মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া: পনের বছর বয়সি সখিনা (ছদ্মনাম)। ছয় মাস বয়সে তার মা-বাবা মারা যায়। এতিম ওই শিশু অন্যের ঘরে পালিত কন্যা হিসেবে বেড়ে উঠতে থাকে। পালক বাবা খোরশেদ আলম ও মা শামসুন নাহার পিতা-মাতার অভাব বুঝতে দেয়নি। কিন্তু পনের বছর বয়সে এসে মুঠোফোনে প্রেমের ফাঁদে পড়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে দাদার বয়সি বৃদ্ধ মোহাম্মদ আসলাম প্রকাশ খোকনের খপ্পরে পড়ে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে টানা তিনদিন ভাড়া বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় এতিম ওই সখিনাকে।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের চকরিয়ার উপজেলা মালুমঘাট এলাকায়। তার বিরুদ্ধে শিশুকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে ভিকটিমের খালা নুরু জাহান বেগম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কক্সবাজারের সদর হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠিয়েছে।
ঘটনাটি জানার পর পুলিশ গত বুধবার রাতে আসলামকে আটক করে। ধৃত আসলাম(৬০) বরিশাল জেলার মুলাদি থানার শফিপুর এলাকার মৃত ডাক্তার ইয়াছিন মিয়ার ছেলে। সে চকরিয়ার মালুমঘাট বাজারের নিকটস্থ একটি ভাড়া বাসায় বাস করে।
ভিকটিমের বক্তব্যের বরাত দিয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের পুরিত্যাখালী এলাকার খোরশেদ আলম ও শামসুন নাহার দম্পতি মা-বাবা হারা সখিনাকে ছয় মাস বয়স থেকে লালন-পালন করে আসছিল। সপ্তাহখানেক পূর্বে মুঠোফোনে সখিনার সাথে কথা হয় আসলামের। এরমধ্যে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সপ্তাহকাল না পেরুতেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সখিনাকে মালমুঘাটস্থ ভাড়ায় বাসায় নিয়ে যায় গত ১২ নভেম্বর। ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সখিনাকে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষন করে। তবুও বিয়ে না করায় সখিনা খালাকে ঘটনাটি মুঠোফোনে অবগত করেন। এরই প্রেক্ষিতে খালা নুর জাহান বেগম পুলিশের সহায়তা নিয়ে সখিনাকে উদ্ধার ও প্রতারক ধর্ষক আসলামকে আটক করা হয়।
ওসি আরো বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে আটক আসলাম সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট বলে দাবি করেছেন। আসলামকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, আসলাম বিভিন্ন সময় প্রতিরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা ও শিক্ষা বিভাগের চাকুরীরত পরিচয় দিয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক বিভিন্ন মেয়েকে প্রলোব্ধ করে নষ্ট করেছে। অবশেষে ওই প্রতারক আসলাম ধরা পড়ায় মালুমঘাট এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।