চট্টগ্রামে করোনার অগ্নিমূর্তি, ১০ লাশ পাশে রেখে একদিনেই শনাক্ত ৩৯৯

করোনায় চট্টগ্রামে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭০১ জনে

চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়িয়ে এখন ষাটের ঘর ছুঁই ছুঁই করছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩৯৯ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হলে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৮ হাজার ৭২৪ জনে। এদিন শনাক্ত যেমন বেশি হয়েছে, তেমনি মৃত্যুও হয়েছে বেশি। গত ২৪ ঘন্টায় ১০ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হল।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নগরীর নয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাব এবং এন্টিজেন টেস্টে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৩৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নতুন ৩৯৯ জন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন। এদিন সংক্রমণের হার দাঁড়ায় ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশে, যা গতকাল সোমবার ছিল ২৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

নতুন শনাক্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরে রয়েছে ২৮৪ জন এবং উপজেলাগুলোতে ১১৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে ফটিকছড়িতে সর্বোচ্চ ৩২ জন, সীতাকুণ্ডে ২৪, রাউজানে ২০, মিরসরাইয়ে ১৬, হাটহাজারীতে ৩, বোয়ালখালীতে ১, রাঙ্গুনিয়ায় ২, সন্দ্বীপে ২ জন, পটিয়ায় ১, বাঁশখালীতে ৩, লোহাগাড়ায় ২ এবং আনোয়ারায় রয়েছেন ৯ জন। অন্যদিকে সাতকানিয়া ও চন্দনাইশে রোগী মেলেনি।

চট্টগ্রাম জেলায় করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা এখন ৫৮ হাজার ৭২৪ জন। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরের বাসিন্দা ৪৫ হাজার ৮৬৭ এবং ১৪ উপজেলার ১২ হাজার ৮৫৭ জন।

গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরে চারজন এবং উপজেলাগুলোতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে করোনায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০১ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরের ৪৭৪ ও উপজেলার ২২৭ জন।

মঙ্গলবার চলতি জুনের সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। ২৯ জুন ১ হাজার ৩৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে তার মধ্যে ৩৯৯ জনই পজিটিভ শনাক্ত হন। এদিন চট্টগ্রামে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার রেকর্ড হয় ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ মাসে সবচেয়ে কম আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিল গত ৬ জুন। সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ০৪ শতাংশ সংক্রমণ হার রেকর্ড হয় ওইদিন।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে (বিআইটিআইডি) ৪১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রাম নগরের ৭২ ও উপজেলার ৬১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৩৪ জনের নমুনার মধ্যে নগরের ২৮ ও উপজেলার ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নগরের ৪৯ ও উপজেলার ১৫ জনের শরীরে জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত হয়।

নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষা করা ৬৬টি নমুনায় নগরের ২৮ ও উপজেলার একটির ফলাফল পজিটিভ আসে। নমুনা সংগ্রহের পরপরই ফলাফল প্রদানকারী এন্টিজেন টেস্টে ১৩৫ জনের মধ্যে ২ জন জীবাণুবাহক বলে জানানো হয়। চট্টগ্রামে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহকারী নগরীর কয়েকটি কেন্দ্রে এন্টিজেন টেস্ট করা হয়ে থাকে।

এদিকে বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ১১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে উপজেলার একটিসহ ১৫টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১১১টি নমুনার মধ্যে উপজেলার তিনটিসহ ৪২টি, আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৭টি নমুনায় চট্টগ্রাম নগরের ১৯ ও উপজেলার ৪জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব ও বেসরকারি এপিক হেলথ কেয়ারে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।

এদিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৩৫টি নমুনার মধ্যে ২ জনের পজিটিভ এসেছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!