চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁওয়ে নির্মিতব্য এশিয়ার সবচেয়ে বড় এবং আধুনিক কসাইখানার খোঁজ নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর পুরাতন থানা চান্দগাঁও থানা এলাকায় সিটি করপোরেশনের ৮৮ শতক জায়গার ওপর এ কসাইখানা নির্মাণ করবে।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) গণভবনে এক অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন চার জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করছিলেন তিনি। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিডিএ চেয়ারম্যান।
জানতে চাইলে নবনিযুক্ত সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার গণভবনে একটি অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার কাছে চট্টগ্রামের আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের আপডেট জানতে চান। তখন প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর চান্দগাঁওয়ে একটি কসাইখানা নির্মাণ করছে সেটা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। উনি দেখলাম চট্টগ্রামে আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের বিষয়ে খুবই আগ্রহী ও আন্তরিক।’
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)’র সভায় ৪ হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ টাকায় ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন পায়। ওই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামে আধুনিক কসাইখানাটি নির্মাণ করা হবে। আধুনিক কসাইখানাটিকে ঘিরে নগরীতে গবাদি পশু সংক্রান্ত একটি বড় মাপের একটি ইনস্টিটিউশন গড়ে তোলা হবে। এতে থাকবে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আইসোলেশন, স্মার্ট স্টকিং স্পেস সুবিধা, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, রক্ত ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট। এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ তলা বিশিষ্ট ভবন ও জবাই এরিয়া করা হবে। পশুর নাড়িভুঁড়িসহ শিং ফেলে না দিয়ে বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা থাকবে এই কসাইখানার আওতায়। এখানে পশু জবাই করার আগে একজন চিকিৎসক সে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখবেন।
জবাইয়ের পর এর মাংসও পরীক্ষা করা হবে। পশুর রক্তকে পোলট্রি ফিডে রূপান্তর করা হবে এবং অন্যান্য বর্জ্যগুলোও রিসাইক্লিং করা হবে। সিটি করপোরেশনের জাগায় নির্মিতব্য এ কসাইখানাটি বাস্তবায়ন করছে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর। নির্মাণ শেষে তা সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করব। অর্থাৎ মালিকানা থাকবে সিটি কর্পোরেশনের, তারাই পরিচালনা করবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এখানে জবাইকৃত পশুর মাংস পরীক্ষা করা হবে। এর মধ্য দিয়ে মান নিশ্চিত হবে। যেখানে-সেখানে পশু জবাই বন্ধ হলে পরিবেশও ঠিক থাকবে। রোগ-বালাই আছে এমন গরু জবাই করা বন্ধ হবে। যেখানে মাংস বিক্রি করা হবে সেখানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কুল-ভ্যান ক্রয় করা হবে। এই ভ্যানে করেই মাংসগুলো পৌঁছে দেওয়া হবে।