চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে রণপরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক

উপস্থিত ছিলেন সাকিব, ডমিঙ্গো, বাশার, নান্নু ও আকরাম

হঠাৎ করেই ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের জন্য করণীয়’ বিষয় নিয়ে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানের রুমে জরুরি বৈঠক। হয়তো বৈঠকটি আরও দুদিন আগে হতে পারতো, কিন্তু সাকিব আল হাসানের ছুটিজনিত অনুপস্থিতির কারণে সম্ভব ছিল না। সাকিব দেশে ফিরলেন শনিবার ভোর ৩টায়। সবাইকে অবাক করে দিয়ে শনিবার সকালেই হাজির মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে, যেখানে চলছে ক্রিকেটারদের কন্ডিশনিং ক্যাম্প। আর এদিনই জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে প্রথম দেখা হলো অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের । নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনের সঙ্গেও তাই। সাকিব-হাবিবুল দুজনেই ছুটিতে ছিলেন। কাজে যোগদানের দিনেই নতুন কোচের সঙ্গে তাদের আনুষ্ঠানিক পরিচিত পর্ব হয়ে গেলো। আর পরিচিতি পর্বের খানিকবাদেই তারা বসে পড়লো জরুরি বৈঠকে।

আলোচনার এজেন্ডা-আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ। আপাতত একমাত্র ম্যাচের টেস্ট সিরিজের মধ্যেই রইলো সেই আলোচনা। চট্টগ্রামে টেস্ট ম্যাচ, উইকেট কেমন হবে? বাংলাদেশ দলই বা কেমন হবে? কোন পজিশনে কে দক্ষ? আফগানিস্তানের শক্তিশালী দিক কোনটি। দুর্বলতা কোথায়? এসব প্রশ্নমালা সাজিয়ে এই সিরিজের রণনীতি ঠিক করতে বসেছিলেন শনিবার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশের নতুন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, নির্বাচক হাবিবুল বাশার ও টিম অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান।

লম্বা সময় ধরে সেই আলোচনা শেষে এসে আকরাম খান সাংবাদিকদের জানালেন, ‘সামনের মাসে আমাদের টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই টেস্ট সিরিজ নিয়ে আমরা কোচ-অধিনায়ক-নির্বাচকদের সবাই একসঙ্গে বসে আলাপ আলোচনা করলাম। দলের শক্তি কিভাবে আরো বাড়াতে হবে। কোন রণনীতি নিয়ে খেলতে হবে। এসব নিয়ে আমরা বেশ সফল একটা আলোচনা করেছি। সামনের সময়েও এমন আরো বৈঠক হবে।’

তবে প্রথম বৈঠকে এই থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বড় একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজের উইকেট কি বাংলাদেশ কি ভাবছে সেই প্রশ্নের উত্তরে আকরাম খান যা বললেন, তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে -বাংলাদেশ চট্টগ্রাম টেস্টে আফগানিস্তানকে পেস উইকেটে স্বাগত জানাবে!

আকরাম বলছিলেন, ‘উইকেটে হয়তো তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি এই সিরিজে যেন ট্রু উইকেট হয়। ফাস্ট বোলাররা যাতে সুবিধা পায়। উইকেটে যেন ঘাস থাকে সেই চেষ্টা করছি। বলতে পারেন, আমাদের তেমন ফাস্ট বোলার নেই। কিন্তু তাই বলে বসে থাকলে তো চলবে না। আমাদের তো শুরু করতেই হবে। নাই বলে যে আমরা পুরোপুরি চুপচাপ বসে থাকবো তাও কিন্তু না। আমাদের যা আছে তাই নিয়ে শুরু করতে হবে। গত দুবছর ধরে আমরা উইকেট অনেক উন্নত করেছি। আমাদের পেস বোলাররাও এখন সংখ্যায় অনেক বাড়ছে। দেশের বাইরে খেলতে গিয়ে আমাদের যেন আর কোনো সমস্যা না হয়- সেজন্য আমরা ঘরের মাঠের উইকেটগুলো ভালো করার চেষ্টা করছি।’

নির্বাচক, কোচ ও অধিনায়কের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের সার্বিক দিক প্রসঙ্গে আকরাম খান জানালেন, ‘খেলাটা যেহেতু হোমে। তাই আমাদের রণনীতি তৈরির একটা বাড়তি সুবিধা তো আমরা অবশ্যই পাবো। তাই সেই বিষয় গুলো আলোচনা হয়েছে। অধিনায়ক কি চান। নির্বাচকরদের পরিকল্পনা কেমন এই সিরিজকে ঘিরে। কার কি চাহিদা সেটা নিয়ে সবাই নিজ নিজ মতামত রেখেছেন। টিম অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ওদেরকে কতখানি সহায়তা করতে পারবো- এসব বিষয়ের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

নতুন কোচের কাজের ধরণ এবং ক্রিকেটীয় চিন্তা চেতনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন আকরাম-‘কোচের চিন্তাধারা অনেক ভালো। খেলোয়াড়, অধিনায়ক, বোর্ড পরিচালক হিসেবে অনেক কোচের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। একসঙ্গে কাজ করেছি আমরা। তবে রাসেল ডমিঙ্গোর ক্রিকেটীয় চিন্তা ও পরিকল্পনা বাকিদের চেয়ে অনেক ভিন্ন। বিসিবি যদি এই ক্রিকেট কোচকে সঠিক মতো সহায়তা দিতে পারে, তবে আমি আশবাদি বাংলাদেশের ক্রিকেট মান আরো অনেক বাড়বে। কোচ জানিয়েছেন- শুধু হোম না আমরা যাতে অ্যাওয়ে সিরিজেও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি সেজন্য কোন সমাধানের পথে যেতে হবে- সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। হোম এবং অ্যাওয়ে সিরিজেও আমাদের খেলার মানটা একই হতে হবে। হোমে যেমন দাপুটে খেলি। বাইরে গেলেও যেন সেই তেজটা থাকে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!