চট্টগ্রামের হাইটেক পার্কে জায়গা-জমি পেল ২১ প্রতিষ্ঠান, ঢাকা ও খুলনায় ৫

চট্টগ্রামসহ দেশের তিনটি হাই-টেক পার্কে ২১টি প্রতিষ্ঠানকে জমি ও স্থান বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে চট্টগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কেই ১৬টি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে জমি ও স্থান। অন্যদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে চারটি এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারে একটি প্রতিষ্ঠানকে জমি ও স্থান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জমি ও স্পেস হস্তান্তরের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এই চুক্তির আওতায় তিনটি পার্কে মোট ২১টি কোম্পানি বিনিয়োগের সুযোগ পেল।

চট্টগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে যেসব প্রতিষ্ঠানকে রেডি স্পেস বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে— জেনেক্স, হ্যালো ওয়ার্ল্ড, এক্সসিড বাংলাদেশ, ইঞ্জেনিয়াম কনসাল্টিং, এডব্লিউ কমিউনিকেশন, কাজী কমিউনিকেশনস, আমরা নেটওয়ার্কস, এক্সপোনেন্ট ইনফো সিস্টেম, ট্রাস্ট গ্লোবাল, ইমতিয়াজ এন্টারপ্রাইজ, রিয়েল আইটি, সংযোগ ইউ ডটকম, কোডার্স ল্যাব, প্ল্যান-বি সল্যুশন, কে এ আর কমিউনিকেশন এবং বাংলা পাজল। এই ১৬টি প্রতিষ্ঠান সেখানে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টসহ আইটির বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করবে।

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটে বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আইটি পার্কের ফলক উন্মোচন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

অন্যদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে বাংলাদেশ কার্ড লিমিটেড ৪ নম্বর ব্লকে ৭ একর জায়গা বরাদ্দ পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সেখানে স্মার্ট কার্ড, বিশেষ নিরাপত্তা পণ্য, এটিএম মেশিন উৎপাদন ও এসেম্বল করার লক্ষ্যে প্রায় ৮৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এশিয়া কম্পিউটার বাজার লিমিটেডের অনুকূলে ৬ নম্বর ব্লকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ একর জমি, সেখানে তারা কম্পিউটার, স্মার্ট টিভি, নেটওয়ার্কিং ডিভাইস, সিকুরিটি সার্ভেইল্যান্স এবং স্পিকার এসেম্বল ও উৎপাদন করবে। প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ৩৫ কোটি টাকা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা ৬০০ জন। সেলট্রোন ইলেক্ট্রো ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড ৪ নম্বর ব্লকে বরাদ্দ পেয়েছে দশমিক ৫ একর জমি যেখানে তারা রেডিও সেট এবং এফএম ট্রান্সসিভার উৎপাদন ও এসেম্বল করবে। প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ২৫ কোটি টাকা এবং প্রস্তাবিত কর্মসংস্থান ১৫০ জন। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সিকে ৪ নম্বর ব্লকে ১৪ দশমিক ৩৩ একর জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে, সেখানে তারা অফিস ভবন ও ডরমিটরি স্থাপন করবে।

এছাড়া খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন এন্ড ট্রেনিং সেন্টারে হ্যামকো সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি আর অ্যান্ড ডি সেন্টারকে স্পেসে বরাদ্দ দেওয়া হয়। একই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগকারীদের অর্থায়ন করার লক্ষ্যে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের সাথে পৃথক একটি সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতার আওতায় হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীদের সহজ শর্তে ঋণ দেবে ব্র্যাক ব্যাংক।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, দেশে এই মুহূর্তে ১০টি হাই-টেক পার্ক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত, এরমধ্যে সম্প্রতি তিনটি পার্ক প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে উদ্বোধন করেছেন। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে উৎপাদিত পণ্য বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, পার্ক তিনটিতে অন্তত ১০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ ও ২৫০০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখন পর্যন্ত হাই-টেক পার্কসমূহে দেশের হাই-টেক পার্কগুলোতে ১৭৫টি প্রতিষ্ঠানকে স্পেস ও প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ১৪৮টি স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিকে বিনামূল্যে স্পেস/কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!