চট্টগ্রামের চার সংসদীয় আসনের সীমানা ঠিক হবে নতুন করে

এক উপজেলার বাসিন্দা ভোট দিচ্ছে অন্য উপজেলায়

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে অন্তত ৪৫টি আসনের সীমানা নতুন করে ঠিক করা হচ্ছে। এই সংসদীয় আসনগুলোর আওতাভুক্ত অনেক উপজেলার বেশকিছু ইউনিয়ন ভাগ হয়ে অন্য সংসদীয় আসনে চলে গেছে। এতে এক উপজেলার বাসিন্দাকে ভোট দিতে হয় অন্য কোনো উপজেলার প্রার্থীকে। এমন সংসদীয় আসনের মধ্যে চট্টগ্রামের চারটি আসন।

চট্টগ্রামের যেসব সংসদীয় আসন পরিবর্তনের তালিকায় রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে— চট্টগ্রাম-৭, চট্টগ্রাম-৮, চট্টগ্রাম-১৪ ও চট্টগ্রাম-১৫।

চট্টগ্রাম-৭ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলা এবং বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। চট্টগ্রাম-৮ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৩নং পাঁচলাইশ, ৪নং চান্দগাঁও, ৫নং মোহরা, ৬নং পূর্ব ষোলশহর ও ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড, বোয়ালখালী পৌরসভা এবং বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল ইউনিয়ন, পশ্চিম গোমদণ্ডী ইউনিয়ন, শাকপুরা ইউনিয়ন, সারোয়াতলী ইউনিয়ন, পোপাদিয়া ইউনিয়ন, চরণদ্বীপ ইউনিয়ন, আমুচিয়া ইউনিয়ন ও আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম-১৪ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলা এবং সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়ন, কালিয়াইশ ইউনিয়ন, বাজালিয়া ইউনিয়ন, ধর্মপুর ইউনিয়ন, পুরানগড় ইউনিয়ন ও খাগরিয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এছাড়া চট্টগ্রাম-১৫ আসনটি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলা এবং সাতকানিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

চট্টগ্রামের চারটি আসন ছাড়াও আরও যে ৪১টি সংসদীয় আসন পরিবর্তনের তালিকায় রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে— ঠাকুরগাঁও-২, ঠাকুরগাঁও-৩, সিরাজগঞ্জ-১, সিরাজগঞ্জ-২, পাবনা-১, পাবনা-২, চুয়াডাঙ্গা-১, চুয়াডাঙ্গা-২, ঝিনাইদহ-২, ঝিনাইদহ-৪, যশোর-৩, যশোর-৪, মাগুরা-১, মাগুরা-২, নড়াইল-১, নড়াইল-২, খুলনা-৩, খুলনা-৪, সাতক্ষীরা-৩, সাতক্ষীরা-৪, মানিকগঞ্জ-২, মানিকগঞ্জ-৩, ঢাকা-২, ঢাকা-৩, ঢাকা-১৯, গাজীপুর-৩, গাজীপুর-৫, নরসিংদী-১, নরসিংদী-২, নারায়ণগঞ্জ-৪, নারায়ণগঞ্জ-৫, ফরিদপুর-২, ফরিদপুর-৪, গোপালগঞ্জ-১, গোপালগঞ্জ-২, মাদারীপুর-২, মাদারীপুর-৩, নোয়াখালী-১, নোয়াখালী-২, লক্ষ্মীপুর-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩।

জানা গেছে, আসন পরিবর্তনের বিষয়ে একটি অ্যাপ তৈরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেখানে আসনভিত্তিক সব তথ্য থাকবে।

ইসিকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হলেও বিতর্ক ও ঝামেলা এড়াতে এবার জনসংখ্যার ভিত্তিতে নয়, প্রশাসনিক এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে গুরুত্ব দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

২০২১ সালে নির্বাচন কমিশনকে আইনের অধীনে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা দিয়ে ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ’ আইন পাস হয়। আইনের ৭ ধারায় বলা হয়েছে, ইসির সীমানা নির্ধারণের বিষয় নিয়ে দেশের কোনো আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন তোলা যাবে না।

আগে সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যার ঘনত্বের বিষয়টিই বিবেচনা করা হতো। এবার প্রশাসনিক অখণ্ডতা ধরে হলেও জাতীয় সংসদের অন্তত ৪৫টি আসনের এলাকা পরিবর্তন হবে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, চলতি বছরের জুনে ৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হবে। এর আগে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে খসড়া তালিকা প্রণয়ন করা হবে আগামী মার্চের মধ্যে। এপ্রিলে সেটি প্রকাশ করা হবে।

এরপর দাবি, আপত্তি অথবা সুপারিশ আহ্বান করবে ইসি। মে মাসে আপত্তির বিষয়ে অঞ্চলভিত্তিক শুনানি নিষ্পত্তি করে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!