চট্টগ্রামের রামপুরে চাঁদাবাজি জেরে যুবক খুন, নেপথ্যে ‘খোকন’ অনুসারীরা

চট্টগ্রাম নগরের ২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডের খোকন বাহিনীর ছুরিকাঘাতে আজাদুর রহমান (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (২৮ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নগরের পাহাড়তলী থানার নতুন বাজার বিশ্বরোডের মুখে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আজাদুর রহমান একই এলাকার নাজির বাড়ীর মো. লাডু ইব্রাহীমের ছেলে।

নিহতের বড় ভাই মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বাড়ির গেটে এক কিশোর প্রস্রাব করায় তাকে শাসন করেছিলাম। সে ওয়ার্ড কাউন্সিলর লিটনের ভাই আব্দুল মান্নান খোকনের অনুসারী আবুল হাসনাত রাজু, ওসমানসহ আরো কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে থাকা আমার ভাই আজাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় তারা আজাদকে পেটে চুরি দিয়ে আঘাত করে।’

ছুরিকাঘাতের পর আজাদকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এতে আজাদ বলেন, ‘রাজু, ওসমানসহ আরো কয়েকজন মিলে তার পেটে ছুরিকাঘাত করেছে।’

চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ‘ছুরিকাঘাতের ফলে আজাদের পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে। যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার আগেই তিনি মারা গেছেন।’

নিহত আজাদের স্ত্রী বলেন, ‘গত দুই মাস আগে চাঁদাবাজির জের ধরে আবুল হাসনাত রাজু, ওসমান, ফয়সাল, হোসেনদের সঙ্গে আজাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় এলাকার মুরুব্বিরা ২৫ নম্বর ওয়ার্ড ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে কারা চাঁদা নিবে তা নির্ধারণ করে দেন। প্রতি ভ্যানগাড়ি থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা চাঁদাবাজি করতে বিচার শালিশও হয় এ এলাকায়। এই ঘটনার জের ধরেই আজাদকে খুন করেছে আব্দুস সবুর লিটনের ভাই খোকনের পালিত গুন্ডাবাহিনী।’

এ বিষয়ে পাহাড়তলী থানার এসআই হারেজ মোহাম্মদ বলেন, ‘আজাদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ছুরিকাঘাতে মারা গেছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। মামলার দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার সাথে কারা জড়িত তা তদন্ত সাপেক্ষে জানানো যাবে।’

এদিকে এলাকাবাসী বলছে, ‘২৫ নম্বর রামপুর ওয়ার্ডে খোকন মূলতই কিশোর অপরাধীদের নেতৃত্ব দেন। তবে প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এলাকার কেউ মুখ খুলে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। একনকি থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে পুলিশের উল্টো হয়রানির ভয়েও অনেকে নীরব থাকছে। তাদের চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় আজাদের মত কর্মঠ ও সাধারণ জীবন যাপন করা মানুষকে খুন করা হয়। খুনিরা খোকনের সঙ্গে দিনরাত এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়।’

জানা গেছে, আজাদুর রহমান দুই সন্তানের জনক। প্রভাবশালী মহলের নেতৃত্বে এ নৈশপ্রহরী খুন হয়েছেন।

এদিকে বেলা ১২টার দিকে আজাদুর রহমানের পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজন সড়ক অবরোধ করে বিচারের দাবি জানান। এ সময় তারা আব্দুল মান্নান খোকনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলে শাস্তির দাবি তোলেন। তাদের সড়ক অবরোধে আশপাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে ক্ষিপ্ত এলাকাবাসীকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে জানতে আব্দুল মান্নান খোকনের মুঠোফোনে একাধিক চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি

আরএস/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!