চট্টগ্রামের বাজারে কাচা পেঁপে ছাড়া ৫০ টাকার নিচে সবজি নেই, মুরগিটাই কমেছে শুধু

চট্টগ্রামে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। অন্যদিকে বেড়ে গেছে ডিম, মাছ ও সবজির দাম। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন ১০৫ টাকায়। এছাড়া আগের চেয়ে একটু কমেছে মরিচ ও টমেটোর দাম। তবে সেটাও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বাজারে কাচা পেঁপে ছাড়া কোন সবজি ৫০ টাকার নিচে নেই।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহ থেকে চাল ও সবজির দাম বাড়তে থাকলেও চলতি সপ্তাহে এসে কেজিতে আরও বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় মানভেদে গত সপ্তাহেই সবজির দাম বেড়েছিল কেজিতে ১০ টাকা। অন্যদিকে চালের দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। শীতকালীন সবজির দাম তো রীতিমতো আকাশছোঁয়া।

চট্টগ্রাম নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা করে। ফলে প্রতি বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বাড়তি গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তবে খুচরা ও পাইকারি— দুই বাজারেই কমেছে পেঁয়াজের দাম। তাতেও অবশ্য স্বস্তি নেই। কারণ সবজির বাজার এখনও আগের মতোই চড়া। কোনো কোনো সবজির দাম ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই।

শুক্রবার (২ অক্টোবর) ষোলশহর কর্ণফুলী কমপ্লেক্সে কাঁচাবাজারসহ নগরের অন্যান্য বাজারের খোঁজখবর নিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রামের রেয়াজ উদ্দিন বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলু কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। আবার বাঁধাকপি, শিম, বেগুন ও শসার মতো নতুন সবজির দাম বেড়েছে নতুন করে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস ৬০০ টাকা ও খাসির মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি ১০০ টাকা, পাকিস্তানি কক ২২০ টাকা, সাদা কক ২০০ ও দেশি মুরগি ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর কর্ণফুলী মার্কেটে ছোট বেগুন ৯০ টাকা, শিম ৯০ টাকা, বড় বেগুন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি। অন্যদিকে করলা ৭০ টাকা, শসা ৭০ টাকা ও তিত করলা ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব কাঁচা সবজি গত এক সপ্তাহ ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া টমেটো ৯০ থেকে ১০০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি ওল কচু, ঝিঙ্গা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, পটল, মুলা, নেম আলু, চাল কুমড়া, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। তবে কাঁচামরিচ আগে ২০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন কেজিপ্রতি মূল্য ঠেকেছে ১৭০ টাকা।

কর্ণফুলী বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বাজারে নতুন সবজি এসেছে দেশি বেগুন, মুলা, পটল, শিম, ওল কচু, গুরা কচু। এগুলোর দাম একটু বেশি। নতুন সবজির মধ্যে ছোট আকারের বাঁধাকপিও ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুধুমাত্র কাচা পেঁপে ছাড়া ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই।’

ওই বাজারের অপর সবজি বিক্রেতা আলমগীর হোসেন জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে আরও ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে সবজির দাম। কারণ সরবরাহ কম, দামও তাই চড়া।

নগরীর মুরাদপুরের হোটেল জামানের ম্যানেজার মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, ‘সবজির দাম আর মুরগির দাম প্রায় সমান হয়ে যাচ্ছে। অথচ অন্যান্য বছর এ সময়ে নতুন সবজি পাওয়া যেত। দামও থাকতো হাতের নাগালে। এখন আলুর দামও বেড়েছে। আলু হচ্ছে আমাদের নিত্যদিনের সবজি। সেই আলু কিনতে হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে।’

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেল, পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, রসুন ৮০ টাকা, আদার কেজি ১০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগির কেজি ১০০ টাকা এবং ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন ১০৫ টাকায়।

মাছের মধ্যে রূপচাঁদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৪০০-৫৫০ টাকা, রুই ২২০-২৫০ টাকা, কাতাল ২০০-২২০ টাকা, নাইলেটিকা ১২০ টাকা, দেশি কৈ ৩০০ টাকা, খামার ১৫০ টাকা, দেশি শিং ৩৫০ টাকা, খামারের মাগুর ১৫০ টাকা, পোপা ২০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ টাকা, লইট্টা ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ওই বাজারের আড়তদার মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘পাইকারি বাজারে পেয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। কেজিতে অন্তত পাঁচ টাকা কমেছে। তবে কর্ণফুলী বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। খুচরা দোকানগুলোতেও একই দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।’

বর্তমানে খুচরা বাজারে মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, আটাশ চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারি বাজারে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা মিনিকেট চালের দাম পড়ছে ২৭৫০ থেকে ২৮০০ টাকা। অন্যদিকে আটাশ ২৪০০ টাকা ও নাজিরশাইল প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৩০০ থেকে ৩০০০ টাকায়।

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!