চট্টগ্রামের নারীকে ফেনী নিয়ে যুবলীগ নেতার ধর্ষণ ১০ মাস ধরে

দুই দফায় নষ্ট করা হয় গর্ভের সন্তান

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ফেনী নিয়ে গিয়ে এক নারীকে ১০ মাস আটকে রেখে দুই দফায় নষ্ট করা হয় তার গর্ভের সন্তান। বিয়ের জন্য চাপ দিলে এরপর ওই নারীকে দেওয়া হচ্ছে হত্যার হুমকি। এদিকে ওই নারীকে মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

এমন অভিযোগ উঠেছে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম ভুঁইয়া টিপুর বিরুদ্ধে। গত ১৮ জুলাই ওই নারী বাদী হয়ে বিয়ের প্রলোভনে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ এনে ফেনী মডেল থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন।

লিখিত ওই অভিযোগে দিদারুল আলম টিপু (৪০) ছাড়াও তার স্ত্রী লাভলী, হানিফ বাবুল, সবুজ প্রকাশ লাল সবুজ, সেলিম, মো. সমির ও মাসুদ রানাসহ মোট সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।

এজাহারে ওই নারী জানিয়েছেন, ‘গত বছরের ৩ জুন দিদারুল আলম টিপু আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পৌরসভার পূর্ব উকিল পাড়া পেট্টোল বাংলা কবির আহাম্মদের ভাড়া বাসায় নিয়ে এসে দীর্ঘ দুই মাস যাবত তালাবদ্ধ করে আটক করে রাখে। পরবর্তীতে আমাকে ফেনী শহরের পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টার টিপুর গাড়ীর চালক ইমনদের বাসায় নিয়ে গিয়ে ৬ মাস রাখে। এ সময় তাকে বিয়ের কথা বললে গত ১ মার্চ পেট্রোবাংলার বৃত্তিকা ভবনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আমাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় উঠে। সেখানে চার মাস আমার সাথে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক করে। এর ফলে আমি গর্ভধারণ করলে টিপু আমাকে হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়। পরীক্ষার রিপোর্টে গর্ভধারণের বিষয়টি নিশ্চিত হলে ১৪ মার্চ জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে। এরপর পুনরায় গর্ভধারণ করলে আমার অনিচ্ছায় জোরপূর্বক গত ৯ জুলাই হাসপাতালে নিয়ে আমার গর্ভের দ্বিতীয় সন্তানটিও নষ্ট করে টিপু।’

ওই নারী জানান, ‘এরপর পুনরায় তাকে আমি বিয়ের প্রস্তাব দিলে ১১ জুলাই তারিখে দিদারুল আলম টিপু (৪০), তার স্ত্রী লাভলী, মো. হানিফ বাবুল, সবুজ প্রকাশ লাল সবুজ, সেলিম, মো. সমির ও মাসুদ রানা টিপুর পরিবারের সহযোগিতায় আমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে আমি অসুস্থ অবস্থায় খালাতো বোনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। গত ১৫ জুলাই ওই বাসার তৃতীয় তলার এক ভাড়াটিয়ার ফোন কলের মাধ্যমে জানতে পারি টিপু তার সহযোগীদের সহযোগিতায় ঘরের সকল আসবাবপত্র নিয়ে যায়। বর্তমানে টিপুকে বিয়ের বিষয়ে কথা বললে সে আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।’

এদিকে টিপুর মারধরের একটি ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই নারী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘টিপু আমাকে মারধর করার সময় যে ভিডিওটি করা হয়েছে সেটা সত্য।’

তবে অভিযুক্ত দিদারুল আলম টিপু জানান, ‘আমি ওই নারীকে মারধর করিনি। সে আমি ও আমার স্ত্রীর সাথে উল্টাপাল্টা আচরণ করেছে। আমার পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি করছে ওই নারী।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!