চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে জোড়াতালির রাস্তা, ব্যবহৃত পাথরে চলছে ঢালাই

ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের পাথর। জমি ভরাটের বালি দিয়ে চলছে নির্মাণকাজ। ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার হচ্ছে ব্যবহৃত পাথর।

চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ ৩নং ওয়ার্ডের মুরাদনগরে সড়কটির নির্মাণ কাজে এমন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নির্মাণ কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এআরএম ইঞ্জিনিয়ার্স-কিউসি (জেবি)।

মাসখানেক আগে শুরু হয়েছে সড়কটির সংস্কার কাজ। প্রায় পৌনে এক কিলোমিটারের দীর্ঘ এ সড়ক সংস্কারের কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

অভিযোগ উঠেছে, ২০ ফুটের এ সড়ক ও ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে তিন নম্বর গ্রেডের পাথর ও নদীর ভরাট বালু দিয়ে। একইসঙ্গে সড়কের সিসি ঢালাইয়ের কাজও চলছে ব্যবহৃত পাথর দিয়ে।

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে জোড়াতালির রাস্তা, ব্যবহৃত পাথরে চলছে ঢালাই 1

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একটি প্যাকেজের আওতায় মোট ১০টি সড়কের সংস্কার প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এ প্রকল্পের দরপত্র আহবান করে সিটি কর্পোরেশন।

২০২০ সালের ২ জানুয়ারি দরপত্রের মাধ্যমে কাজটির ইজারা পায় এআরএম ইঞ্জিনিয়ার্স-কিউসি (জেবি)। ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি কাজটি সম্পন্ন করার কথা থাকলেও চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুর দিকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়।

এ সড়কটি ছাড়াও একই প্রকল্পের আওতায় সিটি কর্পোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ড চেয়ারম্যান বাড়ি বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রধান সড়ক, সালামত আলী সড়ক, চান্দঁগাও বাড়ি রোড, শাহ এজাবত উল্লাহ রোড, ঘাট ঘর পাকা রোড, শাহ আমানত রোড, চৌধুরী বাড়ি রোড, ভোলানাথ মনোরম স্কুল, সিদ্দিক কেরানী রোড এবং হরিপুর জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী রোড সংস্কারের কাজ চলছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিটি সড়কে কাজ চলছে নয়ছয় করে। ব্যবহার করা হচ্ছে তিন নম্বর গ্রেডের পাথর। নদীর ভরাট বালু দিয়ে কোনো মতে চলছে ড্রেন নির্মাণের কাজ। সড়কে সিসি ঢালাইয়ের পূর্ব প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন পাথরও। সম্প্রতি চলমান কাজ শেষ হওয়ার আগে বেশ কয়েকটি স্থানে ড্রেন নির্মাণের প্লাস্টার উঠে গেছে। বিষয়টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের জানালেও আমলে নেননি তারা।

এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এআরএম ইঞ্জিনয়ার্সের মালিক ছাকি বলেন, ‘সিটি কপোর্রেশনের সিডিউল অনুসারে কাজ করছি। কোনো অনিয়ম হচ্ছে না এখানে।’

জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশনের প্রকল্পের কাজটি আমি নির্বাচিত হওয়ার আগে অনুমোদন হয়েছে।’ তিনি এসব অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন প্রতিবেদককে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মুরাদনগর সড়কের চলমান প্রকল্পের উপ সহকারী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মো. শহিদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কথা বলার এখতিয়ার নেই। কাজের সমস্যা দেখলে ওপরমহলকে জানান।’

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

মুআ/এমএফও/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!