চট্টগ্রামের ৫৫৫ করোনাযোদ্ধার জন্য ৩ কোটি টাকা চায় স্বাস্থ্য বিভাগ

সারা দেশের ১০ হাসপাতালের জন্য আরও ৬ কোটি

করোনা আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত চট্টগ্রামের চার হাসপাতালের মোট ৫৫৫ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য প্রণোদনা বা উৎসাহমূলক ভাতা হিসেবে প্রায় তিন কোটি টাকা চেয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ। টাকার এই অংক তাদের দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ। এর মধ্যে ২০৯ জন চিকিৎসক, ২১৯ জন নার্স এবং ১২৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত করোনা সেবাদাতাদের জন্য মোট ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে সরকারের অর্থ বিভাগের কাছ থেকে।

চট্টগ্রামের যে চার হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের জন্য প্রণোদনা চাওয়া হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে— ফৌজদারহাটের ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি), চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার জেনারেল হাসপাতাল, রেলওয়ে কোভিড-১৯ আইসোলেশন হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয়।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের বাজেট শাখার পাঠানো চিঠিতে ওই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ২ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়। চিঠিতে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের ১৪টি প্রতিষ্ঠানের ৮০০ জন চিকিৎসক, ৪৬৯ জন নার্স এবং ৫৪১ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য এককালীন বিশেষ সম্মানীর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুপারিশের কথাও উল্লেখ করা হয়।

এর আগে গত বছরের ৯ জুলাই অর্থ বিভাগ এক চিঠিতে উল্লেখ করেছিল, বিশেষ সম্মানীর আওতায় শুধুমাত্র করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে সরাসরি কর্মরত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য সেবা কর্মীরা এককালীন দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ সম্মানী পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বিশেষায়িত হাসপাতাল বিআইটিআইডির ৫৪ জন চিকিৎসক, ২৭ জন নার্স এবং ২৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য চাওয়া হয়েছে ৬২ লাখ ১ হাজার ৭৮০ টাকা। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ১৩৫ জন চিকিৎসক, ১৮২ জন নার্স এবং ৬৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য চাওয়া হয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৫ হাজার ২০ টাকা। চট্টগ্রামের ১০০ শয্যা রেলওয়ে কোভিড ১৯ আইসোলেশন হাসপাতালের ১১ জন চিকিৎসক, ৯ জন নার্স এবং ১৩ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য চাওয়া হয়েছে ১৩ লাখ ৯ হাজার ৮৮০ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের ৯ জন চিকিৎসক, ১ জন নার্স এবং ২২ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য চাওয়া হয়েছে ১৪ লাখ ৯১ হাজার ৫৪০ টাকা।

অন্যদিকে কক্সবাজারের ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের ৩৯ জন চিকিৎসক ও ৪০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য চাওয়া হয়েছে ৪৬ লাখ ৭৬ হাজার ২২০ টাকা। পার্বত্য জেলা রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের ১৬ জন চিকিৎসক, ৩২ জন নার্স এবং ২৬ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য চাওয়া হয়েছে ৩২ লাখ ৫৮ হাজার ২৩০ টাকা, বান্দরবান সদর হাসপাতালের ১৬ জন চিকিৎসক, ২৬ জন নার্স ও ৩৭ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য চাওয়া হয়েছে ৩৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৪০ টাকা।

এছাড়া ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ৬৬ জন চিকিৎসক, ৭০ জন নার্স এবং ৭৩ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ১ কোটি ১১ লাখ ২৭ হাজার ৯৮০ টাকা, নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ৪৫ জন চিকিৎসক, ৪৪ জন নার্স এবং ৪৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ৬০ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪০ টাকা, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ৫১ জন চিকিৎসক এবং ৬১ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪০ টাকা, লক্ষীপুর জেলা সদর হাসপাতালের ১৩ জন চিকিৎসক, ১৭ জন নার্স এবং ১৩ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ২১ লাখ ২২ হাজার ২৬০ টাকা, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫০ জন চিকিৎসক এবং ৭১ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ১ কোটি ৩১ লাখ ৭৭ হাজার ৩০০ টাকা চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার গ্রিড হাসপাতালের ১৬৯ জন চিকিৎসক, এবং ১২ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য ৯৪ লাখ ৫৫ হাজার ২৬০ টাকা এবং লালমনিরহাটের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপতালের ২৬ জন চিকিৎসক, ৬১ জন নার্স এবং ৩৭ জন স্বাস্থ্যকর্মীর জন্য প্রণোদনা হিসেবে চাওয়া হয়েছে ৬০ লাখ ৬৬ হাজার ৬২০ টাকা।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!