চট্টগ্রামের ১৪ প্রতিষ্ঠান পেল সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতার পুরস্কার

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিতে হলে ভ্যাট দেওয়ার কোন বিকল্প নেই। দেশের সুনাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের নিজ দায়িত্ব পালন করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রত্যেক নাগরিক ইতিবাচক মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে শরীক হতে হবে। রাষ্ট্র নিজে কোন ব্যবসা করে না। দেশ আমাদের, শহরটি আমাদের, সুতরাং আমাদের উপরই নির্ভর করবে এ শহর কতটুকু এগিয়ে যাবে।’

চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে জাতীয় ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে জাতীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কক্সবাজারের ওশান প্যারাডাইস, খাগড়াছড়ির ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ ও অরণ্য বিলাস, পটিয়ার বনফুল অ্যান্ড কোম্পানি, ষোলশহরের ব্র্যাক আড়ং, সীতাকুণ্ডের চৌধুরী টি ওয়্যার হাউস ও বান্দরবান সদরের হোটেল হিলভিউ রেসিডেন্সিয়াল এবং স্থানীয় পর্যায়ে আবুল খায়ের স্টিল মেল্টিং লিমিটেড, কর্ণফুলীর সুপার পেট্রো কেমিক্যাল লিমিটেড, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, এনঅ্যান্ডএনটি ওয়্যারহাউস, এমএম ইস্পাহানি লিমিটেড ও উত্তরা মোটরস লিমিটেডকে পুরস্কৃত করা হয়। বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে।

অনুষ্ঠানে ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘ভোক্তারা ভ্যাট প্রদান করেন। তাই ভোক্তা তথা জনগণকে সচেতন করার মাধ্যমেই রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উদযাপনের উদ্দেশ্য হলো ভ্যাট প্রদানে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করা এবং ভ্যাটকে জনগণের কাছে সহজবোধ্য করা। এর মাধ্যমে ভ্যাট কর্মকর্তাদের সাথে সম্মানিত করদাতাদের সুসম্পর্ক স্থাপন, ভোক্তাদের ভ্যাট প্রদানে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি এবং করদাতা-বান্ধব ও ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই।’

চট্টগ্রামের ১৪ প্রতিষ্ঠান পেল সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতার পুরস্কার 1

তিনি বলেন, ‘২০১৯-২০২০ অর্থ-বছর থেকে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ কার্যকর হয়েছে। এই আইনের বিশেষত্ব হলো অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা নিবন্ধন গ্রহণ, রিটার্ন দাখিল, কর পরিশোধ, রিফান্ড ও প্রত্যার্পণ সমন্বয় ইত্যাদি করতে পারবে। এতে ব্যবসার সময় ও খরচ উভয়ই কমবে।’

রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মারগুব আহমেদ বলেন, ‘গার্মেন্টস খাতে প্রতি বছর ৬০ বিলিয়ন ডলার আয় হয়। গার্মেন্টসকে বন্ড সুবিধায় আনার ফলে এ রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হচ্ছে। ’

অনুষ্ঠানে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক সময় ভ্যাট আইন, আইনের ধারা-উপধারা আমরা বুঝতে পারি না। তাই আমরা যা ভ্যাট ধার্য্য করি তাতে অসন্তুষ্ট হয়ে ব্যবসায়ীরা হাইকোর্টে মামলা করেন। এ বিষয়ে আমাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে বন্দরের ভ্যাট আদায় বৃদ্ধি পাবে।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী বলেন, ‘আগে যখন ভ্যাট ছিল না তখন দেশে উন্নয়নও ছিল না। ট্যাক্স ও ভ্যাটের টাকায় পদ্মা সেতু হচ্ছে। ভ্যাটকেও অটোমেশনে নিয়ে আসা প্রয়োজন।’

নারী উদ্যোক্তা রুহি মোস্তফা বলেন, ‘সরকার চায় নারীরা স্বাবলম্বী হোক। আমি যা বিক্রি করছি সব তো লাভ নয়। আমি উপকরণ কিনতে ভ্যাট দিচ্ছি, বিক্রির ওপর ভ্যাট দিচ্ছি। ভ্যাট সম্পর্কে জানার জন্য নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট মোহাম্মদ এনামুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহা-পরিচালক এ.কে.এম. মাহবুবুর রহমান, কি-নোট উপস্থাপন করেন কাস্টম কমিশনার ফখরুল আলম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মারগুব আহমেদ, কর কমিশনার ইকবাল হোসেন, কর কমিশনার (অঞ্চল-৩) সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ, আবুল কালাম কায়কোবাদ, মুনতাসির বিল্লাহ, বন্ড কমিশনার মাহবুবুজ্জামান, চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবিদা মোস্তফা।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও বন্ড কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার তাহমিনা আক্তার পলি। এর আগে ভ্যাট দিবস ও সপ্তাহ উপলক্ষে আগ্রাবাদের সিজিও ভবন থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়।

এএস/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!