চট্টগ্রামের দুই হাসপাতালে হজযাত্রীদের করোনার টিকা নিয়ে রমরমা ব্যবসা

বিনামূল্যের টিকা ফার্মেসিতে দুই হাজার

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হজযাত্রীদের জন্য বরাদ্দ বিনামূল্যের করোনা টিকা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকায়। আবার অনেক সময় টিকার দাম তিন থেকে চার হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই রকম কয়েকটি অভিযোগের পোস্ট দেখা গেছে চট্টগ্রামভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপে। সেসব পোস্টে মন্তব্যও করে ক্ষোভ ঝেড়েছেন নেটিজেনরা। সেখানে অনেকে এই অনিয়ম নিয়ে বিস্তারিতও তুলে ধরেছেন।

এমএসএ মুন্না নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেলে হজযাত্রীদের দুইটি টিকা মারা হচ্ছে, সেখানে কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের কাছে হাজীদের একটি করে টিকা বরাদ্দ আছে। আর লাস্ট চারদিন ধরে টিকা সংকট। তাই বাইরে থেকে আমার বাবা-মাকে দুইটি টিকা ৯০০ করে ১৮০০ টাকা দিয়ে ফার্মেসি থেকে কিনতে হয়েছে। এরকম শত শত হজযাত্রীকে তারা টিকা কিনে আনার জন্য বাধ্য করছে। পরে মেডিকেলের নিচের ফার্মেসিতে ১০০০-১১০০ করে বিক্রি করা শুরু করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের কি সত্যিই টিকার মজুদ নাই, চারদিন ধরে নাকি টিকা ফার্মেসিতে দিয়ে ব্যবসা করছে?

কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘বাকি একটি টিকার সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও কেন হাজীদের বাইরে থেকে টিকা কিনে আনতে হবে? একই টিকা একটি মজুদ আছে আরেকটির নাই এটা কি রকম দুর্নীতি? নাকি এটাই নির্ধারিত নিয়ম?’

ইমরান সোহেল নামের একজন বলেন, ‘তারা (কর্তৃপক্ষ) মিথ্যা বলছে। তারা ফার্মেসি থেকে বিজনেস করছে।’

ইমরান আহমেদ নামের অপর একজন অভিযোগ করেন, ‘জেনারেল হাসপাতালে সৌদিপ্রবাসী ভাইদের ফাইজারের টিকা দিতে হচ্ছে টাকার বিনিময়ে, কিন্তু কেন? যিনি কাগজপত্র নিয়ে টাকা দিচ্ছেন তিনি একজন প্রবাসী ভাই। যিনি টাকা নিচ্ছেন ওনি আমাদের মত গরিবের সেবক। প্রবাসী ভাইদের জন্য ফাইজারের টিকা মাত্র ১০০০ টাকা!’

টিকা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে সাখাওয়াত তুষার নামের একজন জানান, ‘আমি একবার গিয়েছিলাম ২০৪ নম্বর রুমে। ২ হাজার টাকা চেয়েছিল। পরে বোয়ালখালী থেকে নিয়েছি ফ্রিতে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পোস্টটি আমারও চোখে পড়েছে। আমি হাসপাতালের সব স্টাফকে ডেকে মিটিং করেছি, সতর্ক করেছি। কয়েকজনকে সরিয়েও দিয়েছি। আমি বৃহস্পতিবার থেকে হাসপাতালে মাইকিং করে জানাব। হজযাত্রীদের জন্য যে ফাইজার টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হবে, তা স্বাক্ষর ছাড়া হবে না। টিকা নিতে এসে যেন কেউ দালালের খপ্পরে না পড়ে, সেটাই সবাইকে কাল থেকে মাইকিং করে জানানো হবে।’

অন্যদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা বলেন, ‘অভিযোগের বিষয় সত্য না। এ রকম হওয়ার অবকাশ নেই চট্টগ্রাম মেডিকেলে।’

আইএমই/ডিজে/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!