চট্টগ্রামের আবু সোনাপাচার-হুন্ডির ‘বস’, হাজার কোটি টাকার মালিক একদশকে

জেল ছেড়েছিলেন নিপুণ জোচ্চুরিতে, সহযোগীরাও লালে লাল

দেশের চোরাচালান ও হুন্ডির সাম্রাজ্যে রীতিমতো কিংবদন্তী চট্টগ্রামের আবু আহমদ। সোনা চোরাচালান করতে করতে তার নামই রটে গেছে ‘সোনা আবু’ নামে। এভাবে গত এক দশকে তিনি বনে গেছেন প্রায় হাজার কোটি টাকার মালিক। সীমিত অনুসন্ধানে পুলিশের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডিই পেয়েছে বিদেশে আড়াইশ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ। আরব আমিরাতে আছে তার শত শত কোটি টাকার ব্যবসা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে খোঁজ মিলেছে তার নামে কেনা মূল্যবান ২৪টি জমির খোঁজ, সেই সঙ্গে নগরীতেই বিলাসবহুল অন্তত তিনটি বাড়িও। কিন্তু ৪৯ বছর বয়সী এই আবু আহমদ ওরফে আবুর নাগাল কেউ পায় না। সহযোগী কেউ কেউ ধরা পড়ে পুলিশের হাতে, কিন্তু আবুর খোঁজ পাওয়া যায় না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিজে অধরা থাকলেও আবুর চোরাচালান সাম্রাজ্য চলছে আগের মতোই বাধাহীন।

২ বছর পর হঠাৎ জামিনের আবেদন

এই যখন অবস্থা, সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সেই আবুকে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। সেই সঙ্গে আদালতের অনুমতি ছাড়া তার বিদেশযাত্রায়ও দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ২৪০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগের মামলায় ২০২০ সালের মার্চে মামলা হলেও আবু আইনজীবীর মাধ্যমে আগাম জামিন চাইলেন ২ বছর পর। আগাম জামিনের ওই আবেদন নাকচ করে দিয়ে হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবু এখন দেশেই নেই। তিনি অনেকদিন ধরেই অবস্থান করছেন দুবাইয়ে। সেখান থেকেই নাড়ছেন দেশে চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসার কলকাঠি। কেউ কেউ আবার বলছেন, আবু দেশেই আছেন প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায়। তাকে রক্ষা করতে ঢাকা-চট্টগ্রামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ, সাংসদ এমনকি ব্যবসায়ী নেতাকেও বিভিন্ন সময় তৎপর হতে দেখা গেছে। তাদের কারও কারও রোষে পড়তে হয়েছে খোদ তদন্তকারী সংস্থাকেই।

আড়ালের গডফাদার

১৯৯১ সালে শ্রমিক ভিসা নিয়ে দুবাই যান আবু। এর কয়েক বছর পর আবার দেশে ফিরে আসেন। সেই থেকে তিনি আছেন আরব আমিরাত আর বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার মধ্যেই। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ফয়েজ আহমেদ ওরফে বলি সওদাগরের ছেলে আবু আহমদ ওরফে আবু দেশের চোরাচালান সাম্রাজ্যে রীতিমতো কিংবদন্তী। সোনা চোরাচালান ও হুন্ডির ব্যবসায় তাকে ‘গডফাদার’ হিসেবে গোণা হয়ে থাকে। একদশক আগে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়া আবু হুন্ডিসহ চোরাই মালের ব্যবসায়ও করিৎকর্মা।

১০ বছর আগে দৃশ্যপটে আবুর নাম

২০১৩ সালের ৩ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরীর হিলভিউ আবাসিক এলাকার বাসার সামনে থেকে হঠাৎ অপহৃত হন আবু। তখনই প্রথম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে ওঠে আসে আবু নামের রহস্যময় এক বিত্তশালীর নাম। প্রায় ১০ বছর আগের সেই অপহরণের ঘটনায় আবু এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান অজ্ঞাত একদল দুর্বৃত্তের হাত থেকে। পরে ঘটনার পাঁচ মাস পর ২০১৪ সালের ২২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়েরের পর অপহরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে স্বর্ণ চোরাচালানের গডফাদার হিসেবে আবুর নাম প্রথম আলোচনায় আসে ২০১৪ সালে। ওই বছর ঢাকায় চোরাচালানের স্বর্ণ উদ্ধারের পর পর তিনটি ঘটনায় দৃশ্যপটে চলে আসেন আবু। এর মধ্যে ১০৫ কেজি ওজনের ৯০৪ পিস স্বর্ণের প্রথম চালানটি ধরা পড়ে রাজধানীর শাহজালাল বিমানবন্দরে। পরে একই বিমানবন্দরে ৫২৫ পিস সোনার বারসহ ধরা পড়ে বিপুল পরিমাণ সৌদি মুদ্রার অপর একটি চালান। ৬১ কেজি স্বর্ণ অপর একটি চালান ধরা পড়ে ঢাকার নয়াপল্টন থেকে। এসব ঘটনায় ঢাকা বিমানবন্দর থানা ও পল্টন থানায় আবুর বিরুদ্ধে মামলা হয়।

