চকরিয়া প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে ও নানা আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিত হয়েছে। ‘হাত ধোয়াকে অভ্যাসে পরিনত করুন’ স্লোগানে গতকাল শনিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার নিরাপদ খাদ্য নেটওয়ার্ক প্রকল্পের আর্থিক সহযোগিতায় উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা সংস্থার (উবিনীগ) আয়োজনে নানা কর্মসুচির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়েছে।
এদিন সকালে উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নে উবিনীগ শিখিপড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আল আজহার উচ্ছ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘হাত ধোয়া বিষয়ক’ চিত্রাংকন, রচনা প্রতিযোগিতা, র্যালী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্টানের শুরুতে বিদ্যালয়ের ৩০ জন শিক্ষার্থী হাত ধোয়া ও নিরাপদ খাদ্যের উপর চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেন। পরে ২টি বিদ্যালয়ের মোট দুইশত শিক্ষার্থী শ্লোগান সহকালে র্যালীতে অংশ নেন। র্যালীটি আজহার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে দুই কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বদরখালী ইউনিয়নের মগনামাপাড়া উবিনীগ শিখিপড়ি বিদ্যালয়ে এসে শেষ হয়। র্যালীতে শিক্ষার্থীদের মুখে স্লোগান ছিল ‘সুস্থ থাকার প্রথম ধাপ, সাবান দিয়ে ধোব হাত’‘ হাত ধোয়ার অভ্যাস করি, সবাই মিলে সুস্থ থাকি’ ‘ঘরে বাইরে যেখানেই যাই, খাওয়ার আগে হাত ধোয়া চাই’ ‘হাত ধোয়ার অভ্যাস করি, রোগ জীবানু দুরে রাখি’ ইত্যাদি।
উবিনীগের আঞ্চলিক সমন্বক রফিকুল হক টিটো’র প্রারম্ভিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। এসময় তিনি বক্তব্যে দিবসটির তাৎপর্য সম্পর্কে বিশদ বিবরণ তুলে ধরেন। আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী মেম্বার জাহানারা বেগম। এতে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার মিনহাজ উদ্দিন, বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সদস্য নুরুল আলম, স্থানীয় ইউপি মেম্বার নুরুল কাদের, বদরখালী কলেজের প্রভাষক আবদুস শুক্কুর, আল আজহার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম, সমাজ সেবক আহসানুল কাদের চৌধুরী সাব্বির, শিখিপড়ি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মেহেরুন্নেচ্ছা মমতাজ, নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষক মোহাম্মদ নুরুছফা, প্রাক্তন ইউপি মেম্বার জাফর আলম, সমাজ কর্মী মোহাম্মদ ফোরকান প্রমুখ।
অনুষ্টিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, সার কীটনাশক ছাড়া বিকল্প উপায়ে চাষাবাদ করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। তা হলে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত হবে। সার কীটনাশক ব্যবহারের কারনে ক্ষেতের ফসল সমুহ বিষক্রিয়ায় ভরে যাচ্ছে। এ অবস্থার ফলে মানবদেহে রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। বক্তারা বলেন, আমাদেরকে দৈনন্দিন জীবনে অনেক গুলো বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আবার এব্যাপারে যার যার অবস্থান থেকে সকলকে জনসচেতনতা বাড়াতে।
যেসব বিষয়ে আমরা সচেতন হবো তারমধ্যে আছে নিরাপদ পানি পান করতে হবে, স্যানিটারী ল্যাট্রিন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, পায়খানা করার পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, খাবার গ্রহনের পূর্বে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত পরিস্কার করতে হবে, বাইরের খোলা খাবার না খাওয়া, প্যাকেট জাত খাবার প্লাষ্টিক পলিথিনে মোড়ানো খাবার পরিহার করা, বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক পানীয়, জুস না খাওয়া, পরিবারের সকল সদস্য পাড়া প্রতিবেশী মিলে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে। বক্তারা বলেন, খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে রান্না ও খাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে সুপিয় পানি ব্যবহারে সচেতন হওয়া এবং পুষ্টিকর খাবারের উপর নজরদারি থাকতে হবে।
অনুষ্টানে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা সুস্থ থাকা, হাত ধোয়াকে অভ্যাসে পরিনত করা ও নিরাপদ খাবার গ্রহনের ব্যাপারে অঙ্গীকার করেন। অনুষ্টানের শেষে শিক্ষার্থী ও অতিথিদের মাঝে সংস্থার পক্ষ থেকে টয়লেট সাবান ও সাবানের কেস বিতরণ করা হয়।
রিপোর্ট : মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া :
এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::