চট্টগ্রামের সড়কে যাত্রীবেশে নারী হাইজ্যাকারের দল, বমির ছলে কৌশলী ছিনতাই

যাত্রীবেশে গাড়িতে উঠে অন্য যাত্রীর গায়ের ওপর বমি করার অভিনয় করে টার্গেট করা যাত্রীকে প্রথমে অপ্রস্তুত করে ফেলে তারা। এরপর তার গয়নাগাটি ছিনতাই করা হয় অভিনব কৌশলে। এবারই প্রথম তাদের কৌশল আর খাটলো না। তিন ছিনতাইকারীকে স্বর্ণসহ পুলিশে দিল সাধারণ যাত্রীরা। এই তিন ছিনতাইকারীই নারী। এ সময় আরও দুই নারী ছিনতাইকারী পালিয়েছে।

শনিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টায় চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার ডায়াবেটিক হসপিটালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় তরুণ চৌধুরী নামের এক নারী খুলশী রেলক্রসিং থেকে এ কে খান যাওয়ার জন্য মাহিন্দ্রা টেম্পোতে উঠেন। তাকে টার্গেট করে পাঁচজন নারী ছিনতাইকারী তার গা ঘেঁষে একটি টেম্পোতে বসেন। একপর্যায়ে তাদের একজন তরুণ চৌধুরীর গায়ে বমি করার অভিনয় করেন। তরুণ চৌধুরী এতে অপ্রস্তুত হয়ে পড়লে ছিনতাইকারীদের একজন মুহূর্তেই তার গলার হার খুলে নেয়।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওসি শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘গাড়ির ভেতরে জায়গা না হওয়ায় তরু চৌধুরীর ভাগ্নে হারাধন দত্ত গাড়িচালকের পাশে বসে ছিলেন। গাড়িচালক গাড়ির লুকিং গ্লাসে তরু চৌধুরীর গলার হার খোলার দৃশ্য দেখে ভাগ্নে হারাধন দত্তকে জানায়। একপর্যায়ে গাড়ি থামলে ছিনতাইকারীদের সবাই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন হারাধন দত্ত স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিন ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন। পরে তার এক আত্মীয় আমাদের খবর দেন। তাৎক্ষণিক আমাদের টহল টিম গিয়ে ওই তিন নারী ছিনতাইকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

আটককৃত তিন নারী ছিনতাইকারী হলেন রুবিনা, শাহানা বেগম ও রিপা আক্তার। রুবিনার বিরুদ্ধে নগরীর কোতোয়ালী থানায় দুটি এবং রাউজান থানায় একটি মামলা রয়েছে। শাহানা বেগমের বিরুদ্ধে কুমিল্লার হোমনা থানায় একটি মামলা রয়েছে। ধরা পড়া তিন ছিনতাইকারীর বাড়িই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আড়াই মাস বয়সী শিশুকে টিকা দিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছিলেন খাদিজা আক্তার নামের এক নারী। পৌনে একটার দিকে আন্দরকিল্লার ‘মল টোয়েন্টিফোর’ শপিং কমপ্লেক্সের সামনে আইল্যান্ডে পাশে পৌঁছাতেই সাত নারী তাকে পথচারীর বেশে ঘিরে ধরেন। এর একপর্যায়ে চোখের পলকে টান মেরে খাদিজা আক্তারের হাতব্যাগটি নিয়ে যায় তারা।

ওই ঘটনায় আটক হওয়া সাত নারী ছিনতাইকারীর মধ্যে তিনজনের বাড়িও ছিল ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে। এরা হলেন রিমা আকতার (২৫), বিলকিস বেগম (২৫) এবং রুমা আকতার (২০)। বাকি চারজনের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে। এরা হলেন রহিদা বেগম (২৫), ববিতা বেগম (৩৫), পাপিয়া (৪০) এবং সাথী আক্তার শান্তা (২৮)।

এফএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!