চট্টগ্রামের ২ মন্ত্রী ও ৪ এমপির সংসদে যাওয়া মানা

চট্টগ্রামের দুই মন্ত্রী ও চার সংসদ সদস্যকে জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে সংসদের হুইপের দফতর থেকে ফোন করে তাদের সংসদে যোগ না দিতে নিরুৎসাহিত করা হয়। ইতিমধ্যে সংসদে প্রতিদিন এমপিদের উপস্থিতি ৬০ থেকে ৮০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের কারণে সংসদের হুইপের দফতর থেকে ফোন করে ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে সংসদ অধিবেশনে না আসতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় চট্টগ্রাম-৬ আসনের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ আসনের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এবং চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে সংসদ অধিবেশনে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী গণমাধ্যমের কাছে তার করোনা পজিটিভ হওয়ার কথা স্বীকার করেননি।

এছাড়া বান্দরবানের সাংসদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হওয়ার পর তাকেও সংসদে না আসতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যদিকে মা ও ভাই করোনা পজিটিভ হওয়ায় চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকেও অনুরোধ করা হয়েছে অধিবেশনে যোগ না দিতে।

শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের কারণে আরও যেসব সংসদ সদস্যকে অধিবেশনে না আসতে অনুরোধ করা হয়েছে তারা হলেন— বিরোধীদলীয় নেতা ও ময়মনসিংহ-৪ আসনের এমপি রওশন এরশাদ, সংসদ উপনেতা ও ফরিদপুর-২ আসনের সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ঝালকাঠী-২ আসনের আমির হোসেন আমু, সরকারদলীয় সিনিয়র সংসদ সদস্য ভোলা-১ আসনের তোফায়েল আহমেদ, গোপালগঞ্জ-২ আসনের শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকা-১৮ আসনের অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ফরিদপুর-৩ আসনের খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বরিশাল-১ আসনের আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, নওগাঁ-৪ আসনের ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, জামালপুর-১ আসনের আবুল কালাম আজাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি ও পিরোজপুর-২ আসনের আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সরকারি দলের সংসদ সদস্য শেরপুর-৩ আসনের একে এম ফজলুল হক, পাবনা-৩ আসনের মকবুল হোসেন, ময়মনসিংহ-৬ আসনের মোসলেম উদ্দিন, পটুয়াখালী-১ আসনের মো. শাহজাহান মিয়া, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের মো. দবিরুল ইসলাম, সরকারি দলের হুইপ ও খুলনা-১ আসনের পঞ্চানন বিশ্বাস, সংরক্ষিত আসনের শেখ অ্যানী রহমান ও জিন্নাতুল বাকিয়া এবং বিএনপির সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার। এছাড়া সংরক্ষিত আসনের সদস্য ও রাশেদ খান মেননের স্ত্রী লুৎফুন নেসা খানকেও অনুরোধ করা হয়েছে অধিবেশনে যোগ না দিতে।

অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং প্রথমে এ তালিকায় না থাকলেও দুজনই পরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এছাড়া করোনা পজিটিভ হওয়ায় নওগাঁ-২ আসনের শহীদুজ্জামান সরকার, যশোর-৪ আসনের রণজিৎ কুমার রায়, জামালপুর-২ আসনের ফরিদুল হক খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের এবাদুল করিমকে সংসদ অধিবেশনে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এদের মধ্যে শহীদুজ্জামান সরকার ও এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

পরিবারের সদস্যরা করোনা পজিটিভ হওয়ার কারণে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ছাড়াও অধিবেশনে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে রাজবাড়ী-১ আসনের কাজী কেরামত আলী, যশোর-৩ আসনের কাজী নাবিল আহমেদ ও টাঙ্গাইল-৬ আসনের আহসানুল ইসলাম টিটুকে। ব্যক্তিগত সহকারী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা বাগেরহাট-২ আসনের শেখ তন্ময় এবং পরিবারে অসুস্থ ও বৃদ্ধ মা থাকায় তার বাবা বাগেরহাট-১ আসনের এমপি শেখ হেলাল উদ্দিনকে আগেই অনুরোধ করা হয়েছে এবারের অধিবেশনে যোগ না দিতে।

এর মধ্যেই সোমবার (১৫ জুন) দুপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। বাজেট অধিবেশন শুরুর দিন ১০ জুন তিনি সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!