইসি মোড়ের বেলভিউ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখেন। সাধারণত ৩০ জনের বেশি রোগী দেখেন না তিনি। তবে অনুরোধের রোগীসহ প্রতিদিন এ সংখ্যা ৪০ পার হয়। তবে অপেক্ষমাণ কোনো রোগীকে নিরাশ করেন না তিনি। এছাড়া তিনি সিরিয়াল মেনটেইন করেন কড়া নজরদারিতে।

ডা. শাহানারা চৌধুরী বলেন, ‘ধাত্রীবিদ্যায় ডাক্তারকে বেশি সময় দিতে হবে। যে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে গাইনি ডাক্তার রোগী দেখবেন, রোগীকে সেখানে ভর্তির পরামর্শ দিতে হবে। রোগীর ডেলিভারিতে সে ডাক্তারের উপস্থিতি ও তদারকিতে সন্তান স্বাভাবিক প্রসবে জন্মগ্রহণ করে। এতে সিজারিয়ান প্রসবের হার কমে যায়। কিন্তু ডাক্তাররা একসঙ্গে অনেকগুলো কাজ করেন। তাই রোগীর কথা মনেই রাখতে পারেন না। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া উচিত।’

জীবনের সফলতার কথা বলতে গিয়ে স্বামীর অবদান স্বীকার করেন ডা. শাহানারা। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর ত্যাগ না থাকলে আজকের শাহানারা চৌধুরী হতাম না। তিন সন্তানকে স্বামীই বেশি সময় দিয়েছেন, লালন-পালন করেছেন।’

ডা. শাহানারা চৌধুরীর ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জননী। স্বামী আকবর হোসেন ভুঁইয়া চট্টগ্রাম মেডিকেলের শিশু সার্জারি বিভাগ থেকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে গেছেন। তাদের বড় ছেলে তাহসিন সামির ভূঁইয়াও পেশায় ডাক্তার, থাকেন যুক্তরাজ্যে। দ্বিতীয় ছেলে তাহসিফ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। তৃতীয়জন মেয়ে ফারিহা তাবাসসুম। তিনি পেশায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনিও থাকেন অস্ট্রেলিয়া।

ব্যক্তিগত জীবনের পরিবর্তনের কথা বলতে গিয়ে এ গাইনি ডাক্তার বলেন, ‘আমি অবসরে গিয়ে ইসলামী জীবন ও ধর্ম শিক্ষা জানার চেষ্টা করছি। নিজেকে পর্দায় আবৃত করেছি অনেক আগেই। আল্লাহতায়ালার নাম নিয়ে তাকে সন্তুষ্টির জন্য মানুষের সেবা করে যেতে চাই।’

অবসর সময় আপনজনদের সঙ্গে কাটানো পছন্দ করেন ডা. শাহানারা। একইসঙ্গে ধর্মগ্রন্থ পড়া ও ঘুরতেও পছন্দ করেন তিনি।

এখন তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেলের পোস্ট গ্রাজুয়েটের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন। এছাড়া অনলাইনেও ক্লাস করান তিনি। গ্রামের বাড়িতে তার ও স্বামীর নামে একটি মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। সেখানে একটি মহিলা মসজিদ করারও ইচ্ছে আছে তার।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!