চট্টগ্রামের কলেজ ছাত্রসহ ঢাকার ২ যুবক নিখোঁজ খামারের জমি দেখতে গিয়ে

ছাগলের খামারের জমি দেখতে গিয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকার তিন যুবক রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছেন। গত ২৪ আগস্ট কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া ও বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ি এলাকায় জমি দেখতে যাওয়ার পর তাদের আর খোঁজ মেলেনি। এ ঘটনায় ২৯ আগস্ট রামু থানায় নিখোঁজ ডায়েরি (নং-১২২০/২০২১) করার ২০ দিন পরও এই তিন যুবকের কোনো হদিস আর মেলেনি।

নিখোঁজ এই তিন যুবক হলেন— চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের আবদুর রহমান তালুকদার বাড়ির হাফেজ মুহাম্মদ মুছার ছেলে মুহাম্মদ রিদুয়ানুল হক (২৩), ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১২১১ লালবাগ ৩২/২ হরনাথ ঘোষ রোডের মৃত আবদু ছমদের ছেলে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খালেদ (৩৩) এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পূর্ব সরাইল এলাকার আবুল কালামের ছেলে আবু বক্কর তাকি (৩২)। এর মধ্যে রিদুয়ানুল হক চট্টগ্রাম কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

নিখোঁজ রিদুয়ানের মামা চট্টগ্রামের আনোয়ারার নলদিয়ার ইউনুছ তার জিডিতে উল্লেখ করেন, নাইক্ষ্যংছড়ির কম্বোনিয়া এলাকায় মৌলানা রফিকুল ইসলামের মৎস্য খামার-কলা ও পেঁপে বাগান রয়েছে। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে রিদুয়ান, রফিক ও আবু বক্কর একসাথে ছাগলের খামার করার উদ্যোগ নেয়। খামার করতে রফিক গর্জনিয়া এলাকার মফিজ কোম্পানির মালিকানাধীন ছাগলখাইয়া নামক স্থানে প্রায় ১০ একর জমি পছন্দ করেন।

গর্জনিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ির প্রায় এলাকা পাহাড়বেষ্টিত। গত ২৪ আগস্ট সকালে তারা মোটরসাইকেলযোগে জায়গাটা দেখতে যান। সেখান থেকে বিকেল ৫টার দিকে ফিরে আসার পথে মাঝির কাটা এলাকায় পৌঁছা পর্যন্ত তাদের মুঠোফোনে সংযোগ পেলেও পরবর্তীতে তিন জনের মুঠোফোনই বন্ধ পাওয়া যায়। মাঝির কাটা এলাকাটি রামু থানার অধীন আর কম্বোনিয়া এলাকাটি নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অধীনে।

জিডিতে জানানো হয়, নিখোঁজ তিনজনেরই নাইক্ষ্যংছড়িতে রফিকুল ইসলামের কলা বাগানে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত ফিরে না আসায় রফিকের বাগানের পাহারাদার আবদুল আওয়াল (২২) তিনজনের মুঠোফোনেই অনবরত কল দেন। কিন্তু মোবাইল সংযোগ ও তাদের কোনো খোঁজ না পেয়ে পাহারাদার আওয়াল বিষয়টি ভাগ্নে রিদুয়ানের মাকে জানান।

অভিযোগকারী ইউনুছ বলেন, জমির মালিক গর্জনিয়া মাঝির কাটাস্থ মফিজুর রহমান কোম্পানির সাথেও দেখা করেছেন। মফিজুর রহমান বলেছেন, তিনজনই জমিটি পছন্দ করে সেখানকার ক্ষেত থেকে নানান সবজিও নিয়ে গেছেন। কিন্তু কোনো থানাই বিষয়টি লিপিবদ্ধ করতে না চাওয়ায় নিখোঁজের চারদিনেও সাধারণ ডায়েরি করতে পারেননি। পরে মাঝিরকাটা জায়গাটি রামু থানায় পড়ায় অনেক তদবিরে ২৯ আগস্ট জিডিটা (নিখোঁজ ডায়েরি) করা গেলেও ওই তিনজনের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) অরূপ চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল দুর্গম পাহাড়বেষ্টিত। এরপরও জিডিটা নেওয়ার পর গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে দিয়ে সব জায়গায় খোঁজা হয়েছে। কিন্তু কোথাও তাদের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। রফিকের বাগানটি নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় হলেও তারা জিডিটি এড়িয়ে গেছে। এরপরও আমরা হাল ছাড়িনি। খোঁজাখুজি অব্যাহত রয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!