চট্টগ্রামের সবজি বিক্রেতার করোনা কানেকশনে ঝুঁকির মুখে যারা

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামের অলংকার এলাকার আবদুল আলীর হাট বা জোলারহাটের যে সবজি বিক্রেতা এখন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে, আক্রান্ত হওয়ার পর তার সংস্পর্শে এসেছিলেন অনেকেই। নিজ পরিবারের লোক ছাড়াও বাইরেরও অনেকে তার সংস্পর্শ পেয়েছেন। সিভিল সার্জনের কার্যালয় ছাড়াও নগরীর আকবর শাহ থানার পুলিশ এই ব্যক্তিদের শনাক্ত করার কাজ শুরু করেছে গত রাত থেকেই। শুক্রবার (১০ এপ্রিল) রাতে আকবরশাহ থানাধীন ইস্পাহানী গোলপাহাড় এলাকায় ওই ব্যক্তির বাসা লকডাউন করে দেওয়া হয়।

পুলিশ ধারণা করছে, কাঁচাবাজারের ভিড় থেকে ওই সবজি বিক্রেতা করোনাভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণের শিকার হতে পারেন।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানিয়েছেন, তার সঙ্গে যাদের যোগাযোগ ছিল তাদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদেরকেও হোম কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হবে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির ২৮ বছর বয়সী ছোট ভাই চাকরি করেন চট্টগ্রামের ইস্পাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমে। বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) করোনায় আক্রান্ত বড় ভাইকে ফৌজদারহাটের ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান বিএসআরএমে কর্মরত ওই ছোট ভাই। ভাইদের সঙ্গে আকবরশাহ থানাধীন ইস্পাহানী গোলপাহাড় এলাকার বাসায় তিনিও থাকেন একইসঙ্গে। এমন অবস্থায় বিএসআরএমের কারখানায় ওই ভাইয়ের সহকর্মীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে নেওয়ার বিষয়ে আকবরশাহ থানার পুলিশ বিএসআরএম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শুক্রবার (১০ এপ্রিল) রাতেই আলোচনায় বসে। তবে বৈঠকের ফলাফল শনিবার সকাল পর্যন্ত জানা যায়নি। জানা গেছে, সরকারি সাধারণ ছুটি থাকলেও বিএসআরএমের কারখানা খোলাই ছিল বরাবর। একটি সূত্র জানায়, সর্বশেষ বৃহস্পতিবারও খোলা ছিল বিএসআরএমের কারখানা।

জানা গেছে, নগরীর আকবরশাহ এলাকার ইস্পাহানি গোলপাহাড়ের বাসিন্দা ওই সবজি বিক্রেতার জ্বর ওঠে মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল)। এরপর তার মধ্যে কাশির লক্ষণ দেখা যায়। এ সময় তাকে এলাকার একজন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ক্রমেই করোনাভাইরাসের উপসর্গ সুস্পষ্ট হয়ে উঠলে বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) বেলা ২টায় তাকে ফৌজদারহাটের বিশেষায়িত হাসপাতাল বিআইটিআইডিতে নিয়ে যাওয়া হয় রিকশাযোগে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট ভাই। বিআইটিআইডিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শুক্রবার (১০ এপ্রিল) ওই সবজি বিক্রেতার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়।

যোগাযোগ-সূত্র খুঁজে জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত ৩৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির এক সহকর্মী থাকেন পাহাড়তলী আল আমিন হাসপাতালের পাশে। আবার যে রিকশাচালক তাকে ফৌজদারহাটে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাকেও এখন আকবরশাহ থানার পুলিশ খুঁজছে।

এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই সবজি বিক্রেতার পরিবারের যেসব সদস্যকে ইতিমধ্যে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ রাখা হয়েছে, তারা হলেন ওই ব্যক্তির বাবা ও মা, স্ত্রী, ৪ বছর বয়সী ছেলে, স্ত্রীসহ বড় ভাই, মেজ ভাই ও ছোট ভাই। তার সবাই সেমি পাকা দুটি ঘরে একইসঙ্গে বসবাস করেন। ওই ব্যক্তির ৮ বছর বয়সী আরেক ছেলে থাকলেও সে মামার বাড়িতে থাকে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!