ঘূর্ণিঝড় ‘গতি’ আঘাত হানতে পারে এ মাসেই, বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় নিম্নচাপ

বঙ্গোপসাগরে চলতি অক্টোবরেই হতে পারে অন্তত একটি ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়া বিভাগ এরই মধ্যে আভাস দিয়েছে, অক্টোবর (আশ্বিন-কার্তিক) মাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা দুটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে অন্তত একটি নিম্নচাপ ঘনীভূত হয়ে রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে।

যদি সত্যি সত্যিই ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটার নাম হবে ‘গতি’। এটি ভারতের দেওয়া নাম। সর্বশেষ গত ৪ জুন ঘূর্ণিঝড় ‘নিসর্গ’ আঘাত হেনেছিল ভারতের মহারাষ্ট্রে। ‘নিসর্গ’ নামটি দিয়েছিল বাংলাদেশ। এর আগে গত ২০ মে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হেনেছিল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’।

এরই মধ্যে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের অদূরে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) থেকে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি ঘনীভূত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া বিভাগ। সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বরে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ-নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ের ঘনঘটা তৈরি হয়। যা ‘আশ্বিন-কার্তিকের তুফান’ হিসেবে বহুকাল ধরে পরিচিত।

এদিকে আবহাওয়া বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন) মাসে সারা দেশে গড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৩.১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি ঝরেছে। চলতি অক্টোবরেও বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি।

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদফতরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস থেকে জানা গেছে, চলতি অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুপ্রবাহ (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে। গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশের বিভিন্ন বিভাগওয়ারি বৃষ্টিপাতে ছিল অসঙ্গতি।

চট্টগ্রাম বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৪.৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে গেল সেপ্টেম্বর মাসে। অন্যদিকে ঢাকা বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৯.৪ এবং খুলনা বিভাগে ২৯.৭ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে উত্তরের জনপদ রংপুর বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৩৩ শতাংশ বেশি বর্ষণ হয়েছে। সেপ্টেম্বরে রংপুর বিভাগে স্বাভাবিক বর্ষণ ধরা হয়েছিল ৪১৭ মিলিমিটার। বাস্তবে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৯৭২ মিলিমিটার।

এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ৭৩.৬ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ৩৯.৬ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৪.৩ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ২১.৯ শতাংশ এবং সমগ্র দেশে গড়ে ৩৩.১ শতাংশ বেশিই বৃষ্টিপাত হয়েছে গতসেপ্টেম্বর মাসে। এর আগে আগস্টে (শ্রাবণ-ভাদ্র) সারা দেশে গড় বৃষ্টিপাত ছিল স্বাভাবিক হারে।

বিশেষজ্ঞ কমিটি সেপ্টেম্বর মাসের আবহাওয়া পর্যালোচনা করে জানায়, সক্রিয় মৌসুমী বায়ু এবং লঘুচাপের প্রভাবে গত ২১ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগে অতিভারী বর্ষণসহ সারাদেশে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে। এ সময় ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় রংপুরে ২৬৭ মিলিমিটার। গেল মাসে সারা দেশে গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১.২ এবং ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর যথাক্রমে সিলেট ও দিনাজপুরে ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭ সেপ্টেম্বর তেঁতুলিয়ায় ২২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!