এরপর ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের বাহার মার্কেট থেকে বর্তমানে স্ত্রী খুনের মামলায় আলোচিত তৎকালীন নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বাবুল আক্তারের নেতৃত্বে উদ্ধার করা হয় তিনটি সিন্ধুকভর্তি বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও নগদ টাকা। এর মধ্যে একটি সিন্দুক থেকে ২৫০টি স্বর্ণের বার এবং অন্য এক সিন্ধুকে পাওয়া যায় নগদ ৬০ লাখ টাকা। এই ঘটনায় আবু ও তার ম্যানেজার এনামুল হক নাঈমকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়।

এই মামলায় আবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু নাটকীয় কায়দায় তিনি মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় চট্টগ্রাম কারাগার থেকে বের হয়ে যান। সেই থেকে তিনি বরাবরই রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

কারাগার ছাড়েন নিপুণ জোচ্চুরিতে

জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট থেকে ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে হাইকোর্টের দুই বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে স্বর্ণ চোরাচালান মামলার কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়ে একটি পিটিশন তৈরি করান আবু। ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের ফৌজদারি মিস শাখার মাধ্যমে সেই পিটিশনটি বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়। ভুয়া স্থগিতাদেশ তৈরি করে তথ্যগোপনের মাধ্যমে জামিন নিয়ে ওই বছরের আগস্টে তিনি কারাগার থেকে বের হয়ে যান।

জালিয়াতির এই ঘটনা ধরা পড়ার পর ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (ফৌজদারি-২) বাদি হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় আবু আহমদসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।

কিভাবে এলো এতো সম্পদ

কিভাবে আবুর এতো সম্পদ হল— এ প্রশ্ন ভাবাচ্ছে ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডসহ তদন্তকারী সংস্থাকেও। সিআইডি বলছে, চট্টগ্রামভিত্তিক প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবসাই আবুর একমাত্র বৈধ আয়ের উৎস। এর বাইরে দৃশ্যত তার আর কোনো ব্যবসা নেই। সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, আবুর নেতৃত্বাধীন একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল টাকা আয় করেছে— যা মানি লন্ডারিংয়ের মধ্যে পড়ে। চক্রটি ব্যাংকের মাধ্যমেই শুধু শত শত কোটি টাকা লেনদেন করেছে।

আবুর দৃশ্যমান সম্পদের মধ্যে রয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলার ধর্মপুর ও জাহানপুর এলাকায় ২৪টি দলিলমূলে কেনা বহু জমি। এছাড়া কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকার ৩৩ নম্বর প্লটে ১৬ কাঠার প্লট ছাড়াও পাঁচলাইশ হিলভিউ আবাসিক এলাকার পাঁচতলা নিরিবিলি ভবন এবং চান্দগাঁওয়ে ছয়তলা বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক বাড়ি রয়েছে তার। অন্যদিকে রাউজানের ফতেহনগর এলাকায় পল্লী কানন ও পল্লী শোভা কনভেনশন হল, ফটিকছড়ির ফতেহপুরে দৃষ্টিনন্দন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তিনতলা বাড়ি জাহানারা ম্যানশন, চট্টগ্রাম নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে দুটি, স্যানমার ওশান সিটিতে একটি দোকান ছাড়াও দুবাইয়ে অন্তত তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের খোঁজ মিলেছে।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবুর সম্পদের এই হিসাব সামান্যই। সহযোগীদের নামেও তিনি গড়েছেন সম্পদ। বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেন হয়েছে তাদের মাধ্যমেও। যেমন আবুর ম্যানেজার এনামুল হক নাঈমের নামে চট্টগ্রামে আবু গড়ে তুলেছেন অন্তত ছয়টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রামে ১৭ একাউন্টে ৪০৯ কোটি টাকা মাত্র

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আবু আহমদ ওরফে আবু চট্টগ্রাম নগরীর স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ও দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের শাখায় ২০০৫ সালের বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ওইসব ব্যাংক একাউন্টে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০৪ কোটি ৩৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮৬৭ টাকা জমা হয়। বিপুল এই টাকার বৈধ কোনো উৎস তিনি দেখাতে পারেননি।

সিআইডির ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড প্রায় দুই বছর ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে আবু ও তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ১৭টি ব্যাংক একাউন্টে ৪০৯ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে। সর্বশেষ দুই বছর আগে আবুর ব্যাংক একাউন্টগুলোতে জমা ছিল ২০৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আর এর বিপরীতে ওই একাউন্টগুলো থেকে তোলা হয়েছে ২৪০ কোটি ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২০০৫ সালের ৩ এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত নথিপত্র ঘেঁটে অন্তত আড়াইশ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। নগরীর স্টেশন রোড স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক শাখার নয়টি একাউন্ট, সিটি ব্যাংক জুবলী রোড শাখার চারটি একাউন্ট, যমুনা ব্যাংক জুবলি রোড শাখার তিনটি একাউন্ট, ব্র্যাক ব্যাংক নিউমার্কেট শাখার সাতটি একাউন্ট এবং ইস্টার্ন ব্যাংক নিউমার্কেট শাখার একটি একাউন্ট সিআইডির আবেদনে স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত।

