চট্টগ্রামেও বিষধর রাসেল ভাইপারের আনাগোনা, পা ফেলতে হবে সাবধানে

বাংলাদেশের সবচেয়ে বিষাক্ত রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপের বিচরণক্ষেত্র হিসেবে এতোদিন পদ্মা তীরবর্তী কয়েকটি জেলা ও চরাঞ্চলের নাম শোনা গেলেও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায়ও ইদানিংকালে এই সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে। রাসেল ভাইপারের কামড়ে শরীরের দংশিত অংশে বিষ ছড়ানোর পর অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ ভারী হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত, কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন রকম শারীরিক উপসর্গ দেখা যেতে পারে।

শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের দক্ষিণ কেদারখীল জামে মসজিদের পুকুরপাড়ে জালে আটকা পড়ে বিরল প্রজাতির বিষধর রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। সাপটি ৯ ফুট লম্বা। সাপটিকে উদ্ধারের স্থানীয় বনবিভাগকে জানানো হলেও তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে সাপুড়েদের একটি দল এসে সাপটিকে নিয়ে যায়। অন্যদিকে সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী বিচেও প্রায়ই দেখা মেলে রাসেল ভাইপারের। এছাড়া চন্দ্রনাথের পাহাড়েও এই সাপের বিচরণ রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আহসান মনসুরের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৭টি জেলাতেই রাসেলস ভাইপারের উপস্থিতি রয়েছে। ওই গবেষণায় উঠে আসে যে এই প্রজাতির সাপের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। তবে বর্তমানে আরো বেশি এলাকায় এই প্রজাতির সাপের উপস্থিতি রয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঘন ঝোপ আর পরিত্যক্ত জমি অপেক্ষাকৃত কমে যাওয়ায় এই সাপ কৃষি জমিতেই থাকে, যার ফলে যারা মাঠে কৃষিকাজ করেন তারা রাসেলস ভাইপারের দংশনের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়ে থাকেন। এছাড়া বর্ষাকালে নদীর পানি বাড়ার ফলে ভারতের নদ-নদী থেকে ভেসেও এই সাপ বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এই প্রজাতির সাপের কামড়ের কিছুক্ষণ পরই দংশিত স্থানে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ব্যাখার পাশাপাশি দংশিত স্থান দ্রুত ফুলে যায় এবং ঘণ্টা খানেকের মধ্যে দংশিত স্থানের কাছে শরীরের আরো কয়েকটি অংশ আলাদাভাবে ফুলে যায়। দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে নিম্ন রক্তচাপ, কিডনি অকার্যকর হওয়া সহ বিভিন্ন ধরণের শারীরিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে রাসেল ভাইপার ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ হলেও একে আঘাত না করলে ক্ষতি করে না। তাই এ ধরনের সাপ দেখলে একে ধরতে যাওয়া অথবা আঘাত করা থেকে বিরত থাকলে আর সমস্যা হয় না।

বাংলাদেশে প্রতি বছর অন্তত ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন এবং বছরে অন্তত ছয় হাজার মানুষ মারা যান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!