চকরিয়া-পেকুয়ায় রাখাইনের জলকেলী ঘিরে অসাম্প্রদায়িক মিলন

চকরিয়া-পেকুয়ায় রাখাইনের জলকেলী ঘিরে অসাম্প্রদায়িক মিলন 1মুকুল কান্তি দাশ ও ইমরান হোসাইন, চকরিয়া-পেকুয়া : রবিবার বিকাল ৩ টা। একঝাঁক তরুণ-তরুণী সেঁজেছে মনের আনন্দে। স্কুল মাঠের খোলা একটি পেন্ডেলে তাদের প্রত্যেকের সামনে রাখা হয় ড্রাম ভর্তি জল। ছেলে-মেয়ে একে অপরের গায়ে জল ছিটাচ্ছে। পাশের স্টেইজে চলছে রাখাইন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ধরনের গান। আর মাঠে শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সি নারী-পুরুষ গানের তালে তালে মনের সুখে নাচছে। এভাবেই পালিত হয় মৈত্রী জলকেলী উৎস।
নতুন বছরকে বরণ করতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং বার্মিজ স্কুল মাঠে মধুখালী রাখাইন পল্লীর বাসিন্দারা আয়োজন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্টান ও মৈত্রী জলকেলী অনুষ্টানের। অনুরুপভাবে চকরিয়ার মানিকপুর ও পেকুয়ার বারবাকিয়া ইউনিয়নে রাখাইন পাড়ায় পালিত হয় জলকেলী উৎসব। দুইদিন ব্যাপী জলকেলী উৎসব ঘিরে রাখাইন সম্প্রদায়ের পাশাপাশি মুসলিম ও সনাতন সম্প্রদায়ের শত শত নারী-পুরুষ জমায়েত হওয়ায় এই উৎসব অসাম্প্রদায়িক মিলন মেলায় রুপ পায়।
হারবাং রাখাইন পাড়ার আবু রাখাইন বলেন, ১৩৭৮ মগীসনকে বিদায় জানিয়ে সানন্দে বরণ করা হয় ১৩৭৯ মগীসনকে। বর্ষবরণে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা সাংগ্রে পোয়ে (জলকেলি) উৎসব উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করে। এ উপলক্ষে গত শনিবার বুদ্ধ স্নানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় জলকেলী উৎসবের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটে।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উৎসবকে ঘিরে মাঠের পাশে পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা। দুর থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা দল বেঁধে আসে উৎসব দেখতে। ফুল আর নানা কারুকার্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্যান্ডেলের চারপাশ। সবার মাঝে বর্ষ বরণের আমেজ। রাখাইন এলাকার প্রতিটি বাড়ি সাজানো হয় দৃষ্টি নন্দন রুপে। উৎসবের মূল লক্ষ্য অতীতের সকল ব্যথা-বেদনা-গ্লানি ঝেড়ে ফেলে ভালকে সাথে নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
হারবাং এলাকার বাসিন্দা মুসলেম উদ্দিন কবি বলেন, এদেশের প্রতিটি উৎসব এখন অসাম্প্রদায়িক উৎসবে রুপ পায়। এখানে কোন জাতের ভেদাভেদ ছিল না। আমরা মানুষ-এটাই আমাদের বড় পরিচয়।
উৎসব দেখতে যাওয়া চকরিয়া (আবাসিক) মহিলা কলেজের লেকচারার শিমু দাশ বলেন, জীবনে প্রথম জলকেলী উৎসব দেখে খুবই আনন্দ পেয়েছি। ব্যতিক্রমি এই উৎসব থেকে পেয়েছি নতুন শিক্ষা। এখানে জাতিগত কোন ভেদাভেদ দেখিনি। এভাবে চললে দেশের মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হবে দ্রুত।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!