জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে নগরের বিভিন্ন এলাকায় দেয়ালচিত্র এঁকেছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনকে নগরের ব্যস্ত সড়কের দেয়ালে নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস থেকেই এমন উদ্যোগ নিয়েছিল চসিক। বিভিন্ন মহলে সাধুবাদ পাওয়া এই চিত্রকর্মগুলো দিন দিন অযত্নে অবহেলায় মলিন থেকে মলিনতর হয়ে উঠছে।
চলতি বছরের মার্চে নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আঁকা এসব দেয়ালচিত্রের ওপর বছর না ঘুরতেই ধুলোর আস্তর জমে ঢেকে যাচ্ছে মূল ছবি। অযত্নে অবহেলায় কোনো কোনো জায়গায় আংশিক মুছেও গেছে চিত্রগুলো। ফলে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার বদলে অনেক ক্ষেত্রে বিকৃতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ ইতিহাসসচেতন নাগরিকদের।
প্রশ্ন উঠছে এই প্রকল্পটির রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালে উদ্যোক্তা সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সদিচ্ছা নিয়েও।
তবে কি দেয়ালচিত্রগুলো পরিচর্যার জন্য কোন পদক্ষেপ প্রকল্পের শুরুতে ছিল না? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় উদ্যোগ নেওয়ার সময়ে চসিকের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সাথে। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘মূলত নগরের মানুষদের, বিশেষ করে তরুণদের ইতিহাস সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলতেই এসব দেয়ালচিত্র আঁকা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এসব দেয়ালচিত্র আঁকা হয়। এগুলো আঁকার পর আমি যতদিন দায়িত্বে ছিলাম, তখন সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু আমি দায়িত্ব থেকে বিদায় নেওয়ার পর আর সেটা করা হচ্ছে না। সে সময় পরিকল্পনা বিভাগ থেকে এগুলো দেখভাল করা হতো।’
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর পরিসর অনেক কমেছে। কিন্তু এসব দেয়ালচিত্র কিংবা ভাস্কর্যগুলোর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস তরুণদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। অথচ এই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে কেমন জানি একটা উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। দেশের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্য করা হলো চসিকের পক্ষ থেকে। কিন্তু গত কয়েক মাসে এটি কাজ আর আগাচ্ছে না। হঠাৎ কেন এই উদাসীনতা সেটা আমার কাছেও একটা বিরাট রহস্য। এখানে তো কোন সংকীর্ণতা চলে না। এটা আমাদের আবেগের জায়গা।’
এসব বিষয়ে কথা বলতে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের পক্ষ থেকে চসিকের বর্তমান প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কাজী মুজাম্মেল হক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এগুলো দেখভালের জন্য আমাদের লোক আছে তো। ভাস্কর্য পাহারা দেয়ার জন্যও লোক আছে। পরিচ্ছন্নতার জন্যও লোক আছে। হয়তো তারা ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না এমনটা হতে পারে। আমি বিষয়টা দেখছি।’
এআরটি/সিপি