মৌসুমী ফল আম অসাধারণ এক সুমিষ্ট ফল যেটা আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষের অনেক প্রিয়। কিন্তু বাজারে এই ফল এখন অনেক চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। যেটা সাধারন মানুষের হাতের নাগালের বাইরে। শুধু আম নয়, অধিকাংশ ফলের দামই অনেক বেশি।
নগরীর চকবাজারসহ সব জায়গার ফলের দোকানগুলোতে যেন আগুন লেগেছে। চকবাজারের ফলের দোকানে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ফলের দাম প্রতি কেজিতে গত সপ্তাহ থেকে এই সপ্তাহে আরো ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে বেড়েছে। বারি আম-৪ এর দাম গত সপ্তাহে ১৮০ থাকলে বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ২২০ টাকা, আম্রপালি ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ টাকা, ফজলি ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮০ টাকা, সুপার আশ্বিনা ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। তবে ঝিনুক আশ্বিনা আম ৮০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকা হয়েছে ।
এছাড়াও ফলের দোকানে অন্যান্য বিদেশী ফলের দামও বেড়েছে। নাগফল ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আপেল ১৮০ থেকে বেড়ে ২০০ টাকা, সবুজ আপেল ২২০ থেকে কমে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও মাল্টার দাম ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০০ টাকা, সাউথ আফ্রিকার কমলার ঝুড়ির দাম ১২০ টাকা অপরিবর্তিত রয়েছে। লাল আঙুর ৪০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫০ টাকা, সাদা আঙুর ৪৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা।
ডালিম ফলের দাম ২৮০ টাকা থেকে কমে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, রাজশাহীর কালো তরমুজ ৮০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকা হয়েছে। পেপের দাম ১০০ টাকা অপরিবর্তিত আছে।
ফলের দোকানের সামনে বার কয়েক ঘুরাঘুরি করে দাম কষাকষি করা আব্দুল কুদ্দুস চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি পেশায় একজন মুচি। বাসায় ৪জন ছেলেমেয়ে আছে, তারা পথ চেয়ে বসে থাকে আমি কি নিয়ে যাব। দুবেলা খেতেইতো কষ্ট হয়ে যায় তার উপর ফলমূল কেমনে খাই? তাওতো খেতে ইচ্ছা হয়, ছেলেমেয়েদের খাওয়াতে মন চায়। কিন্তু ফলের যা দাম কেমনে কিনি? আপেল, কমলা, আঙুর এসবতো আগে থাকতেই ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল কিন্তু আমাদের দেশের ফলগুলোরও দাম বেড়ে গেলো। এইতো মাস খানেক আগে আমের দাম অনেক কম ছিল তখন মাঝে মধ্যে কিনতাম। এখনতো না খেয়েই থাকতে হবে। গরিবের আবার ফলমূল খাওয়া!’
আরেক ক্রেতা মো. আরমান বলেন, ‘ফলের দাম অনেক বেশি বেড়েছে। মানুষের প্রতিদিনের খাবারে বিভিন্ন ফল রাখা উচিত কিন্তু এরকম দাম বাড়লে মানুষ কেমনে খাবে?’
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে ফল বিক্রেতা গিয়াসুদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাজারে আমের পরিমাণ কমে আসছে। এ বছর আমের উৎপাদনও অনেক কম হয়েছে। আর ঝড় শিলাবৃষ্টির কারণে আম বাগানগুলোর অনেক ক্ষতি হয়েছে যার কারণে আমের দাম এখন বাড়তি। এছাড়াও বিদেশী ফলগুলোর দাম বেড়েছে অনেক। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
আনসার আলি নামে আরেক ফল বিক্রেতা বলেন, ‘ফলের দাম বাড়ার কারণে আমাদেরও বেশি দামে ফল বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদেরও তেমন লাভ হচ্ছে না। ফলের দাম বাড়ার কারণে ক্রেতা কমে গেছে অনেক।’
আরিফ