চট্টগ্রামের সুজনের বিরুদ্ধে ঢাকার হোটেলে মারামারির অভিযোগ গেল শাহবাগ থানায়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজনের বিরুদ্ধে ঢাকার শাহবাগ থানায় ‘হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার’ অভিযোগ করেছেন একই কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা একজন।

শনিবার (২১ মে) মুহাম্মদ ইলিয়াস বাদী হয়ে ঢাকার শাহাবাগ থানায় সুজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন। বাদী ইলিয়াস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের টিপু-সুজন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০ মে ভোর সাড়ে ৩টা ও বিকাল সাড়ে ৪টায় দুই দফায় শাহবাগ থানার তোপখানা রোডের আবাসিক হোটেল রয়েল প্যালেসে দু’দফায় সুজনের নেতৃত্বে ইলিয়াসের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

ফজলে রাব্বী সুজন মহানগর যুবলীগের আসন্ন সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। সম্মেলনে নিজের প্রার্থীতাকেন্দ্রিক কার্যক্রমে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন তিনি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিকেন্দ্রিক কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন ইলিয়াস। দুজনই একই হোটেলে উঠেন। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে তারা দু’জনই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এই বিষয়ে বাদী ইলিয়াস চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি শুক্রবার (২০ মে) আমার কাজে ঢাকায় গিয়ে হোটেল রয়েল প্যালেসে উঠি। সেদিন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে সোহেল, নোমানসহ ৫-৬ জন এসে আমার রুমের দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে এবং গালাগাল করতে থাকে। আমি ভয় পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা দরজার বাইরে থাকা ছেলেগুলোকে নিয়ে যায়। কিন্তু পরের দিন যখন আমি হোটেলের দ্বিতীয় তলায় দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম তখন সুজনসহ ৭-৮ জন এসে আমাকে মারধর করে আহত করে এবং আমার দুইটি মোবাইল ভেঙে ফেলে। আমি পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থানায় অভিযোগ করি।’

তবে ইলিয়াসের অভিযোগটি মিথ্যা দাবি করে সুজন বলেন, ‘ইলিয়াস আমার কর্মী। সে আমার পলিটিক্যাল ছোটভাই। যদি কোনো ছোট ভাই বেয়াদবি করে তবে সেক্ষেত্রে বড় ভাই হিসেবে আমি তাকে শাসন করতেই পারি। তবে সুজন শুধুই শাসন করেছেন, কোনো ধরনের মারধর বা মোবাইল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি বলে জানান।

মধ্যরাতে ইলিয়াসের হোটেল রুমের দরজাতে ধাক্কাধাক্কির বিষয়ে সুজন বলেন, ‘আমি তার রুমে যাইনি এবং সে যেই হোটেলে উঠেছে আমিও সেই একই হোটেলে উঠি। তাকে দেখে আমার ছোট ভাইয়রা তাদের বন্ধু ইলিয়াসের সঙ্গে দেখা করতে যায়, কিন্তু সেতো দরজা খুলেনি।’

সুজন আরও বলেন, ‘আমি জানতাম না যে সে সামন্য একটা বিষয়ে থানায় অভিযোগ করবে। আর সামনে যুবলীগের কমিটি হবে, তাই তাকে দিয়ে হয়তো কেউ এসব করাচ্ছে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে সুজনের সঙ্গে ঝামেলা চলছে–ইলিয়াসের করা এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে সুজন বলেন, ‘ইলিয়াসের যে সাংগঠনিক সম্পাদক পদ সেটাও তো তাকে আমি দিয়েছি। আর আমার সঙ্গে কেন তার ঝামেলা হবে কমিটি নিয়ে? আমিতো এখন আর চবির রাজনীতি করি না। আর চবির কমিটিতে কে আসবে সেটা আমাদের নেতা মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ঠিক করবেন। এটা নিয়ে আমার সঙ্গে তো কোনো দ্বন্দ্ব থাকার কথা না। আর ইলিয়াস যে মোবাইল ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ করেছে এমন কোনো প্রমাণ ভিডিও ফুটেজে নেই। বরং সেই আমাকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতি করার জন্য এমন করছে।’

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!