কোনো ধরনের মামলা থাকলে যুবলীগের পদ মিলবে না— কেন্দ্র থেকে এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার পরও বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তরা যুবলীগে পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কাঁধে নিয়ে চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পেতে আগ্রহী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচএম ফজলে রাব্বি সুজন।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ৯ মার্চ বিকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলের সামনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের উত্তেজনার মধ্যে পুলিশ হানা দেয়। এ ঘটনায় দেশীয় অস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাদের দেহ তল্লাশি করে প্রত্যেকের কাছ থেকে একটি করে রামদা জব্দ করা হয়।
এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়া আরও তিন অভিযুক্তের ফেলে যাওয়া তিনটি রামদাও জব্দ করে পুলিশ।
ওই সময় আটকরা জানান, ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া রামদা তিনটি ফজলে রাব্বি সুজন, রাকিব ও সাকিবের। তাদের কাছে আরও দেশীয় অস্ত্র মজুদ রয়েছে।
পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে তৎকালীন প্রক্টর আকতার হোসেনের উপস্থিতিতে শাহজালাল হলের বর্ধিত রুম নম্বর ২/৪ থেকে একটি ধামা, একটি দা, একটি স্টিলের ছুরি ও রক্তমাখা একটি ফুল শার্ট জব্দ করে পুলিশ। এ রুমে ফজলে রাব্বি সুজন, রাকিব ও সাকিব থাকতেন। তাদের খাটের নিচ থেকে এসব দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।
এসব দেশীয় অস্ত্র মজুদ রাখায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। এ মামলার এজহাভুক্ত আসামি এইচএম ফজলে রাব্বি সুজন।
অস্ত্র মামলার আসামি হয়েও এইচএম ফজলে রাব্বি সুজন নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থিতা করছেন। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে এই মামলাটি হয়। তিনি এ মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি হয়েও এখন যুবলীগের পদপ্রত্যাশী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এই অস্ত্র মামলায় গত ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ চার্জ গঠন করে আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন। বর্তমানে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের মামলাটি দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। চার্জ গঠনের পর বিচারিক কার্যক্রমে তিনি জামিন না নিয়ে যুবলীগের পদ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তার অনুপস্থিতিতেই চলছে বিচারিক কার্যক্রম।
এ বিষয়ে জানতে কথা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচএম ফজলে রাব্বি সুজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এ মামলাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিবিরের পক্ষ হয়ে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা করেছিল। অন্য ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে তারা এমন একটি ঘটনা ঘটিয়েছে।’
মামলাটির শুনানি চলছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্রুত মামলার রায় হবে। রায়ের মাধ্যমে আমরা বেকসুর খালাস পাব। তবে দলের হাইকমান্ড বিবেচনা করে আমাকে যুবলীগের পদে আনবে বলে আমি আশাবাদী।’
ডিজে