চকবাজারের কথিত যুবলীগ নেতা টিনুকে ৭ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ

চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ-চকবাজার এলাকার আলোচিত সন্ত্রাসী কথিত যুবলীগ নেতা নুর মোস্তফা টিনুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর মূখ্য হাকিম আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানির জন্য ২৬ তারিখ নির্ধারণ করে টিনুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুজ্জামান। তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, নুর মোস্তফা টিনুকে অস্ত্র মামলায় মহানগর মূখ্য হাকিম আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে হাজির করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত শুনানির জন্য ২৬ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেছেন এবং টিনুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, কথিত যুবলীগ নেতা টিনুকে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টায় একটি পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড গুলিসহ আটক করে র‌্যাব। তাকে সঙ্গে নিয়ে রাতভর তার বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ৬৭ রাউন্ড গুলিসহ একটি শটগান উদ্ধার করে র‌্যাব। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) র‌্যাব বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করে এবং তাকে থানায় হস্তান্তর করেন। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে।

২০০৩ সালে অত্যাধুনিক একে-২২ অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়ে আলোচনায় আসেন টিনু। সেই মামলায় দীর্ঘ দিন কারাভোগও করেছিলেন তিনি। গত প্রায় দেড় যুগে তার বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় একটি বিস্ফোরক মামলা ছাড়া কেউ লিখিত অভিযোগ করারও সাহস পায়নি। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে তার ভাই শিপুর প্রভাবে আলোচিত টিনু ছিলেন নিরাপদ।

নগরীর চকবাজার ও পাঁচলাইশ এলাকার তিনি আলোচিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। কোচিং সেন্টার, ক্লিনিক, প্রাইভেট হাসপাতালসহ যাবতীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মূলত তার কাছে জিম্মি বলে অভিযোগ রয়েছে।

নুর মোস্তফা টিনু ছাত্রলীগের চকবাজার ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন। সেই ওয়ার্ড এখন থানা। তেমনি তার ভাই নুর মোহাম্মদ শিপুও চকবাজার ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি। শিপু নিজেকে চকবাজার থানা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দাবি করেন। মূলত চকবাজার এলাকায় প্রশাসনিক থানা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে স্থানীয় এ নেতারা ‘প্রেস্টিজ’ বাড়াতে নিজেদের থানা পর্যায়ের নেতা দাবি করছেন। তাদের আরেক ভাই মোহাম্মদ সেলিম জামায়াতের সঙ্গে সক্রিয়। ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ নাকি বিএনপি সেটা এই পরিবারের কাছে কোনো বিষয় নয়। সব দলের নেতা এরাই।

২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছয় লাখ টাকার ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক হয়েছিলেন শিপু। প্রথমে ছিনতাইয়ের বিষয়টি টিনু ও শিপু অস্বীকার করে ষড়যন্ত্র বললেও সিসি ক্যামেরা ফুটেজে শিপুকে ছিনতাইয়ে অংশ নিতে দেখা যায়। আটক হওয়ার পর শিপু আদালতে স্বীকারোক্তিও দিয়েছিল ছিনতাইয়ে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে। সেই মামলায় কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে বেপরোয়াই থাকেন শিপু।

তবে নুর মোহাম্মদ শিপু চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে দাবি করেন, তার ভাই টিনু ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি চকবাজার ওয়ার্ড থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই প্রতিপক্ষ তাকে ফাঁসাতে এই আয়োজন করেছেন।

এফএম/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!