চট্টগ্রামের ১০ স্পটে করোনার টিকা মিলবে নিবন্ধন ছাড়াই, সুযোগ ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত

এক লাখ টিকা পাবে চট্টগ্রামের ভাসমান মানুষ

নিবন্ধন বা কাগজপত্র ছাড়াই চট্টগ্রামে করোনার প্রথম ডোজ টিকা পাবেন ভাসমান ও ছিন্নমূল ১ লাখ মানুষ। ভাসমান এবং ছিন্নমূল— যাদের স্থায়ী কোনো আবাস বা মোবাইল নাম্বার নেই, তাদের সকলকেই দেওয়া হবে বেলজিয়ামে উৎপাদিত জানসেনের টিকা। ২৬ ফেব্রুয়ারির পর থেকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর থেকে শুধুই দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে নগরীর পাঁচটি স্পটে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হল— চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এলাকা (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনের সম্মুখে), সাগরিকা সিডিএ মার্কেটের সম্মুখে, সিআরবি (বিআরটিসি ফলমন্ডি), অক্সিজেন মোড় (ট্রাক স্ট্যান্ড) এবং চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ (চর চাক্তাই স্কুল মাঠ)।

দ্বিতীয় ধাপে করোনার টিকা দেওয়া হবে নগরীর আরও পাঁচটি স্পটে। এগুলো হচ্ছে— কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা (নোমান কলেজ), ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশন,
বহদ্দারহাট বাস টর্মিনাল, আকবরশাহ্ (বাজারের মুখে) এবং পতেঙ্গার কাঠগড় বাসস্ট্যান্ড (সৈকত কমিউনিটি সেন্টারের সামনে)।

দিন সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে এ টিকাদান কার্যক্রমে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর। উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপপরিচালক ডা. সাখাওয়াত উল্ল্যাহ, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এবং চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী।

জানা গেছে, নিবন্ধন বা জন্ম নিবন্ধন সনদ কিংবা এনআইডি ছাড়াই বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা টিকার এই প্রথম ডোজ নেওয়া যাবে।

টিকা নেওয়ার সময় টিকা গ্রহণকারীকে একটি কার্ড দেওয়া হবে। এই কার্ড টিকা নেওয়ার প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে। পরবর্তীতে কেউ চাইলে এই কার্ডের তথ্য দিয়ে সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশনও করতে পারবেন।

ষষ্ঠ টিকা হিসেবে বাংলাদেশে ব্যবহারের অনুমোদন পায় আমেরিকান কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের বেলজিয়ান অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান জানসেন ফার্মাসিউটিক্যালসের উৎপাদিত ‘জানসেন’ টিকা।

চট্টগ্রাম মহানগরে ভাসমান ও ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর যাদের জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র নেই এমন ১ লাখ মানুষকে জানসেনের এই টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া এই টিকা পাবেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিক, জাহাজ-লঞ্চের কর্মী, বেদেসহ ভাসমান জনগোষ্ঠীর লোক।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, প্রতিদিন ৩ হাজার মানুষ জানসেনের এই টিকার এক ডোজ পাবেন।

এদিকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধন ছাড়া প্রথম ডোজের টিকা দেয়ার জন্য সব হাসপাতালকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে— একথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) টিকা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. শামসুল হক বলেন, ‘টিকা পর্যাপ্ত আছে, কিন্তু প্রথম ডোজের কার্যক্রমের জন্য সময় বেঁধে দিতে চাই। সবাইকে অনুরোধ করছি টিকা নিন, কারণ আমরা প্রথম ডোজের কার্যক্রম বন্ধ করে দেব। ২৬ তারিখের মধ্যে সব মানুষকে প্রথম ডোজ দিতে চাই। সেদিন এক কোটির বেশি মানুষ এলেও আমরা টিকা দিতে পারব। সবাই নিজ নিজ বাড়ির কাছের কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিন।’

তিনি বলেন, যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কিন্তু মেসেজ পাননি, তারা মেসেজের অপেক্ষা না করে নিকটতম কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে পারবেন। সব কেন্দ্রকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মেসেজ না থাকলেও টিকা দিতে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!