চট্টগ্রামের ভোটে জোড়া খুনে ৭২ ঘন্টায়ও গ্রেপ্তার নেই কেউ

একটি কাটা রাইফেল ‘উদ্ধার’ই একমাত্র সাফল্য

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিন বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত নির্বাচনী সহিংসতায় দুই জন প্রাণ হারানোর ৭২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনো আসামিকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর মধ্যে আমবাগান এলাকায় আলাউদ্দিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে খুলশী থানা পুলিশ একটি অস্ত্র উদ্ধার করলেও সেটি নিয়েও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি পুলিশ।

এছাড়া এই হত্যামামলাটি রেলওয়ে থানায় এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি খুলশী থানায় উদ্ধার হওয়ায় মামলার তদন্তে নতুন কোনো জটিলতা তৈরি হয় কিনা এমন প্রশ্নও উঠছে স্থানীয় পর্যায় থেকে। যদিও পুলিশ বলছে, অস্ত্রটি সম্পর্কে এখনও তদন্ত করছে তারা।

তবে দুটি ভিন্ন থানায় হত্যা মামলা ও অস্ত্র উদ্ধার হওয়া— এই মামলার তদন্তে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।

একটি কাটা রাইফেল ‘উদ্ধার’ই একমাত্র সাফল্য
একটি কাটা রাইফেল ‘উদ্ধার’ই একমাত্র সাফল্য

শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলের পাশের একটি চায়ের দোকান থেকে দোকানদারের দেওয়া তথ্যে একটি কাটা রাইফেল উদ্ধার করে খুলশী থানা পুলিশ। তবে হত্যাকাণ্ডের এলাকা রেলওয়ে থানাধীন হওয়ায় আলাউদ্দিন হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানায়।

উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটির বিষয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে— চট্টগ্রাম প্রতিদিনের এমন প্রশ্নের জবাবে সিএমপির উপ কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। এটা শনাক্ত করার চেষ্টা করছি, অস্ত্রটি কার? এটি জানা গেলে আমরা বাকি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’

চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব হোসেন বলেন, ‘অস্ত্রটা খুলশী থানা এলাকায় পাওয়া গেছে। তাই উনারা উদ্ধার করছে। এখন এটা পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য পাঠাতে হবে।’

তবে এসব বিষয় মামলার তদন্তে কোনো প্রভাব ফেলবে না জানিয়ে সিএমপির উপ কমিশনার বিজয় বসাক বলেন, ‘হত্যা মামলা ও অস্ত্র উদ্ধার আলাদা থানায় হলেও আমাদের তো ‘ইন্টারনাল কানেকশান’ আছে। কালকেও রেলওয়ে থানার এসপির সাথে কথা হয়েছে আমার। আমরা এসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলেছি। এগুলো কোনো সমস্যার সৃষ্টি করবে না।’

হত্যামামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ঘটনাস্থলের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন কি-না কিংবা এটি আলামত হিসেবে ব্যবহার করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ে থানার ওসি সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আগে এটি শনাক্ত করতে হবে অস্ত্রটি হত্যায় ব্যবহার হয়েছে কি-না। এটা শনাক্তে কাজ চলছে। আমরা খুলশী থানার সাথে এসব বিষয়ে কথা বলছি।’

অন্যদিকে চসিক নির্বাচনের দিন পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়ায় নাজিমউদ্দিন মুন্না হত্যার ঘটনায়ও এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এই হত্যামামলার একমাত্র এজাহারভুক্ত আসামি তার আপন ভাই সালাউদ্দিন কামরুল।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন পাহাড়তলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হক। মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাশেদুল হক বলেন, ‘আমরা বিভিন্নভাবে কামরুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তাকে গ্রেপ্তার করা গেলে তার সহযোগীদের বিষয়ে জানা যাবে। আমরা কাজ করছি।’

গত ২৮ জানুয়ারি নিহত মুন্নার মা জিন্নাত আরা বেগম বাদী হয়ে কামরুলের নাম উল্লেখ করে ২-৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে পাহাড়তলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এআরটি/কেএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!