চট্টগ্রামে খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে সেনাবাহিনী
জলাবদ্ধতা নিরসন
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রধান বাধা নগরীর খাল পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। সিডিএর এ উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ বিগ্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা। উচ্ছেদের প্রথম দিনেই নগরীর বাকলিয়া থানার কল্পলোক আবাসিকের পেছনে রাজাখালী খালের ২৬ ছোট-বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। তবে পূর্ব ঘোষণা শুনে প্রথমবারের মত অবৈধ দখলদাররা কোনো ধরনের বাধা না দিয়ে নিজ উদ্যোগেই নিজ নিজ স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে সাড়ে এগারোটায় শুরু হওয়া এ অভিযান বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। যেসব জায়াগায় এস্কেভেটর নিয়ে উচ্ছেদ করা যায়নি সেখানে শ্রমিক দিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হয়। এ অভিযান আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক লে. কর্নেল আবু সাদাত মোহাম্মদ তানভীর।
এ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিডিএর স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল আলম চৌধুরী।
লে. কর্নেল আবু সাদাত মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘নগরীর ১৩ খালে প্রায় ১৬০০ স্থাপনা রয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের প্রথম দিনেই রাজখালী খালে অভিযান চালানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নগরীর চিহ্নিত ১৩ খালে অভিযান চালানো হবে। এ অভিযান মধ্য আগস্ট পর্যন্ত চলবে।’
সিডিএর স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘অভিযানের প্রথম দিনেই আমরা রাজাখালী থেকে ২৬ ছোট বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। কেউই অভিযানে বাধা দেয়নি। বুধবার ( ৩ জুলাই) নোয়াখালে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।’
উল্লেখ্য, যেসব খালে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হবে সেগুলো হলো- মহেশখাল, মহেশখালী খাল, খন্দকিয়া খাল, গয়নাছড়া খাল, ডোমখালী খাল, বিরজা খাল, বামনশাহী খাল, ত্রিপুরা খাল, টেকপাড়া খাল, রাজাখালী-২ খাল, নোয়াখাল, মরিয়মবিবি খাল ও চাক্তাই খাল।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএর সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর খালের উভয় পাশে রিটেইনিং ওয়াল, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ শুরু করে। পাশাপাশি খাল থেকে ময়লা
পরিষ্কার কার্যক্রমও শুরু হয়।
ডিপিপি অনুযায়ী গৃহীত এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদী এ প্রকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ৩৬ খালের মাটি অপসারণসহ ৩০০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১০০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ ও ২০২০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরে ৩৬ খাল খনন, খালের পাশে ১৭৬ কিলোমিটার প্রতিরোধক দেয়াল, ৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ৪২ সিল্ট ট্র্যাপসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা রয়েছে।
এডি/এসএস