ঘোষণা মাশরুমের, এলো ১০ কোটি টাকার সিগারেট!

২১ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা

মালয়েশিয়া থেকে শুকনো মাশরুম আমদানির ঘোষণা দিয়ে আনা চালানে এক কনটেইনার সিগারেট পেয়েছে কাস্টমসের কর্মকর্তারা। কম শুল্কের পণ্যে ঘোষণার আড়ালে প্রায় ৪০০ গুণ বেশি শুল্কের পণ্য আমদানি করা হয়েছে। সন্দেহ থাকায় পণ্যটি শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় এমন প্রতারণার সন্ধান পায় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন এন্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার কর্মকর্তারা। ওই চালানে প্রায় ২১ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছিল।

জানা গেছে, র‌্যাংকের মাধ্যমে এলসি করে ৭ হাজার ৩৩৫ ডলার দিয়ে মালয়েশিয়া থেকে ১৬ হাজার ৩০০ কেজি ড্রাই মাশরুম আমদানি করার কথা ছিল। কিন্তু আমদানিকারক সেটি না করে এনেছেন সিগারেটের এক বড় চালান— যা আমদানি নিষিদ্ধ।

ওই এক কনটেইনার সিগারেটের মধ্যে ৭৮১টি বড় কার্টন রয়েছে। এতে মোট ১ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার শলাকা রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা। কিন্তু এখানে প্রায় ২১ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিতে চেয়েছিল ওই চালানে।

একটি সূত্র জানায়, কনটেইনারটি লক থাকা সত্ত্বেও ডেলিভারি পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। প্রতারকরা জাল কাগজপত্র বের করে এসব করেছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখছে কাস্টমস।

বিল অব এন্ট্রি থেকে জানা যায়, গত ৫ জানুয়ারি কাস্টমস হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা হয়। এ চালানের মাত্র ৭ হাজার ৩৩৫ ডলার ব্যয়ে ১৬ টন মাশরুম আমদানীর ঘোষণা দেয় আমদানিকারক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ‘বাংলা বিনা এন্টারপ্রাইজ’। এই প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ডবলমুরিং থানার সিডিএ আর /এ রোড ১৫, হাউস ৩১৮। ওই চালান ছাড়ের জন্য বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের শেখ মুজিব রোডের সিএন্ডএফ খায়ের ব্রাদার্স (সি নং ২৬৬০৮)।

সিগারেটগুলো মালয়েশিয়ার নিউ সিং করপোরেশন থেকে আমদানি করা হয়। এগুলো ‘এমভি নর্ড টাইগার’ জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। আমদানিকারক কোম্পানি ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ২০৯৮ শাখা থেকে ১৯০১০১৫২ নং এলসি করেন।

বিল অব এন্ট্রি দাখিলের পর সন্দেহ থাকায় ওই চালান কাস্টমসের বিশেষায়িত সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডে ‘লক’ করে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় কাস্টমস অঢিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিচার্জ (এআইআর) শাখাকে।

চালানের বিষয়ে জানতে চাইলে কাস্টমসের সহকারী কমিশনার নুর এ হাসনা সানজিদা অনসূয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গোয়েন্দা তথ্য থাকায় চালানটি লক করা হয়েছিল। শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় তা স্পষ্ট হলো। অনেক বড় জালিয়াতি করেছে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ। মিথ্যা ঘোষণা দিলে আনা ও শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) অনুযায়ী মামলা দায়ের হবে জড়িতদের বিরুদ্ধে।

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!