আবুর সহযোগী যারা

গত কয়েক বছরে আবু নিজে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তার বেশকিছু সহযোগী ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। তাদের জবানবন্দিতেও ওঠে আসে আবুর চোরাচালান সাম্রাজ্যের নানা তথ্য। সেই জবানবন্দি থেকে এও জানা যায়, শুধু দেশেই নয় আবু তার অপরাধের জাল বিছিয়েছেন দেশের বাইরেও।

আবু আহমদ ওরফে আবু ও তার কর্মচারীসহ ১৯ সহযোগীর বিরুদ্ধে ২৪০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে সিআইডির উপ-পরিদর্শক হারুন উর রশিদ ২০২০ সালের ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় আসামি হওয়া আবুর এই সহযোগীরা হলেন— অন্যতম প্রধান সহযোগী এসএম আসিফুর রহমান, ফটিকছড়ির ফতেহপুরের ইকবাল আহমেদ ওরফে নিজাম, ফটিকছড়ির জাফতনগরের নুর মোহাম্মদের ছেলে আবু রাশেদ, ফটিকছড়ির দক্ষিণ রোসাংগিরির মো. হানিফের ছেলে ওবায়দুল আকবর, ফতেহপুরের মোহাম্মদ রফিক, মোহাম্মদ এরশাদুল আলম, ফটিকছড়ির ধর্মপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মিনহাজ উদ্দিন, ফটিকছড়ির জাহানপুরের মো. জমিলের ছেলে জিয়া উদ্দিন বাবলু, চন্দনাইশের হাশিমপুরের আবদুল ছালাম চৌধুরীর ছেলে ইমরানুল হক কফিল চৌধুরী, ঢাকার ওয়ারীর ইসহাক হোসেনের ছেলে এমতিয়াজ হোসেন, লোহাগাড়ার আমিরাবাদের মোহাম্মদ আলী ও হাবিবুর রহমানের ছেলে ফরিদুল আলম, লোহাগাড়ার চুনতির গুরা মিয়ার ছেলে মো. হাসান, নগরীর রণজিত চক্রবর্তীর ছেলে রুবেল চক্রবর্তী, আনোয়ারার রূপায়ন মহাজনের ছেলে সাগর মহাজন, দিনবন্ধু সরকার, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবেক কমিশনার শাহজাহান এবং চট্টগ্রাম নগরীর হাজারী লেনের অমূল্য রঞ্জন ধরের ছেলে টিটু ধর।

সহযোগীরাও লালে লাল

ফটিকছড়ির জাহানপুর গ্রামের বাসিন্দা আলী আহমদের ছেলে এনামুল হক নাঈম আবুর চোরাচালান সাম্রাজ্যের প্রধান সহযোগী। এই নাঈমের নামে চট্টগ্রামে আবু গড়ে তুলেছেন বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে ফরহাদ ট্রেডিং, এমএস ওয়ার্ল্ড সেন্টার, রিয়েল ট্রেডিং, নাইস টেলিকম সেন্টার, রুপা টেলিকমিউনিকেশন ও এবি ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল।

সিআইডির তদন্তে দেখা গেছে, চোরাচালান ও হুন্ডির কারবারে আবুর সহযোগী ফটিকছড়ির ফতেহপুরের ইকবাল আহমেদ ওরফে নিজামের চারটি ব্যাংক একাউন্টে এক যুগে জমা হয়েছে ৫২ কোটি ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ২০৭ টাকা। ফটিকছড়ির জাফতনগরের নুর মোহাম্মদের ছেলে আবু রাশেদের একাধিক ব্যাংক একাউন্টে ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জমা হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিদেশেও নিয়ে গেছেন এই রাশেদ। এ কাজে তিনি তার কর্মচারী হাবিবুর রহমান, মায়নুল হাসান রবি, মো. সোলাইমান, মুহাম্মদ পারভেজ মিয়া, মো. সাহাবুদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, আবদুর রহিমকে ব্যবহার করেছেন। শুধু তাদের মাধ্যমেই রাশেদ বিদেশে পাচার করেছেন ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

আবুর আরেক সহযোগী এসএম আসিফুর রহমানের ব্যাংক একাউন্টে গত এক যুগে জমা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। একইভাবে চোরাচালান চক্রের সদস্য ফটিকছড়ির দক্ষিণ রোসাংগিরির ওবায়দুল আকবরের ব্যাংক একাউন্টে ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ফতেহপুরের মোহাম্মদ রফিকের ব্যাংক একাউন্টে ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ফটিকছড়ির জাহানপুরের জিয়াউদ্দিন বাবলুর ব্যাংক একাউন্টে ৫০ লাখ টাকা, চন্দনাইশের হাশিমপুরের ইমরানুল হক মো. কফিল চৌধুরীর ব্যাংক একাউন্টে ২ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা হয়। এছাড়া ঢাকার ওয়ারীর বাসিন্দা এমতিয়াজ হোসেনের ব্যাংক একাউন্টে ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!