চট্টগ্রামের সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য খালে, এবার মারা গেল ১৩ মহিষ
ক্ষোভে মৃত মহিষ গেটের সামনে রেখে আসেন ক্ষতিগ্রস্তরা
চট্টগ্রামের আনোয়ারার সার কারখানার বর্জ্য মেশানো দূষিত পানি পান করে আবারও ১৩টি মহিষ মারা গেছে।
রোববার (২৪ এপ্রিল) চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির (সিইউএফএল) নির্গত গ্যাসের বর্জ্য গোবাদিয়া খালের প্রবেশ করায় পানি বিষাক্ত হয়ে ওঠে। সেই পানি খেয়ে মাঝিরচরে মারা যায় মহিষগুলো।
এর আগে গত ১৪ এপ্রিল বিকালে ১২টি মহিষ বর্জ্য মেশানো দূষিত পানি পান করে মারা যায়। এছাড়া গত বছর একই কারণে একসঙ্গে মারা যায় আটটি মহিষ।
মহিষের মালিকদের দাবি, মারা যাওয়া মহিষগুলোর বাজার মূল্য প্রায় ২২ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মোহাম্মদ ইছহাক, নুর মোহাম্মদ ও মোহাম্মদ ইলিয়াস।
কারখানার বিষাক্ত পানি স্থানীয়দের অবগত না করে খালে ছাড়ার কারণে কয়েকদিন পরপর এমন ঘটনা ঘটছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সিইউএফএলের নির্গত গ্যাসের বর্জ্য গোবাদিয়া খালে প্রবেশ করায় বিষাক্ত হয়ে পড়েছে খালের পানি। বিভিন্ন সময়ে এ খালের পানি খেয়ে গবাদি পশুর মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। খালের আশপাশে স্থানীয়দের গরু-ছাগল ও মহিষ বিচরণ করে। পূর্বে কারখানার বিষাক্ত গ্যাসের পানি ছাড়লে আগে এলাকায় মাইকিং করা হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কোনো ধরনের মাইকিং ছাড়াই কারখানার বিষাক্ত পানি ছাড়ে কর্তৃপক্ষ। এতে স্থানীয়দের গবাদি গরু-মহিষ মারা পড়ছে বার বার।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় বারশত ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সিইউএফএল থেকে নির্গত গ্যাসের বিষাক্ত বর্জ্য গোবাদিয়া খালে ফেলে। সে খালের পানি গবাদিপশু পান করলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, একের পর এক মহিষ মারা গেলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেননি। ক্ষতিপূরণের জন্য মৃত মহিষগুলো নিয়ে ক্ষোভে কারখানার ফটকের সামনে রেখে অবস্থান নেয় ক্ষতিগ্রস্তরা।
এদিকে দুপুরে ঘটনাস্থল পরির্দশনে আসেন সিইউএফএলের ল্যাবরেটেরির কর্মকর্তারা। মহিষের মৃত্যুর ঘটনার পর খালের পানি সংরক্ষণ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন বলেও জানা গেছে।
জানতে চাইলে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। প্রাথমিকভাবে পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।’
ডিজে