চকরিয়া-পেকুয়াকে দূর্গত এলাকা ঘোষনার দাবি এমপি’র

চকরিয়া-পেকুয়াকে দূর্গত এলাকা ঘোষনার দাবি এমপি’র 1মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া: মঙ্গলবার বিকাল থেকে পানি সামান্য কমতে শুরু করলেও বুধবার সকাল থেকে বিরতীহীনভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এবং পাহাড়ি ঢলের পানিতে নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যেতে শুরু করেছে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ায়। মাতামুহুরীর নদীর স্রোতে ভেসে গেছে ৬টি বসত ঘর। তবে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় এবং পাহাড় থেকে পানি নিচের দিকে নেমে আসায় মাতামুহুরী নদীর পানি এখনও বিপদ সামীর উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে দুই উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার পানিবন্দি মানুষের কষ্ট আরো বেড়ে গেছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে খাবার দেয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করেছেন সচেতন মানুষ।
বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদের মোহনা মিলনায়তনে বন্যা পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে এক জরুরী সভা করেছে।

এতে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য মো.ইলিয়াছ, জেলা প্রশাসক মো.আলী হোসেন, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য জাহেদুল ইসলাম লিুটসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। পরে জেলা প্রশাসক বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।
অপরদিকে, পানি আবারো বাড়তে থাকায় চকরিয়া পৌর শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। যদি ওই শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যায় তাহলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এদিকে, চকরিয়া-পেকুয়াকে বন্যা দূর্গত এলাকা ঘোষনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মো.ইলিয়াছ। পাশাপাশি তিনি দ্রুত বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য ত্রান পাঠানোরও দাবি জানান।

জানা গেছে, গত রবিবার থেকে চকরিয়া, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা ও আলীকদমে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। এই বৃষ্টির পানি রাতের দিকে মাতামুহুরী নদী দিয়ে নেমে আসে ভাটির দিকে । এসময় নদীর দু’কুল উপচিয়ে দু’উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, বরইতলী, সাহারবিল, চিরিংগা, কৈয়ারবিল ও পৌরসভার একাংশ এবং পেকুয়ার মগনামা, উজানটিয়া, শিলখালী, বারবাকিয়াসহ বেশ ক’টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে যায়।
কাকারা ইউপি চেয়ারম্যান শওকত ওসমান ও সুরাজপুর-মানিকপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক ও লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা কাইছার জানান, গত মঙ্গলবার বিকাল থেকে পানি একটু একটু কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু বুধবার ভোর রাত থেকে আবারোও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি আবারো বৃদ্ধি পাচ্ছে। শতশত পরিবারের রান্নার কাজ বন্ধ রয়েছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পানিবন্দি মানুষের মাঝে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানো হচ্ছে।
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র মো.আলমগীর চৌধুরী বলেন, টানা বৃষ্টিতে এই ওয়ার্ডের শতাধিক পরিবার জলাবদ্ধতার কাছে জিন্মি হয়ে পড়েছে। মাতামুহুরী নদীর পানি ইতিমধ্যে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে যেকোন সময় বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে যেতে পারে। এতে এই এলাকাসহ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহের সম্ভবনা রয়েছে। এতে পৌরশহর হুমকীর মুখে পড়তে পারে। পৌরসভার পক্ষ থেকে পানিবন্দি মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
এব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে শুকনো খাবারের জন্য ইতিমধ্যে ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করে অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!