চট্টগ্রামের ছেলের প্রেমের টানে কলকাতার কলেজছাত্রী, প্রতারিত হয়ে ফিরছেন ভারতে

ফেসবুকে ৪ বছর প্রেম করার পর কলকাতার কলেজছাত্রী চট্টগ্রামে এসে ‘প্রতারণা’র শিকার হয়েছেন। প্রায় দুই মাস চট্টগ্রামে থাকার পর এখন ওই ছাত্রী ‘ভুল বুঝতে পেরে’ ভারতে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।

কলকাতার রানাঘাট এলাকার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু কলেজের ছাত্রী। গত ৩ ডিসেম্বর ভোমরা বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রামের অলংকার মোড় এলাকার ‘ফেসবুক বন্ধু’ সাইফুল খানের সঙ্গে দেখা করা।

প্রায় দুই মাস চট্টগ্রামে থাকার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি খুলনায় আসেন ওই ছাত্রী। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় খুলনার বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে ভিসার জন্য আবেদন করেন। রোববার ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাকে ভিসা দেওয়া হয়েছে।

প্রেমের টানে কলকাতার কলেজছাত্রী চট্টগ্রামে আসলেও তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রেমিকের সঙ্গে সব সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দিতে চান ওই ছাত্রী।

ওই ছাত্রী জানান, বাংলাদেশে এসে তিনি বড় ভুল করেছেন। ফেসবুকে ৪ বছর প্রেম করার পর এমন প্রতারণার শিকার হবেন সেটা আগে বুঝতে পারেননি।

শেষমেশ এখন ভারতে ফিরে যাওয়ার জন্য খুলনার রায়েরমহল এলাকার শেফালী সরকারের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন রানী। দু একদিনের মধ্যেই তিনি ভারতে ফিরে যাবেন।

কলকাতার ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, কলকাতা রানাঘাটের নন্দীঘাট বৃদ্ধাকূল এলাকার বাসিন্দা তিনি। তার বাবা একজন রাজমিস্ত্রি। পরিবারে বাবা-মা এবং ছোট একটি বোন আছে। সেলসম্যানের চাকরির টাকা জমিয়ে তিনি কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি পাসপোর্ট ও ভিসা করেছিলেন। প্রথমে একবার ভিসা করলেও বাংলাদেশে আসতে পারেননি।

ওই ছাত্রী জানান, চট্টগ্রামের অলংকার মোড়ের সাইফুল খানের সঙ্গে গত চার বছর ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সাইফুলের সঙ্গে দেখা করার জন্য বাড়ি থেকে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। চট্টগ্রামে সাইফুলের কাছে প্রায় দুই মাস তাদের ভাড়া বাড়িতে ছিলেন। এরপরই বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি খুলনা এসে শেফালী সরকারকে তার বিপদের সব কথা বলেন। পাশাপাশি তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ভারতে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা চান।

রায়েরমহলের বাসিন্দা শেফালী সরকার বলেন, গত ৩ ডিসেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ভোমরা বন্দরের বিনেরপোতা থেকে আমরা একসঙ্গে সাতক্ষীরায় আসি। তিনি চট্টগ্রামের যাওয়ার জন্য আমার সাহায্য চান। আমি তাকে একটি বাসে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেই। দীর্ঘ দুই মাস পর গত ১ ফেব্রুয়ারি আমাকে ফোন করেন ওই ছাত্রী। ভারতে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা চান। আমি ওই দিনই রানীকে খুলনাস্থ ইন্ডিয়ান সহকারী হাইকমিশনারের কাছে নিয়ে যাই।

শেফালী সরকার আরও জানান, ভারতীয় একটি মেয়ে বাংলাদেশে এসে যেন প্রতারণার শিকার না হয় এবং আমাদের দেশের যেন দুর্নাম না হয় সেই কারণে আমি ওই ছাত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছি। তাছাড়া ওই ছাত্রী আমাকে ‘মা’ বলে ডেকেছে। তাই যতটুকু পেরেছি তার পাশে দাঁড়িয়েছি। বর্তমানে রানীর সাথে চট্টগ্রামের ওই ছেলের কোনো সম্পর্ক নেই।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!