চট্টগ্রামসহ সারা দেশ থেকে ৮ কোটি টাকা মেরেছে আদিয়ান মার্ট, চারজন গ্রেপ্তার

আদিয়ান মার্ট নামের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কিনতে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ এলাকার বাসিন্দা দিদারুল ইসলাম রনি আট-নয় মাস আগে চার লাখ পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। বারবার বলার পরও পণ্য না দিয়ে তাকে দুই লাখ টাকা ফেরত দেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। বাকি দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকা এখনও পাননি তিনি। এই টাকার জন্য মাস দেড়েক আগে একবার চুয়াডাঙ্গায় গিয়েছিলেন তিনি। শেষে চার-পাঁচ দিন আগে আবার গিয়ে সেখানে কারও দেখা আর পাননি।

চট্টগ্রামই শুধু নয়, এভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকের কাছ থেকেও পণ্য দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্ট।

শেষ পর্যন্ত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাতে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের অনলাইন বেচাকেনা প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্ট লিমিটেডের চার কর্মকর্তাকে আটক করেছে র‌্যাব। ঝিনাইদহ র‌্যাবের একটি দল খুলনা থেকে একজন এবং চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নীলমনিগঞ্জ বাজার থেকে অন্য তিনজনকে আটক করে ঝিনাইদহ নিয়ে যায়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন আদিয়ান মার্টের সিইও জুবাইর সিদ্দিকী, তার ভাই এমডি মাহমুদ সিদ্দিকী, বাবা আদিয়ান মার্টের উপদেষ্টা আবু বকর সিদ্দিকী ও ম্যানেজার মিনারুল ইসলাম।

আদিয়ান মার্ট ১০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়ে প্রায় দেড় বছর আগে আনলাইনে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি শুরু করে। কয়েক মাস পরই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠতে থাকে। গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে মাসের পর মাস চলে গেলেও পণ্য বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছিল না। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দেশজুড়ে প্রায় দেড় লাখ গ্রাহক তৈরি করে তাদের ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তবে পুলিশ বলছে, আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ আট কোটি টাকা।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারি গ্রামের মৃত ওহিদুল ইসলামের ছেলে আতিকুর রহমান উজ্জল গত বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) চুয়াডাঙ্গা থানায় একটি প্রতারণা মামলা করেন। ওই মামলায় আদিয়ান মার্টের সিইও, এমডি, উপদেষ্টা ও ম্যানেজারকে আসামি করা হয়। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, তার কাছ থেকে আদিয়ান মার্টের কর্মকর্তারা বিভিন্ন পণ্য দেওয়ার নামে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই চারজনকেই শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এরকমই প্রতারণার শিকার নোয়াখালীর বাড়াইপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন অভিযোগ করেন, মোবাইল ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী কিনতে আদিয়ান মার্টের সিইও জুবাইর সিদ্দিকীকে এক লাখ ৩১ হাজার ৬২৪ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। পণ্য না দিয়ে শেষে গত ৮ আগস্ট একটি চেক দিয়ে জুবাইর বলেছিলেন, পণ্য দেওয়া যাবে না, টাকা ফেরত নিতে হবে। কিন্তু ওই চেক ব্যাংকে জমা দিয়ে টাকা পাওয়া যায়নি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!