চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের জন্য দুয়ার খুলে দিল মা ও শিশু হাসপাতাল

১০ আইসিইউযুক্ত ভেন্টিলেটরসহ করোনা ইউনিট শনিবার

করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসায় যখন চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর দুয়ার একপ্রকার বন্ধ, ঠিক তখনই মানবিকতার হাত বাড়িয়ে নিজেরাই দুয়ার খুলে এগিয়ে এসেছে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল।

এই হাসপাতালে ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্ত কিংবা করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছে ১০টি। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আইসোলেশনের জন্যও প্রস্তুত করা হয়েছে ১০টি শয্যা। পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে ৩০ শয্যার ফ্লু কর্নার। শনিবার (৬ মে) থেকে পুরোদমে চালু হবে চিকিৎসাও।

নগরীর আগ্রাবাদে হাসপাতালটির নতুন ভবনে প্রস্তুত করা ৫০ শয্যার করোনা ইউনিট শনিবার এটি উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রস্তুত ৫০ শয্যার মধ্যে ৩০ শয্যা ফ্লু কর্নার, ১০ শয্যা আইসিইউ ও ১০ শয্যা আইসোলেশনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শয্যার সংখ্যা ১০০ করা হবে।

চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের জন্য দুয়ার খুলে দিল মা ও শিশু হাসপাতাল 1

এ বিষয়ে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের ট্রেজারার রেজাউল করিম আজাদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে কোন রোগী ফেরত যাচ্ছে না। করোনা পজিটিভ হলেও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আপাতত ১০টি আইসিউসহ ৫০ শয্যা দিয়ে করোনা ইউনিট আমরা শুরু করছি। এটি ১০০ শয্যাতে উন্নীত করার কাজ চলছে।’

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদ সদস্য ও করোনা ওয়ার্ড বাস্তবায়ন কমিটির উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাবেদ আবছার চৌধুরী বলেন, ‘দুই মাস আগে হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আমরা করোনার ভয়াবহতা ও চট্টগ্রামে করোনা মোকাবেলার প্রস্তুতির কথা চিন্তা করে করোনা ওয়ার্ড স্থাপনের বিষয়টি অনুমোদন করিয়ে নিই। যার ফলশ্রুতিতে শনিবার এই ওয়ার্ড চালু হচ্ছে। দুর্দিনে আমরা জনগণের জন্য কিছু করতে পারছি এটিই আমাদের আত্মতৃপ্তি।’

চট্টগ্রাম নগরীতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো করোনা রোগী দূরের কথা, যখন করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদেরও চিকিৎসা দিচ্ছে না তখনই নিজ তাগিদে এই হাসপাতাল এগিয়ে আসায় সাধুবাদ জানিয়েছে বিশিষ্টজনেরা।

বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি নিজেও মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্য। আমি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তাদের মূল লক্ষ্যটাই হলো সেবা। কোন রোগী যে রোগ নিয়েই হাসপাতালে আসুক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রিফিউজ করতে পারে না। এটা হাসপাতালের মূলনীতির বাইরে। এটা নৈতিকতা অথবা আইনগত বলেন, আর মানবিক কিংবা মনস্তাত্ত্বিক দিক বলেন সব দিক থেকেই অবৈধ। যতক্ষণ সিট থাকবে রোগীকে তারা ততক্ষণ সেবা দেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের অন্যান্য হাসপাতাল যেভাবে রোগীকে ভর্তি নিচ্ছে না, সেখানে মা ও শিশু হাসপাতাল নিজ উদ্যোগে করোনা ইউনিট চালু করতে যাচ্ছে। আমি বলব এটা একটা মাইলফলক।’

এমএফও/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!