চট্টগ্রামে এলো বরিশালের বিষধর ‘রাসেল ভাইপার’, নদীপথে ঢুকেছিল দেশে

হোমিও ওষুধে শান্ত হয়েছিল বেপরোয়া সাপটি

বরিশাল থেকে উদ্ধার হওয়া ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ ‘রাসেল ভাইপার’কে নিয়ে আসা হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেনম রিসার্চ সেন্টারে। সাড়ে ছয় ফুট লম্বা সাপটিকে বরিশালের হিজলার উপজেলার লতা বাজার সংলগ্ন বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়।

রাসেলস ভাইপার সাপ বাংলাদেশে চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে যেসব সাপ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বিষাক্ত। এই সাপের কামড়ে শরীরের দংশিত অংশে বিষ ছড়িয়ে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ ভারী হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত, কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন রকম শারীরিক উপসর্গ দেখা যেতে পারে।

হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক হাওলাদার বলেন, ‘গত ২৭ জানুয়ারি লতা বাজার সংলগ্ন এলাকার একটি বাগানে সাপটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা মোবাইল করে আমাকে জানায়। বিষয়টি হিজলা ফায়ার সার্ভিস কার্যালয়কে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সাপটি ধরে বস্তাবন্দি করেন।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘সাপটি দেখে স্থানীয়রা আঘাত করে এবং ধাওয়া দেয়। এতে সাপটি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরে হোমিও চিকিৎসক মাধব দাস একটি ওষুধ দেন। ওই ওষুধ সাপটির গায়ে ছিটিয়ে দিলে শান্ত হয়।’

তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস এবং বিভিন্ন মাধ্যমে আলাপকালে নিশ্চিত হয়েছি, এটি বিলুপ্তির পথে থাকা রাসেল ভাইপার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেনাম রিসার্চ সেন্টার সাপ নিয়ে গবেষণা করছে। তাদের জানানো হলে ১ ফেব্রুয়ারি একটি টিম এসে সাপটি নিয়ে যায়। তারাও নিশ্চিত করেছেন, এটি রাসেল ভাইপার সাপ।’

উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া হিজলা ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার সজল কুমার সিংহ বলেন, ‘স্থানীয়দের ধাওয়ায় সাপটি বেপরোয়া ছিল। স্থানীয়রা সাপটিকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। হোমিও চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধে সাপটি কাবু হয়। প্রথমে সাপটির মুখ আটকে ফেলা হয়। এরপর সাপটিকে বড় একটি বস্তায় ভরে রাখা হয়।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেনাম রিসার্চ সেন্টারের সহকারী গবেষক রফিকুল ইসলামের বরাত দিয়ে সজল কুমার বলেন, ‘এটি রাসেল ভাইপার সাপ। বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্তির পথে। তবে এখনও ভারতে সাপটির দেখা মিলছে। গবেষকদের ধারণা, এটি ভারত থেকে নদীপথে বাংলাদেশে এসেছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, সাপটি সাত-আট ঘণ্টা পানিতে থাকতে পারে।’

সজল কুমার বলেন, ‘গবেষক রফিকুল ইসলাম আমাকে আরও জানিয়েছেন রাসেল ভাইপার সাপটি এদেশে বেড়ে উঠেছে কিনা এবং এদেশের আবহাওয়ায় বেড়ে উঠতে পারে কিনা তা নিয়ে তারা গবেষণা করবেন।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!