সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে আগে দালালদের হাতে গুঁজে দিতে হতো টাকা। তারপর দায়ের হতো জিডি। তবে চট্টগ্রামের দুই থানার পুলিশ এবার কথা দিচ্ছে— এখন থেকে এই কাজে যারা আসবে, তাদের উল্টো আপ্যায়ন করা হবে। সেবাপ্রার্থীকে চকলেট খেতে দিয়ে অভিযোগ শুনবে পুলিশ। তারপর নেবে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া থানায় ব্যতিক্রমধর্মী এ উদ্যোগ নিয়েছেন রাঙ্গুনিয়া (সার্কেলের) সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
জানা যায়, এই দুটি থানায় অভিযোগ করতে আসা সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি করার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। দালালরা থানাকে ঘিরে চালাতো ঘুষ বাণিজ্য। একটি জিডি করতে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিতো তারা।
তবে নতুন নেওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী এখন থেকে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার সাধারণ মানুষকে অভিযোগ কিংবা জিডি করতে চাইলে আর হয়রানির শিকার হতে হবে না। এছাড়া বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকছে আলাদা সুবিধা। যারা ফর্ম পূরণ করতে পারবে না, তাদের কাজটি নিজ উদ্যোগে করে দেবেন থানায় দায়িত্বরত ডিউটি অফিসার।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া (সার্কেলের) সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘থানায় এসে হয়রানির শিকার বা দালালচক্রের প্রতারণা ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। আগে যে কেউ একটি জিডি করতে চাইলে সব তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে লিখে দায়িত্বরত অফিসার ইনচার্জ বরাবর আবেদন করতে নানান জটিলতা ও ভোগান্তি পোহাতে হয়তো। এখন থেকে যে কেউ চাইলেই থানায় এসে বিনামূল্যে দুটি ফর্ম সংগ্রহ করে সাধারণ ডায়েরি কিংবা মামলার কাজ সম্পন্ন করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয়, সেবাপ্রার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে আপ্যায়নের ব্যবস্থাও। তারা যেন হাসিমুখে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেজন্য চকলেটের ব্যবস্থাও রয়েছে।’
এএসপি শামীম আরও বলেন, ‘পুলিশ সাধারণ মানুষের বন্ধু— এই কথাটি মানুষের মনে পৌঁছাতেই মূলত এমন উদ্যোগ। তারা যেন নির্ভয়ে থানায় এসে কাজ সম্পন্ন করতে পারে। এছাড়া আমাদের এমন উদ্যোগ দেখে অন্যরাও যেন উৎসাহিত হয় সে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। এর পাশাপাশি সামনে আরও কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগের পরিকল্পনা রয়েছে।’
এএন/এমএফও/সিপি