চট্টগ্রামে ওসির কাণ্ড, সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে মেমোরি কার্ডও মুছে দিলেন

চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিকদের প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবিরের বিরুদ্ধে। এ সময় তার নির্দেশে একটি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাম্যানের মেমোরি কার্ড খুলে সবকিছু নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কর্মরত সাংবাদিকরা। এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন।

তবে এমন কোনো হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ওসি জাহিদুল কবির। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘কিছু বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু কথা হলেও সেখানে হুমকি দেওয়ার মতো কিছু ঘটেনি।’

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি এলাকার বিএনপি অফিসের সামনে। সংবাদকর্মীরা তখন সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে অবস্থান করছিলেন।

জানা গেছে, দুপুরে কাজির দেউড়ি এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে মহানগর বিএনপি। এ উপলক্ষে সেখানে দলীয় নেতাকর্মীরা জড়ো হন। ওই দোয়া মাহফিল শেষ হতে না হতেই কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি দল সেখানে আচমকা অভিযান শুরু করে।

সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, দোয়া মাহফিল থেকে পুলিশ কমপক্ষে পাঁচজন বিএনপিকর্মীকে ধরে নিয়ে যায়। ধরে নিয়ে যাওয়ার ওই দৃশ্য ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ করার সময় ওসি জাহিদুল কবিরের নির্দেশে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির ক্যামেরার মেমোরি কার্ড ছিনিয়ে নেন পুলিশের এক সদস্য। ওসিসহ তার সহযোগীরা এ সময় এনটিভির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আরিচ আহমেদ শাহ ও ক্যামেরাপার্সন সুমন গোস্বামীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করে তাদের ভাঙচুর মামলায় আসামি করার হুমকি দেন।

এনটিভির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আরিচ আহমেদ শাহ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পুলিশ যখন এনটিভির ক্যামেরার মেমোরি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে সেটা নষ্ট করছিল। তখন আমি এগিয়ে গিয়ে সমস্যা কী জানতে চাইলাম ওসি জাহিদুল কবিরের কাছে। ওসি এ সময় তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন। তিনি আমাকে বলেন, ‘দুই মিনিট আপনাকে সময় দিলাম। এখনই সরে যান। নইলে আপনাকেও এই (ভাঙচুর) মামলার আসামি করবো।’

সাংবাদিক আরিচ অভিযোগ করেন, ‘ওসির হুমকির পর কোতোয়ালীর ওসি (অপারেশন) রুবেল হাওলাদারসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য আমাকে ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে একপাশে সরিয়ে দেন।’

তবে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কোনো সাংবাদিককে কোনো ধরনের হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আসামি গ্রেপ্তারের সময় আমরা শুধু তাদের সরে যেতে বলেছিলাম।’

তিন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘একজন ওসি কেন সাংবাদিকদের হুমকি দিতে যাবে? বা অশোভন কথা বলতে যাবে?’

কোতোয়ালীর ওসি (অপারেশন) রুবেল হাওলাদারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের ঘাড় ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ।’

এদিকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনসহ আরও বিভিন্ন সংগঠন ওসি জাহিদুল কবিরের অশালীন আচরণ ও হুমকি দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে সমাবেশের ডাক দিয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!