চট্টগ্রামের ২০ পাহাড় সাবাড় করে তমা গ্রুপের বাহাদুরি

তমা গ্রুপ এন্ড কন্সট্রাকশন লিমিটেডকে ৩৭টি পাহাড় কাটার অনুমতি দিয়েছিল পরিবেশ অধিদফতর। এ সুযোগে তারা পাহাড় কেটেছে ৫৭টি। দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তমা গ্রুপ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার রাঙ্গাপাহাড় এলাকায় এসব অতিরিক্ত পাহাড় কেটেছে।

অতিরিক্ত পাহাড় কাটার দায়ের তমা গ্রুপ এন্ড কন্সট্রাকশন লিমিটেডকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদফতর। এদিকে এই জরিমানাকে ‘অন্যায়’ বলে দাবি করেছে তমা গ্রুপ কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কার্যালয়ে শুনানি শেষে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ করতে গিয়ে উপজেলার রাঙ্গাপাহাড় এলাকায় দুই কোটি ২২ লাখ ঘনফুট অতিরিক্ত পাহাড় কাটার দায়ে এ জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন বলেন, ‘দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের জন্য লোহাগাড়ার রাঙ্গাপাহাড় এলাকায় ৩৭টি পাহাড় কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তারা অতিরিক্ত আরও ২০টি পাহাড় কাটে ওই প্রতিষ্ঠানটি। আমরা তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে তাদের গত নভেম্বরে শুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশনা দিই। শুনানি শেষে তমা গ্রুপ, রেললাইন প্রজেক্টের পিডি এবং তমা গ্রুপের সাব ঠিকাদার মেসার্স হাসান ইন্টান্যাশনালকে আমরা ৫০ কোটি টাকার জরিমানা করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রেললাইনের নির্মাণের জন্য যে পাহাড়গুলো কাটা হয়েছে সেগুলোর জন্য জরিমানা করিনি। অনুমোদনের বাইরে পাহাড় কাটার জন্যই তাদের জরিমানা করা হয়েছে।’

শুনানির সময়ে উপস্থিত ছিলেন তমা গ্রুপের পক্ষে সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক হাতেম আলী মজুমদার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক সেলিনা আক্তার ও সহকারী পরিচালক শ্রীরূপ মজুমদার।

এই বিষয়ে তমা গ্রুপের কক্সবাজার প্রজেক্ট ডিরেক্টর বিমল শাহ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আসলে ওনারা না জেনে না শুনে অন্যায়ভাবে জরিমানা করে বাজে পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। আমরা এটা নিয়ে আইনি প্রক্রিয়াতে যাব। আমাদেরকে যতটুকু অনুমতি দিয়েছিলেন আমরা ঠিক কতটুকু কেটে আমাদের প্রজেক্টের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের একবার একটু ভুল হয়েছিলো পাহাড় কাটার সময় ড্রাইভার ভুলবত একটু ভিতরে চলে গিয়েছিল। এটা নিয়ে এসিল্যান্ডের কাছে অভিযোগ করা হলে তিনি জরিমানা করেছিলেন আমাদের। এরপর আমরা সেটা পুনরায় ভরাট করে দিয়েছিলাম। তারপর পরিবেশ অধিদফতর থেকে কয়েক দফা লোকজন এসে সেটা দেখে গেছেন। কিন্তু তারপর হঠাৎ কিছু না বলে ৫০ কোটি টাকার জরিমানা করে দিলেন। আমরা যে অতিরিক্ত কোনো পাহাড় কাটিনি সেটা আমরা প্রমাণ দিব আইনি ভাবেই।’

উল্লেখ, ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা গ্রুপ এন্ড কন্সট্রাকশন লিমিটেড দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ও রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হবে।

আরএ/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!